হত উমেশ মুন্ডা। নিজস্ব চিত্র।
চিতাবাঘের আতঙ্কে ভুগছে কালচিনি ব্লকের বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকরা। শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ রাজাভাত চা বাগানের ১৪ নম্বর সেকশনে একটি চিতাবাঘ ১০ বছরের শিশুকে চা গাছের ঝোপের ভেতর টেনে নিয়ে গিয়ে খুবলে খায় বলে বাসিন্দাদের দাবি। এই ধরনের ঘটনা ডুয়ার্সে এই প্রথম বলে দাবি বন দফতরের। ঘটনার পর রাজাভাত, আটিয়াবাড়ি, কালচিনি বেশ কয়েকটি চা বাগানে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
শনিবার দুপুরে রাজাভাত চা বাগানে নীচ লাইনে গিয়ে দেখা যায় শ্রমিক মহল্লায় সকলের চোখে মুখে আতঙ্ক। কারণ নিত্যদিন চা বাগানে চিতাবাঘের হানাদারির সঙ্গে পরিচিত হলেও যে চিতাবাঘ মানুষের রক্তের স্বাদ পেয়েছে সে কতটা ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে তা ভেবেই আতঙ্ক বাড়ছে বাগানে। বেলা এগারোটা নাগাদ দুই বন্ধুর সঙ্গে বাবাকে খাবার পৌঁছতে চা বাগানে গিয়েছিল ১০ বছরের উমেশ মুন্ডা। ম্যানেজারের বাংলোর কাছে চা গাছের ঝোপের ভেতর লুকিয়ে থাকা চিতাবাঘটি ওই শিশুকে খুবলে খায় বলে জানান শ্রমিকেরা।
উমেশের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে এ দিন তার দুই বন্ধু মুকে মুন্ডা ও লাল ওরাঁও জানায়, সহজ পথ হিসেবে চা গাছের ঝোপের ভেতর দিয়ে হাঁটছিল তিনজন। ১৪ নম্বর সেকশনে আচমকা চিতাবাঘটি বেরিয়ে উমেশের গলার কাছে কামড়ে ধরে। উমেশ ছটফট করতে থাকে। ঘটনায় আতঙ্কিত মুকে চা গাছের ঝোপের ভেতর ঢুকে পড়ে। লাল আশ্রয় নেয় লাগোয়া নালায়। মিনিট কয়েক পড়ে দু’জনেই সেখান থেকে বেরিয়ে সোজা নিজেদের বাড়ি চলে আসে। বিষয়টি জানাজানি হলে দুপুর একটা নাগাদ উদ্ধার হয় উমেশের আধখাওয়া দেহ। বাগানের সুপার ভাইজার রামকুমার ঘাটোয়া বলেন, ‘‘আগে চিতাবাঘ শ্রমিকদের উপর আক্রমণ করত। এ বার মানুষ মেরে খাওয়া শুরু করল। আটিয়াবাড়ি বাগানে গত বছর একটি বছর চারেকের শিশুকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে একটি চিতাবাঘ। উপস্থিত কিছু লোক ঢিল মেরে চিতাবাঘটিকে তাড়িয়ে ওই শিশুকে উদ্ধার করেছিল।’’
কালচিনি চা বাগানের শ্রমিক নেতা গনেশ লামা জানান, আট নম্বর সেকশনে গত কয়েক দিন ধরে একটি চিতাবাঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে। বন দফতর খাঁচা পেতেছে। তবে রাজাভাত চাবাগানে চিতাবাঘ মানুষ মেরে খাওয়ায় তাঁরা ভীত। বললেন, ‘কাজে যাওয়া, ছোটদের স্কুলে যাওয়াতেই ঝুঁকি তৈরি হল। চিতাবাঘটিকে না ধরা পর্যন্ত আতঙ্ক থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy