Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

শহরে ঘাঁটি, প্রচারের পথও বাতলাবে টিম-পিকে

তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকারও বলছেন, ‘‘আমি প্রচার শুরু করে দিয়েছি। কোনও পরামর্শ এলে নিশ্চিত ভাবেই খতিয়ে দেখব।’’

প্রশান্ত কিশোর।

প্রশান্ত কিশোর।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৯ ০১:২৮
Share: Save:

শুধু উপ-নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী বাছাই নয়, দলের প্রচারের কৌশল নির্ধারণেও সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে ‘টিম-পিকে’। খড়্গপুর বিধানসভা উপ-নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যে প্রচার কৌশল রচনা শুরু হয়েছে। শীঘ্রই তৃণমূল নেতৃত্বকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোররের সংস্থার লোকজন।

‘টিম-পিকে’ না কি প্রচারের কৌশলও ঠিক করে দেবে? সদুত্তর এড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির জবাব, ‘‘সব কিছু খতিয়ে দেখেই প্রচার এগোবে।’’ তবে তৃণমূলের এক জেলা নেতা মানছেন, ‘‘এক সংস্থার লোকেরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। ওরা কিছু পরামর্শ দেবে। কোনও রাজনৈতিক দলের ভোট পরিচালনার কৌশল ঠিক করে দেওয়া এবং প্রচারপর্বকে সেই ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পেশাদারি দক্ষতা রয়েছে ওই সংস্থার।’’

তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকারও বলছেন, ‘‘আমি প্রচার শুরু করে দিয়েছি। কোনও পরামর্শ এলে নিশ্চিত ভাবেই খতিয়ে দেখব।’’

সংস্থার এক সূত্রে খবর, তৃণমূলের প্রচারে সব সময় শৃঙ্খলা থাকে না। ‘টিম-পিকে’ সেটাই নিয়ন্ত্রণ করবে। বলে দেবে, বক্তৃতায় কোন কোন বিষয়ে কথা বলা উচিত, কী ভাবে প্রতিক্রিয়া সামলাতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কোন কোন বিষয় তুলতে হবে। এ জন্য ইতিমধ্যে রেলশহরে সমীক্ষায় নেমে মানুষের মন বোঝার চেষ্টা করছেন ওই সংস্থার লোকজনেরা। কী ভাবে মতামতের স্রোত নিজেদের দিকে ঘোরাতে হয়, তৃণমূলকে সেই পথও না কি দেখিয়ে দেবে ‘টিম- পিকে’। আর সে জন্য প্রশান্তের সংস্থার জনা চল্লিশেক কর্মী খড়্গপুরে ঘাঁটি গেড়েছেন। ভোটের ফলপ্রকাশের পরেই শহর ছাড়বেন তাঁরা।

কোন অঙ্কে প্রদীপ

পুরপ্রধান হিসেবে রেলশহরে পরিচিতি

ক্লাব-সংযোগ তুলনায় ভাল

বিরোধী-সমর্থকদের সঙ্গেও যোগাযোগ

তৃণমূলের নবীনদের অনেকে অনুগামী

শহরের যে কোনও সমস্যায় ছুটে যান

নির্বাচনী খরচ জোগানোর সামর্থ্য রয়েছে

ধোনি থেকে নচিকেতা, অনেক নামীদের পরিচিত

(টিম-পিকে’র সমীক্ষায় প্রদীপ সরকারের সমর্থনে উঠে আসা যুক্তি)

খড়্গপুরে দলের প্রার্থী হিসেবে বৃহস্পতিবার রেলশহরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের নাম ঘোষণা করেছে তৃণমূল। তৃণমূলেরই এক সূত্রে খবর, টিম-পি কে’ও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে বুধবার রাতে প্রদীপের নামই প্রস্তাব করেছিল। তার আগে দু’দিন ধরে রেলশহরে থেকে সমীক্ষা চালিয়েছেন প্রশান্তের সংস্থার লোকজন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যাপারে খুঁটিনাটি জেনেছেন এবং কথা বলেছেন আমজনতার সঙ্গে।

খড়্গপুরে তৃণমূলের পাঁচ নেতার মধ্যে দ্বন্দ্ব বহু দিনের। তাঁদের তিনজন— দলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে, কাউন্সিলর তথা জেলা নেতা দেবাশিস চৌধুরী এবং পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের নাম সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে চর্চায় ছিল। ছবিটা পাল্টায় গত সোমবার কালীঘাটে খড়্গপুরের পাঁচ নেতাকে নিয়ে মমতার বৈঠকের পরে। দলের এক সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে জেলা পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানিয়ে দেন রবিশঙ্কর নিজে প্রার্থী হতে চান না। সে ক্ষেত্রে লড়াইয়ে ছিলেন প্রদীপ ও দেবাশিস। শুভেন্দু নিজে প্রদীপের নাম বলেন বলেই খবর। তবে তখনই মমতা জানিয়েছিলেন, সমীক্ষার পরে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করা হবে।

সেই সমীক্ষা যে টিম-পি কে করেছে তা মানছেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘এক সংস্থার লোকজনেরা এসে সমীক্ষা করেছেন বলে শুনেছি।’’ বিজেপি-র জেলা সভাপতি শমিত দাশের কটাক্ষ, ‘‘কেউ তৃণমূলকে বাঁচাতে পারবে না। প্রশান্ত কিশোরও নন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

By Election Prasant Kishor Team PK TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE