Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

জোর করে বিয়ে, কন্যাশ্রী ক্লাবে ছাত্রী

বছর ষোলোর মেয়েটির বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিল বাড়ির লোকজন। মেয়েটি রাজি না হওয়ায় মারধর করা হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। তাতেও হাল ছাড়েনি ওই কিশোরী।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাতার শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:৩৩
Share: Save:

বছর ষোলোর মেয়েটির বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিল বাড়ির লোকজন। মেয়েটি রাজি না হওয়ায় মারধর করা হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। তাতেও হাল ছাড়েনি ওই কিশোরী। পরিবারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে সোজা কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যদের কাছে হাজির হয় সে। তাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে শনিবার ভাতারের আমারুন গ্রামে গিয়ে প্রশাসন, চাইল্ড লাইন বিয়ে আটকায় ওই কিশোরীর।

চাইল্ড লাইনের আধিকারিকেরা জানান, ওই পরিবার বিয়ে দেওয়ার কথা মানতে চাননি। পরে মেয়েটিকে আলাদ করে ডেকে নিয়ে গিয়ে কথা বলায় সবটা জানায় সে। পরি ওই পরিবারকে বুঝিয়ে আঠারো বছরের আগে মেয়ের বিয়ে না দেওয়ার মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়।

স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভাতারের আমারুন স্টেশন শিক্ষানিকেতন বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ে ওই কিশোরী। আগামী শুক্রবার তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। মেয়েটির অভিযোগ, বিয়েতে অনিচ্ছা ও পড়তে চাওয়ার ইচ্ছার কথা বাড়ির লোকজনেদের বারবার জানানোর পরেও তাঁরা গুরুত্ব দেননি। উল্টে মারধর করা হয় তাকে। শনিবার মরিয়া হয়েই গ্রামের এক কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যের বাড়ি চলে যায় সে। ওই কন্যাশ্রী ক্লাবের দলনেত্রী লীনা মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “শনিবার সন্ধ্যায় ওই মেয়েটি আমার কাছে এসে হাত ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে, তাকে জোর করে বাড়ি থেকে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। বিয়েতে না বলায়, কোথায় কোথায় মেরেছে তাও দেখায় ওই মেয়েটি।’’ এর পরেই লীনা স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক চঞ্চল হাজরার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে পুরো বিষয়টি জানায়। চঞ্চলবাবু ব্লক প্রশাসনকে জানান।

ব্লকের কন্যাশ্রী দফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মী উজ্জ্বল সামন্ত জানান, নাবালিকা বিয়ের খবর পেয়ে রাতেই চাইল্ড লাইন এবং পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই গ্রামে যান তাঁরা। কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যেরাও ছিল। মেয়েটির পরিবার প্রথম পুরো বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে চাইল্ড লাইনের এক প্রতিনিধি সাবিনা মুর্মুর কাছে ওই নাবালিকা পুরো ঘটনা জানায়। এর পরেই বিয়ে বন্ধের নির্দেশ দেন তাঁরা। ওই পরিবারকে শিশুকল্যাণ কমিটিতে হাজিরা দেওয়ার কথাও বলা হয়। উজ্জ্বলবাবু বলেন, ‘‘ওই নাবালিকার উপর অত্যাচার করা হলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পরিবারের লোকজনকে জানানো হয়েছে।’’ মাস তিনেক আগেও ওই স্কুলের কন্যাশ্রী ক্লাবের উদ্যোগে আমারুন গ্রামের দুই নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Marriage Kanyashree Club Teenage Girl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE