বড়দিনেই পারদপতন রাজ্য জুড়ে! উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ— সর্বত্র কমে গিয়েছে তাপমাত্রা। সঙ্গে চলছে উত্তুরে হাওয়ার দাপট। ভোর থেকে কনকনে ঠান্ডার শিরশিরানি দিব্যি টের পাচ্ছে শহরবাসী। দার্জিলিঙে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। শিশির-জমা বরফে ঢেকেছে টাইগার হিলের রাস্তা। পিছিয়ে নেই দক্ষিণবঙ্গও। বৃহস্পতিবার দক্ষিণের ছয় জেলায় পারদ নেমেছে ১০ ডিগ্রির নীচে।
সিকিম আবহাওয়া দফতরের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, ২৫ ডিসেম্বর থেকে বর্ষশেষ পর্যন্ত সিকিম ও সংলগ্ন উত্তরবঙ্গের সমতল এলাকায় তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রির আশপাশে থাকবে। পাহাড়ের উপরে কোথাও কোথাও তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচেও নেমে যেতে পারে। বৃহস্পতিবার ভোরে উত্তরের পার্বত্য এলাকায় একধাক্কায় বেশ কিছুটা পারদপতন হয়েছে। দার্জিলিঙের পার্বত্য এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হয়েছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শহরাঞ্চলেও পারদ নেমেছে ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। স্থানীয় সূত্রে খবর, সকালে টাইগার হিলের রাস্তায় শিশির জমে বরফের পাতলা স্তর পড়ে গিয়েছিল, যা দেখে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন পর্যটকেরা। তবে, সিকিমে তুষারপাতের পূর্বাভাস থাকলেও দার্জিলিঙে এখনই তুষারপাতের কোনও পূর্বাভাস নেই।
উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বৃহস্পতিবার দিনভর কুয়াশার পূর্বাভাস রয়েছে। ঘন কুয়াশার হলুদ সতর্কতা রয়েছে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং উত্তর দিনাজপুরে। শুক্রবারও কুয়াশার দাপট চলবে। বেলা বাড়লেও রোদের তেমন দেখা মিলবে না। সকালের দিকে কোথাও কোথাও দৃশ্যমানতা ২০০ থেকে ৫০ মিটারে নেমে যেতে পারে। ঘন কুয়াশা থাকবে দক্ষিণবঙ্গের পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনা ও বীরভূমেও।
আরও পড়ুন:
বড়দিনের ভোরে দক্ষিণবঙ্গের ছ’টি জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ঘরে নেমেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে কম তাপমাত্রা হয়েছে শ্রীনিকেতনে— ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া, সিউড়িতে ৯ ডিগ্রি, বাঁকুড়ায় ৯.১ ডিগ্রি, বর্ধমানে ১০ ডিগ্রি, আসানসোলে ১০.৪ ডিগ্রি, বহরমপুরে ১০.৪ ডিগ্রি, মেদিনীপুরে ১২.৬ ডিগ্রি, ব্যারাকপুরে ১৩ ডিগ্রি এবং ডায়মন্ড হারবারে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে পারদ। কলকাতাতেও এক ধাক্কায় ১৩ ডিগ্রির ঘরে নেমে এসেছে তাপমাত্রা। বৃহস্পতিবার ভোরে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হয়েছে ১৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ০.৮ ডিগ্রি কম। এখনও পর্যন্ত এটিই চলতি মরসুমের শীতলতম দিন! সঙ্গে বইছে কনকনে উত্তুরে হাওয়া। তাতে অবশ্য ছুটি কাটানোর উৎসাহে ভাটা পড়েনি। সকাল হতে না হতেই সোয়েটার-জ্যাকেটে মুড়ে চিড়িয়াখানা, ইকোপার্ক কিংবা সায়েন্স সিটি দেখতে বেরিয়ে পড়েছে শহরবাসী। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী তিন দিনে দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা আরও ২-৩ ডিগ্রি কমে যেতে পারে। নতুন বছর পর্যন্ত তাপমাত্রা খুব বেশি বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।