বিতর্কের শুরু সেখানেই। প্রশাসনের একাংশ জানাচ্ছেন, আইপিএস-রা সর্বভারতীয় ক্যাডারের অফিসার হওয়ায় তাঁদের চাকরির সব শর্ত নিয়ন্ত্রণ করে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের অধীন কেন্দ্রীয় পার্সোনেল এবং ট্রেনিং বিভাগ (ডিওপিটি)। কিন্তু নবান্ন সুরজিৎবাবুর চাকরি বাড়ানোর বিষয়ে কেন্দ্রের অনুমোদন নেয়নি। প্রশাসনের ওই অংশের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন ছাড়া ডিজি-র চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি করা যায় না। ফলে ডিজি পদে সুরজিৎবাবুর থেকে যাওয়া বেআইনি।
নবান্নের কর্তারা অবশ্য এতে অনিয়ম দেখছেন না। এক কর্তার কথায়, ‘‘চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর আগে অ্যাডভোকেট জেনারেলের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার যে তাঁকে চাকরিতে বহাল রাখছে, সেই নির্দেশের প্রতিলিপিও দিল্লিতে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু দিল্লি কিছুই জানায়নি। সুতরাং ধরে নিতে হবে এতে তাদের আপত্তি নেই।’’ এর পরে কোনও দিন তারা আপত্তি জানালে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা যাবে— বলছেন নবান্নের ওই কর্তা।
কেন্দ্রীয় পার্সোনেল মন্ত্রকের এক কর্তা অবশ্য বলছেন, ‘‘কেবল মেয়াদ বৃদ্ধির নির্দেশের প্রতিলিপি দেখে ডিওপিটি কেন সিদ্ধান্ত নেবে? রাজ্য আমাদের কাছে কোনও প্রস্তাব পাঠায়নি। অনুমোদনও চায়নি। কেন্দ্রীয় সরকার এ ব্যাপারে পুরোপুরি অন্ধকারে।’’ তাঁর চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে শনিবার সুরজিৎবাবুর সঙ্গে একাধিক বার যোগাযেগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও জবাব দেননি।
পার্সোনেল মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কেন্দ্রীয় ক্যাডারের অফিসারদের অবসর ও মৃত্যুজনিত বিধিতে ডিজি-র পদে মেয়াদ বৃদ্ধির সুযোগ নেই। নিতান্ত প্রয়োজনে মুখ্যসচিব ও রাজ্যের অর্থসচিবের চাকরির মেয়াদ ছ’মাস বাড়ানো পারে রাজ্য। অতীতে এ রাজ্যেও তেমন ঘটনা ঘটেছে। প্রথম মুখ্যমন্ত্রী কালে মমতাই তৎকালীন মুখ্যসচিব সমর ঘোষের চাকরির মেয়াদ ছ’মাস বাড়িয়েছিলেন। নিয়ম মেনেই। কিন্তু ডিজি-র ক্ষেত্রে এমনটা করার আইনি সুযোগ নেই। ফলে ডিজি-কে একপ্রকার জোর করেই স্বপদে রেখে দেওয়া হল বলে মনে করছেন রাজ্যের পুলিশ কর্তাদের একাংশ।