কুন্তল ঘোষের আর্জি শুনে বিচারক তাঁকে বলার অনুমতি দেন। ফাইল চিত্র।
চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন আদালতের বাইরে। কিন্তু আদালত কক্ষে ঢুকে প্রায় কোনও কথাই বলতে পারলেন না যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। কারণ, তাঁর কথার মাঝখানেই একাধিক বার তাঁকে থামিয়ে দিলেন বিচারক। পরে কুন্তলের সঙ্গে কথা বলার পর তাঁর আইনজীবী বিচারককে জানান, তাঁদের নতুন কিছু বলার নেই।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তলের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র মামলার শুক্রবার শুনানি ছিল নগর দায়রা আদালতে। আদালত কক্ষে ইডি এবং তাঁর আইনজীবী নিজেদের কথা জানানোর পরেই হঠাৎ কুন্তল জানান, তিনিও কিছু বলতে চান। ঘটনার সূত্রপাত সেখানেই।
কুন্তলের আর্জি শুনে বিচারক তাঁকে বলার অনুমতি দেন। কুন্তল বলতে শুরু করেন, ‘‘সব কিছুর মধ্যে একটা পর্দা রয়েছে...।’’
সম্প্রতি কুন্তলের যুব তৃণমূলের সদস্য পদ খারিজ করার দাবি উঠেছে শাসকদলেরই অন্দরে। তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছিল, যুবনেতা কুন্তলকে বহিষ্কার করতে চেয়ে তৃণমূল নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছেন স্বয়ং যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী তথা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। যদিও সায়নী নিজে এ নিয়ে কিছু বলেননি। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, তিনি এমন কোনও চিঠিও লেখেননি। তবে কুন্তল কিসের পর্দা বা আড়ালের কথা বলতে চেয়েছেন তা স্পষ্ট নয়।
কুন্তলের বাড়িতে পাওয়া একটি ধূসর রঙের ডায়েরি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বিস্তর। সেই ডায়েরির পাতায় সাঙ্কেতিক লেখার পাশাপাশি গানের কলিও খুঁজে পান ইডির তদন্তকারীরা। শুক্রবার কোর্ট রুমে এর পর ডায়েরি নিয়ে কিছু বলতে শুরু করেছিলেন কুন্তল। তবে তাঁর মুখ থেকে ‘ডায়েরি উদ্ধার...’— মাত্র দু’টি শব্দ উচ্চারিত হতেই বিচারক তাঁকে থামিয়ে দেন। কুন্তলকে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি কি নতুন কিছু বলতে চান?’’ কুন্তল থমকে গিয়ে আবার বলতে শুরু করেন। বিচারকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ‘‘হ্যাঁ। বলতে চাই। গোপাল দলপতির আন্ডারে...’’ কিন্তু এ বারও বাক্য সম্পূর্ণ করতে পারেননি কুন্তল। বিচারক আবার তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘আপনার যদি কিছু নতুন বলার থাকে আইনজীবীর মারফত বলুন।’’
কোর্ট রুমে তখন উপস্থিত ছিলেন কুন্তলের আইনজীবী। তিনি উঠে যান। কুন্তলের কথা শোনেন।তার পর আইনজীবী বিচারককে জানিয়ে দেন, তাঁদের নতুন কিছুই বলার নেই। বিষয়টি সেখানেই থেমে যায়। যদিও কুন্তল বলতে চেয়েও শেষ পর্যন্ত থামলেন কেন? কিসের পর্দার কথাই বা তিনি বলতে চেয়েছিলেন, তা অস্পষ্টই থেকে যায়।
সকালে আদালতে ঢোকার আগে কুন্তল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তাঁর সামাজিক ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার সামাজিক ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে। বলছেন ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে, ১০০টি গাড়ি রয়েছে। প্রমাণ করতে পারলে চরম সিদ্ধান্ত নেব।’’ কোর্ট রুমে বলা তাঁর কথার সঙ্গে অবশ্য এই বক্তব্যের মিল ছিল না কোনও। পরে কুন্তলের আইনজীবী পিন্টু কাঁড়ারকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কোর্টে যদি কেউ কিছু বলতে চান, তবে তাঁর প্রতিনিধি আইনজীবী থাকলে তাঁর মাধ্যমেই বলতে হয়। আর আমার মক্কেলের সঙ্গে কোর্ট রুমে কী কথা হয়েছে, তা বলতে আমি বাধ্য নই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy