Advertisement
E-Paper

পার্থের মামলায় ‘তারিখ পে তারিখ’! ক্ষুব্ধ বিচারক সিবিআইকে বললেন, ‘যেটা হচ্ছে, সেটা ঠিক হচ্ছে না’

বৃহস্পতিবার আলিপুরের জেলা দেওয়ানি ও দায়রা আদালতে শুনানি ছিল নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থের মামলার। সেখানে সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:১৮
বৃহস্পতিবার আলিপুরে জেলা দেওয়ানি ও দায়রা আদালতে শুনানি ছিল নিয়োগ দুর্নীতিতে অন্যতম অভিযুক্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থের।

বৃহস্পতিবার আলিপুরে জেলা দেওয়ানি ও দায়রা আদালতে শুনানি ছিল নিয়োগ দুর্নীতিতে অন্যতম অভিযুক্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থের। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হয়েছেন সাত মাস হাতে চলল, এই সাত মাসে তদন্তকারী সিবিআইয়ের ভূমিকা আবার প্রশ্নের মুখে পড়ল আদালতে। এ বার প্রকাশ্যেই বিচারক তদন্তকারী অফিসারকে ডেকে বললেন, ‘‘যেটা হচ্ছে, সেটা ঠিক হচ্ছে না।’’

বৃহস্পতিবার আলিপুরে জেলা দেওয়ানি এবং দায়রা আদালতে শুনানি ছিল নিয়োগ দুর্নীতিতে অন্যতম অভিযুক্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থের। তাঁর মামলাটির শুনানিতেই সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিচারক বলেন, ‘‘যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁদেরও কিছু অধিকার থাকে। অনির্দিষ্ট কাল ধরে তদন্ত চলছে তো আর বলা যায় না! আর কত দিন সময় লাগবে?’’ বিচারকের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সিবিআই কিছু জবাব দেওয়ার আগেই পার্থের আইনজীবী বলে ওঠেন, ‘‘এ তো ‘তারিখ পে তারিখ’-এর মতো চলছে!’’

বলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা ‘দামিনী’ ছবির একটি দৃশ্যে আদালতে বিচারের দেরি প্রসঙ্গে ওই সংলাপ বলছিলেন নায়কের চরিত্রের অভিনয়কারী বলিউড অভিনেতা সানি দেওল। পার্থের আইনজীবী সেলিম রহমান সেই সংলাপ ধার করেই আদালতের বিচারকের মন্তব্যে সহমত পোষণ করেছেন বলে মনে করছেন অনেকে।

নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পার্থ ছাড়াও অন্যান্য অভিযুক্ত যেমন সুবীরেশ ভট্টাচার্য, শান্তি প্রসাদ সিনহাদেরও মামলার শুনানি ছিল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে। বিচারক এই সমস্ত তদন্তের অগ্রগতি নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তদন্তকারী অফিসারের কাছে তিনি জানতে চান, ‘‘চার্জশিটে লিখেছিলেন, বাকি অভিযুক্ত এবং প্রার্থীদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা দরকার। কিন্তু তাঁরা কোথায়? প্রায় দু’মাস হয়ে গেল, আমি জয়েন করেছি। অনেক দিন তো হল। আমি জানি, এটা একটা বড় কাজ। প্রায় ৩৫০ জন আছেন। কিন্তু কারও স্টেটমেন্ট কি নেওয়া হয়েছে? কারও জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন? কোনও ব্যাঙ্কের স্টেটমেন্ট নিয়েছেন?’’

প্রশ্ন করেই অবশ্য থেমে থাকেননি বিচারক। এর পরেই তিনি তদন্তকারী অফিসারকে ডেকে বলে দেন, ‘‘যেটা হচ্ছে, সেটা ঠিক হচ্ছে না। অন্তত একটা ১৬৪ (জবানবন্দি নথিভুক্তি) করান।’’

বিচারপতির এই মন্তব্যের জবাবে সিবিআইও নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছে, তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশে আমরা ডিটেল ইনভেস্টিগেশন করছি। আমরা বিস্তারিত তদন্ত করছি। অল্প সময় চাইছি। ব্যাঙ্কের কিছু তথ্য নেওয়া হয়েছে আরও কিছু দরকার।’’

অন্য দিকে, নিয়োগ মামলায় দেরি প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘এঁরা তো বলবেনই আমরা তদন্ত টেনে নিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তদন্ত কী ভাবে এগোচ্ছে, সেটাও তো দেখতে হবে।’’ সরকারি আইনজীবীর কথায়, ‘‘যখন তদন্ত শুরু হয়েছিল, তখন অভিযোগ ছিল, বেআইনি ভাবে চাকরির দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তদন্তে দেখা যাচ্ছে, কী ভাবে নিয়োগ করা হবে এবং পরবর্তী কালে পদক্ষেপ কী হবে, তা-ও আগেভাগেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন অভিযুক্তরা।’’

এ ব্যাপারে বিচারকের প্রশ্নের জবাবে সরকারি কৌঁসুলি বলেন, ‘‘কী ভাবে ওএমআর ম্যানিপুলেট করা হল, কী ভাবে নিয়োগ করা হল, কী ভাবে গোটা বিষয়টি ধামা চাপা দেওয়া হল— পুরোটাই আমরা খুঁজে বের করছি। তদন্তে সরকারি কর্তাদের পাশাপাশি ব্যক্তিবিশেষের নামও উঠে এসেছে। প্রত্যেকেই ষড়যন্ত্রের অংশীদার। অপরাধের গুরুত্ব দেখে সবাইকে হেফাজতে নেওয়া দরকার। প্রমাণও আছে।’’

Partha Chatterjee West Bengal SSC Scam TET Scam CBI Court CBI
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy