Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মারাই গেলেন সোনারপুরের গুলিবিদ্ধ সেই তরুণী

মৃত্যু হল সোনারপুরের গুলিবিদ্ধ তরুণীর। মঙ্গলবার রাতে, মোটরবাইক আরোহী দুই ব্যক্তি পূজা মহাজন (২১) নামে ওই তরুণীর মাথার পিছনে গুলি চালায়। ঘটনাটি ঘটে সোনারপুর থানার ঘোষপাড়া এলাকায় তরুণীর বাড়ির কাছেই।

পূজা মহাজন

পূজা মহাজন

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৩৫
Share: Save:

মৃত্যু হল সোনারপুরের গুলিবিদ্ধ তরুণীর। মঙ্গলবার রাতে, মোটরবাইক আরোহী দুই ব্যক্তি পূজা মহাজন (২১) নামে ওই তরুণীর মাথার পিছনে গুলি চালায়। ঘটনাটি ঘটে সোনারপুর থানার ঘোষপাড়া এলাকায় তরুণীর বাড়ির কাছেই। এর পরেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় ই এম বাইপাস সংলগ্ন একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। বুধবার সকালে একটি অস্ত্রোপচার হয়। তবে চিকিৎসকেরা জানান, গুলিটি তাঁর মাথা থেকে বার করা যায়নি। সন্ধ্যার দিকে পূজার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। রাত আটটা নাগাদ হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর। গুলিতে তাঁর মাথার ভিতর একেবারে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতেই ওই তরুণীর মা হ্যাপি মহাজন পূজার প্রাক্তন প্রেমিক সৌমেন কয়ালের নামে অভিযোগ করেছিলেন। ওই রাতেই সোনারপুর থানার ঘাসিয়ারা এলাকা থেকে সৌমেনকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার বারুইপুর আদালতে তার আট দিনের পুলিশি হেফাজত হয়। এ দিন রাতে তার সঙ্গী সুকুমার দে-কেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, এ দিন রাতে জেরায় পূজাকে খুনের কথা স্বীকারও করে নিয়েছে সৌমেন। পুলিশ সূত্রের দাবি, ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে তরুণীর মাথায় সৌমেন নিজেই গুলি চালিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। পুলিশের দাবি, সৌমেন জানিয়েছে, তার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্ক ছিল পূজার। মাস চারেক আগে তাদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সম্প্রতি যাদবপুরে একটি চাকরি নেন পূজা। সৌমেনের সঙ্গে সর্ম্পক বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে আর এক বন্ধুর সঙ্গে মেলামেশাও বাড়ে তরুণীর। সৌমেনের দাবি, পূজার জন্য অনেক টাকাও খরচ করেছে সে। তার পরে পূজার ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনাটি মেনে নিতে পারেনি সে।

বারুইপুর জেলার এক পুলিশকর্তা জানান, পূজা কখন, কোথায় যাচ্ছেন বেশ কয়েক দিন ধরেই নজর রাখছিল সৌমেন। মঙ্গলবার খুনের পরিকল্পনা করেই এক সঙ্গীকে নিজের মোটরবাইকে বসিয়ে পূজার পিছনে গিয়ে দাঁড়ায়। তখন আবার দু’জনের মধ্যে ঝগড়া, ধস্তাধস্তিও হয়। এর

পরেই পিস্তল থেকে সৌমেন গুলি চালায় বলে দাবি পুলিশের। ঘটনার পরে সঙ্গীকে ছেড়ে বাড়ি ফিরে যায় সৌমেন। বিষয়টি জানাজানি হতেই বাড়িতে মোটরবাইকটি রেখে মাঠে গিয়ে লুকিয়ে পড়ে সে।

হ্যাপির অভিযোগ, বেশ কয়েক দিন বাড়ি গিয়ে পূজাকে খুনের হুমকি দিয়েছিল সৌমেন। পূজা ও সৌমেনের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দু’টি মোবাইলের কললিস্ট পরীক্ষা করা হয়। ফোন পরীক্ষা করে দেখা যায়,

মঙ্গলবার ঘটনার সময়ে ঘোষপাড়া অঞ্চলেই ছিল সৌমেন। ওই সূত্র ধরেই পুলিশকর্তারা সৌমেনকে চেপে ধরেন। তার পরেই সে খুনের কথা কবুল করে বলে দাবি তদন্তকারীদের।

সৌমেনের পরিবারে বক্তব্য, পূজার সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়েছিল। পূজার পরিবারের সম্মতিও ছিল। পরে অন্য এক জনের সঙ্গে পূজার ঘনিষ্ঠতা বাড়ায় সৌমেনের মধ্যে হেরে যাওয়ার অনুভূতি কাজ করে বলে মত মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যালের। তিনি বলেন, ‘‘ছেলেরা এতটাই গুরুত্ব পেয়ে বড় হয় এ সমাজে, যে তাদের অধিকাংশই কোনও রকম হার মেনে নিতে পারে না। এ ক্ষেত্রেও হয়তো সেই ‘মেল ইগো’ই কাজ করেছে। এমন ঘটালে যে নিজের জীবনটাও একেবারে নষ্ট হয়ে যাবে, তা-ও ভাবেনি ছেলেটি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Youth Girl Bullet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE