শারদোৎসব দিয়ে শুরু হচ্ছে বাংলার উৎসবের মরসুম। আর সেই উপলক্ষে রাজ্যের মন্ত্রী এবং বিধায়কদের জন্য বিশেষ বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্নে অনুষ্ঠিত রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেক মন্ত্রীকে পুজোর আগে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, উৎসবের দিনগুলোতে তাঁদের নিজ নিজ এলাকায় উপস্থিত থাকতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, বাংলায় উৎসব মানে শুধু আনন্দ নয়, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগেরও বড় সুযোগ। শারদীয়া পুজো থেকে শুরু করে কয়েক মাস ধরে একের পর এক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই সময়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগসূত্র গড়ে তুলতে রাজনৈতিক দলের জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় হওয়া দরকার। তাই তিনি চান, মন্ত্রীরা নিজেদের এলাকায় থেকে উৎসবের আবহকে কাজে লাগিয়ে জনসংযোগ আরও বাড়িয়ে তুলুন।
তবে শুধু জনসংযোগ নয়, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দিকেও জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে খবর মমতা স্পষ্ট জানিয়েছেন, যাতে কোথাও কোনও অশান্তির ঘটনা না ঘটে, তার জন্য প্রত্যেক মন্ত্রীকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রশাসন এবং পুলিশকে ইতিমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, উৎসবের মরসুমে কিছু ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করতে পারেন। তাই শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা সজাগ থাকবেন এবং প্রয়োজনে অবিলম্বে পুলিশকে জানাবেন। এ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী নেতাদের বিশেষ ভাবে আবেদন করেছেন, যেন তাঁরা কোনও অপ্রীতিকর মন্তব্য না করেন। তিনি মনে করিয়ে দেন, উৎসবের সময় অযথা মন্তব্য সংবাদমাধ্যমে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠতে পারে। তাই প্রত্যেককে বাক সংযম বজায় রাখতে হবে।
উল্লেখ্য, আগামী বছরে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ফলে উৎসবের এই মরসুম রাজনৈতিক দলগুলির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন, পুজোর সময় সমস্ত ধর্ম এবং সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখাটাই তাঁর অগ্রাধিকার। তাই মন্ত্রী এবং বিধায়কদের দায়িত্ব হবে সৌজন্য বজায় রেখে সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা। আগামী শনিবার থেকে মুখ্যমন্ত্রী পুজোর উদ্বোধন শুরু করবেন। রবিবার মহালয়ার দিনে তৃণমূলের মুখপত্রের শারদ সংখ্যা প্রকাশের পর কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের চেতলা অগ্রণীতে দেবী দুর্গার চক্ষুদান করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
নবান্নের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মন্ত্রিসভার পরবর্তী বৈঠক হতে পারে পুজোর পরে। তার আগে এই সময়টুকুতে শাসকদলের প্রতিনিধিরা সক্রিয় ভাবে এলাকায় থেকে যাতে মানুষের পাশে থাকেন, সেটাই মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান বার্তা। তিনি চান, উৎসবের আমেজে ভর করেই সরকার এবং দলের ভাবমূর্তি আরও দৃঢ় হোক।