Advertisement
০৮ অক্টোবর ২০২৪
Enforcement Directorate

আর জি করের দুর্নীতিও কি শিক্ষা দুর্নীতির ছকেই

ইডির তদন্তকারীদের কথায়, “আর জি করের দুর্নীতি-তদন্তে এটা প্রাথমিক পর্যায়। সন্দীপের দু’টি বাড়ি এবং আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের বাড়ি, অফিসে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া গিয়েছে। তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

Representative Image

সন্দীপ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৬:৫২
Share: Save:

সন্দীপ ঘোষ ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের নামে সাতটির বেশি ‘সন্দেহভাজন’ সংস্থার হদিস মিলেছে বলে ইডি সূত্রে দাবি করা হচ্ছে। তাতে আবার একই ব্যক্তি একাধিক সংস্থার ডিরেক্টর পদে বসে আছেন বলেও তদন্তকারীদের সূত্রে জানা যাচ্ছে।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আর্থিক অনিয়মের তদন্তে উঠে আসা এই সূত্রগুলি ধরে রাজ্যে শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে মিল পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। তদন্তকারী এক অফিসারের কথায়, “পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও তাঁর পরিবারের লোকজন এবং বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে বিভিন্ন সংস্থা ও ট্রাস্টের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা করেন বলে তথ্যপ্রমাণ উঠে এসেছিল। তা যাচাই করে আদালতে পেশ করা হয়েছে। পার্থ, অর্পিতা এবং পার্থের পরিজনের নামে থাকা সম্পত্তি এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা টাকা বাজেয়াপ্তও করা হয়েছে।

ইডির তদন্তকারীদের কথায়, “আর জি করের দুর্নীতি-তদন্তে এটা প্রাথমিক পর্যায়। সন্দীপের দু’টি বাড়ি এবং আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের বাড়ি, অফিসে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া গিয়েছে। তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” সন্দীপের শ্বশুরবাড়ির ঘনিষ্ঠ এক চিকিৎসকের বাড়িতেও তল্লাশি অভিযান চালানো হয় বলে ইডি-র তদন্তকারীদের সূত্রের খবর। ইডি সূত্রে দাবি, প্রাথমিক পর্যায়ে সন্দীপ ঘনিষ্ঠ দুই ব্যবসায়ী বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরা ও দেহরক্ষী আফসার আলির তিনটি সংস্থার নাম উঠে এসেছিল। সন্দীপ-সহ চার জন এখন আর্থিক দুর্নীতির মামলায় সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন। কিন্তু ইডির তদন্তে অগ্রগতির পরে সল্টলেকের বাসিন্দা স্বপন সাহা, হুগলির কুণাল রায় ও গৌতম সেনের নাম উঠে এসেছে। ওই তিন ব্যবসায়ী ছাড়া সন্দীপের শ্বশুরবাড়ির পরিজনের সম্পত্তির বিষয়েও খোঁজখবর চলছে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি।

ইডির একটি সূত্রে দাবি, সন্দীপ ঘনিষ্ঠ দুই বাংলাদেশি নাগরিকেরও হদিস মিলেছে। হাওয়ালা মারফত বাংলাদেশে কালো টাকা পাচার ও সম্পত্তিতে বিনিয়োগের নানা সূত্রও উঠে এসেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যাচ্ছে। ওই সব তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।

ইডি সূত্রে দাবি, সন্দীপ ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের সম্পত্তির বাজারমূল্য ২০-৩০ কোটি টাকার কাছাকাছি। ইডির এক কর্তার কথায়, “এখনই তল্লাশিতে বাজেয়াপ্ত করা নথি, সন্দীপ ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের আয়কর রিটার্ন এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি প্রাথমিক ভাবে যাচাই করে ৩০ কোটি টাকার দুর্নীতির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এই দুর্নীতির বহর ক্রমশ ধারেভারে আগের সব দুর্নীতিকে ছাপিয়ে যেতে পারে।”

ইডি সূত্রের দাবি, সন্দীপ ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী স্বপন সাহার সল্টলেকের বাড়ি এবং ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়। সন্দীপ ঘনিষ্ঠ স্বপন, কুণাল এবং গৌতমের বয়ান লিপিবদ্ধ করা হয়। তাঁদের আয়কর রিটার্ন ও সম্পত্তির নথি সংগ্রহ করার কাজ শুরু হয়েছে। দুর্নীতির মামলায় সন্দীপ-ঘনিষ্ঠজনের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের সূত্রে আরও অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি করা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Enforcement Directorate CBI R G Kar Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE