বার দু’য়েক চিঠি দিয়ে ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করার প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু নিরুত্তর পুর দফতর। পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে আপাতত ভোট হচ্ছে না রাজ্যের ছয় পুরসভায়। দুর্গাপুর, ধুপগুড়ি, হলদিয়া, পাঁশকুড়া, নলহাটি এবং কুপার্স ক্যাম্পে ভোট হওয়ার কথা ছিল জুন মাসে। সময়ে ভোট করতে হলে বিজ্ঞপ্তি জারির জন্য হাতে সময় রয়েছে মাত্র কয়েক দিন। কিন্তু সরকারের নীরবতা দেখে সেই সম্ভাবনা আর নেই বলেই মনে করছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
একই রকম ইঙ্গিত মিলছে শাসক দলের সূত্র থেকেও। তাদের বক্তব্য, রামনবমী বা হনুমানজয়ন্তী ঘিরে রাজ্যে একটা ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। যাকে হাতিয়ার করে দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভার উপনির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। বিভাজনের রাজনীতির এই আবহে এখনই আর কোনও ভোট করাতে চাইছেন না তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ফলে অন্য দল ছেড়ে তৃণমূলে নাম লেখানো বিধায়কদের ইস্তফা দিয়ে নতুন করে ভোটে লড়ার পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিপাকে পড়ে স্পিকারের সামনে শুনানিতে পুরনো দলে থাকার কথাই বলেছেন তাঁরা।
একই কারণে ছয় পুরসভায় ভোট করানোর ব্যাপারেও অনীহা শাসক দলে। দুর্গাপুর, জলপাইগুড়ি, বীরভূম, নদীয়াতে রামনবমীর মিছিল সাড়া ফেলেছে। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘ভোট হলে ওই ছ’টি পুরসভাতেই আমাদের জয় নিশ্চিত। কিন্তু বিজেপিও দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে। সেটা বাঞ্ছনীয় নয়।’’
আরও পড়ুন:দিল্লিতে গ্যাস লিক করে অসুস্থ ৪৫০ ছাত্রী
এমনিতে আদালতের নির্দেশে ১৪ মে পাহাড়ের চার পুরসভার ভোট। সেই সঙ্গেই ভোট হবে আরও তিন পুরসভায়। তবে এই সাত পুরসভায় ভোটের সিদ্ধান্ত যখন নেওয়া হয়, তখন রাজ্যের পরিস্থিতি এতটা তেতে ওঠেনি। পুর দফতর সূত্রে খবর, অবস্থা বদলের পরে ছয় পুরসভার ভোট নিয়ে তাদের পাঠানো প্রস্তাব নবান্নের শীর্ষস্তর থেকে খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। তার পর আর উচ্চবাচ্য করেননি পুরকর্তারা। সরকারি ভাবে অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
এই পরিস্থিতিতে ছয় পুরসভায় প্রশাসক বসানো হতে পারে বলে মনে করছে কমিশনের একটি সূত্র। অতীতে বিধাননগর, দমদম, দক্ষিণ দমদম, রাজারহাট-গোপালপুরেও একইভাবে ভোট পিছিয়ে প্রশাসক বসানো হয়েছিল। আইন পরিবর্তন করে প্রশাসক বসিয়ে দেড় বছর পুরসভা পরিচালনার ব্যবস্থাও করে রেখেছে সরকার। শীতকালে ওই ছয় পুরসভায় ভোট করাতে চায় নবান্ন। তত দিনে ধর্মীয় উন্মাদনার আবহ কেটে যাবে বলেই তৃণমূল নেতাদের ধারণা।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘কাঁথি পথ দেখিয়েছে। জোড়াফুলের বিকল্প যে পদ্মফুল তা ফের প্রমাণ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy