নির্দিষ্ট সময়ে ভোট হলে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের বাকি প্রায় এক বছর। তবে, এখন থেকেই তার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ‘ভূতুড়ে’ ভোটার নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই রাজ্যে পুলিশের কত বাহিনী আছে, সেই হিসাব চেয়েছে তারা। সূত্রের খবর, কনস্টেবল থেকে শুরু করে ডেপুটি পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কত জন অফিসার বা কর্মী আছেন, শূন্য পদের সংখ্যাই বা কত— সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে রাজ্য সরকারের কাছে সেই তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল। পুলিশ সূত্রের দাবি, সেই মতো রাজ্য নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে দিল্লিতে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে রাজ্য পুলিশে কনস্টেবল থেকে ডিএসপি স্তর পর্যন্ত মোট পুলিশকর্মী ও অফিসার রয়েছেন প্রায় ৮০ হাজার। অন্য দিকে, বাহিনীতে শূন্য পদের সংখ্যা ৪৬ হাজারের কাছাকাছি। যার মধ্যে শুধু কনস্টেবল স্তরেই প্রায় ৩০ হাজার পদ ফাঁকা আছে। সূত্রের দাবি, রাজ্য পুলিশের তরফে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে ইতিমধ্যেই এই হিসাব পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে, রাজ্য পুলিশে কত জন হোমগার্ড রয়েছেন, জানানো হয়েছে তা-ও। তবে, কমিশনের ওই নির্দেশে সিভিক ভলান্টিয়ারের সংখ্যা জানতে চাওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভোটের কাজে ব্যবহার করা হয় না। তাই পুলিশের একাংশের ধারণা, এই হিসাব চাওয়ার মাধ্যমে রাজ্যে ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, আপাতত একেবারেই প্রাথমিক স্তরে রয়েছে এই প্রস্তুতি। শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট করতে কত বাহিনী দরকার, সেই হিসাব এখনও হয়নি। তাই মনে করা হচ্ছে, বিভিন্ন রাজ্যে কত পুলিশ বাহিনী রয়েছে, তা জেনে নিয়ে তবেই পরবর্তী পদক্ষেপ করবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
উল্লেখ্য, ভোটের প্রস্তুতি শুরু করার জন্য গত মাসেই একটি বৈঠকে বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা। থানা, স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ, এসটিএফ— সব স্তরেই সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এর পাশাপাশি, বকেয়া গ্রেফতারি পরোয়ানার সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্যও বলেছিলেন নগরপাল।
পুলিশ আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, প্রত্যেক ভোটের আগেই নির্বাচন কমিশন গ্রেফতারি
পরোয়ানা কার্যকর করার উপরে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সেই কারণেই নগরপাল এখন থেকে ওই বিষয়ে বাহিনীকে তৎপর হতে বলেছেন। পাশাপাশি, থানাভিত্তিক দুষ্কৃতীদের তালিকা তৈরি করার জন্য লালবাজারের তরফে বলা হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)