Advertisement
E-Paper

এসআইআর-শুনানিতে থাকতেই হবে দলের বিএলএদের, অনুমতি না-দিলে আইনি লড়াই, কমিশনের সঙ্গে সংঘাতের ইঙ্গিত অভিষেকের

এসআইআরের শুনানি পর্বে নিবিড় সাংগঠনিক নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। রবিবারের বৈঠকেও আবার এক বার আসন্ন বিধানসভা ভোট এবং তার প্রাক্কালে এই এসআইআর প্রক্রিয়াকে ‘যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:২৫
রবিবার দলীয় নেতা-কর্মীদের ভার্চুয়াল বৈঠকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

রবিবার দলীয় নেতা-কর্মীদের ভার্চুয়াল বৈঠকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ায় শুনানি পর্ব শুরু হয়েছে শনিবার থেকে। রবিবার দলের এক লক্ষ নেতা কর্মীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে এসআইআরের দ্বিতীয় পর্বে করণীয় কী সে বিষয়ে জোড়া নির্দেশ দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এক, শুনানি পর্বে দলের বিএলএদের উপস্থিত থাকতে হবে। এবং দুই, শুনানি কেন্দ্রের বাইরে তৃণমূলের তরফে সহায়তা শিবির খুলে মানুষকে সাহায্য করতে হবে।

তবে প্রথম নির্দেশের মধ্যেই অভিষেক কমিশনের সঙ্গে সংঘাতের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন বলে অভিমত তৃণমূলের অনেকের। কারণ, শুনানি পর্বে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিকে প্রবেশাধিকার দিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, রবিবারের বৈঠকে অভিষেক বলেছেন, কমিশন অনুমতি দিচ্ছে না। কিন্তু বিএলএদের শুনানি পর্বে থাকতেই হবে। প্রয়োজনে আইনি লড়াই হবে বলেও বৈঠকে উল্লেখ করেছেন অভিষেক। বৈঠকে দলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামোল্লেখ করে অভিষেক বলেছেন, বিএলএরা যাতে শুনানি কেন্দ্রে হাজির থাকেন, এটা দিদির নির্দেশ। সূত্রের খবর, অভিষেক নির্বাচন কমিশনের ‘কৌশল’ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন, ইসি (নির্বাচন কমিশন) চাইছে মানুষ যাতে অধৈর্য হয়ে শুনানিকেন্দ্র থেকে বাড়ি চলে যান। তা হলে নাম বাদ দিতে সুবিধা হবে। এই প্রসঙ্গেই তিনি দলের নেতা কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন বুথস্তরে কাদের শুনানিতে ডাকা হচ্ছে, কেন ডাকা হচ্ছে, তা নিয়ে দলীয়স্তরে পদক্ষেপ করতে।

কেন বিএলএদের থাকার কথা তৃণমূল বলছে, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন অভিষেক। সূত্রের খবর, তিনি বলেছেন, এসআইআরের প্রথম পর্বে রাজনৈতিক দলগুলির বিএলএরা যুক্ত ছিলেন। ভোটের সময়ে প্রতি বুথে রাজনৈতিক দলের এজেন্ট থাকে। গণনাকেন্দ্রেও এজেন্ট রাখা হয়। তা হলে শুনানিতে কেন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব থাকবে না? সার্বিক ভাবে অভিষেকের এই তত্ত্ব সব রাজনৈতিক দলের জন্যই প্রযোজ্য। তবে অনেকের বক্তব্য, অভিষেক বুঝেই এ কথা বলেছেন। কারণ, প্রতি বুথভিত্তিক শুনানিতে লোক দেওয়ার মতো সাংগঠনিক শক্তি তৃণমূল ছাড়া অন্য কোনও দলের নেই।

এসআইআরের শুনানি পর্বে নিবিড় সাংগঠনিক নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। রবিবারের বৈঠকেও আবার এক বার আসন্ন বিধানসভা ভোট এবং তার প্রাক্কালে এই এসআইআর প্রক্রিয়াকে 'যুদ্ধ' বলে অভিহিত করেছেন তিনি। সূত্রের খবর, অভিষেক বৈঠকে বলেছেন, বিজেপির লোকজন বলেছিল রাজ্যে এক কোটি রোহিঙ্গা আছে। কিন্তু মৃত ও স্থানান্তরিত মিলিয়ে নাম বাদ পড়েছে ৫৮ লক্ষের। শুনানি পর্বে বৈধ ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার 'ষড়যন্ত্র' আরও প্রকট হতে পারে বলেও দলকে সতর্ক করে দিয়েছেন অভিষেক।

শুনানি পর্বে জেলায় জেলায় প্রবীণ নাগরিকদের হেনস্থা নিয়ে সোমবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে যাবে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। রবিবারের বৈঠকে অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, কেন পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ভার্চুয়াল শুনানি হবে না? সুপ্রিম কোর্টে ভার্চুয়াল শুনানি হয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যে এসে ভার্চুয়াল বক্তৃতা দেন। তা হলে নির্বাচন কমিশন কেন সেই পরিকাঠামো তৈরি করতে পারবে না? আগামী ৩১ ডিসেম্বর দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরে গিয়ে এই প্রশ্নও তোলা হবে বলে বৈঠকে জানিয়েছেন। আবাস প্রকল্পে যাঁরা বাড়ি পেয়েছেন, তাঁদের জন্য নথির বন্দোবস্ত করছে তৃণমূল। সেই নথি তাঁরা শুনানিতে দেখাবেন।

রবিবারের বৈঠকে প্রারম্ভিক ভাষণ দেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। তার পর বলতে গিয়ে এক দিকে যেমন দলের বিএলএদের কাজের তারিফ করেছেন অভিষেক, তেমনই স্পষ্ট করে দিয়েছেন ভোট পর্যন্ত নাওয়াখাওয়া ভুলে কাজ করে যেতে হবে। সাংগঠনিক ভাবেই কমিশনের উপর চাপ জারি রাখার বার্তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।

Abhishek Banerjee TMC SIR Election Commission West Bengal Politics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy