Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Sikkim Flood

বিপর্যস্ত ‘লাইফলাইন’, পুজোর আগে কি খুলবে শিলিগুড়ি থেকে সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক?

সিকিমে পৌঁছনোর এই একমাত্র জাতীয় সড়কটি এক সময় ‘বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন’ (বিআরও) দেখভাল করত। পরে, রাস্তাটি দুই রাজ্যের মধ্যে ভাগাভাগি করা হয়।

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে তাণ্ডব সিকিমে। তিস্তার জলে ভেসে গিয়েছে রাস্তাঘাট।

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে তাণ্ডব সিকিমে। তিস্তার জলে ভেসে গিয়েছে রাস্তাঘাট। —নিজস্ব চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:১৯
Share: Save:

দক্ষিণ লোনাক হ্রদ জলস্ফীতি এবং তিস্তার জল বেড়ে সিকিমের ‘লাইফলাইন’ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক পুরোপুরি বিপর্যস্ত। খরস্রোতা তিস্তার পাশেই কাজ চলছে জাতীয় সড়ক মেরামতির। সরকারি স্তর থেকে পর্যটন মহল, প্রশ্ন এখন একটাই। পুজোর আগে কি খুলবে শিলিগুড়ি থেকে সিকিমগামী এই রাস্তা? প্রশাসনিক সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটক অবধি ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা সারাই করে একমুখী বা ‘ওয়ান ওয়ে’ গাড়ি চলাচল পুজোর আগেই চালু করার চেষ্টা চলছে। তবে আবহাওয়া আর তিস্তার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেই বিষয়টি দিন দশেক পরে বোঝা যাবে। জাতীয় সড়ক আগামী নভেম্বরের মধ্যে পুরোপুরি চালু করা যাবে কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়।

সিকিমের মুখ্যসচিব ভি বি পাঠক বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কটি বিপর্যয়ে বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রংপো থেকে মেল্লি রাস্তা খোলা গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা বাজার থেকে গেলখোলা, রম্ভিখোলার অবস্থা খারাপ। পুরোদমে কাজ চলছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে ‘ওয়ান ওয়ে ট্রাফিক’ দিয়ে রাস্তা খোলা যায় কি না, দেখা হচ্ছে।’’

সিকিমে পৌঁছনোর এই একমাত্র জাতীয় সড়কটি এক সময় ‘বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন’ (বিআরও) দেখভাল করত। পরে, রাস্তাটি দুই রাজ্যের মধ্যে ভাগাভাগি করা হয়। সিকিমের অংশ সিকিম পূর্ত দফতর আর পশ্চিমবঙ্গের দিকে রাজ্য পূর্ত দফতরকে দেখভালের জন্য দেওয়া হয়। সিকিমের চিন সীমান্তে সেনাবাহিনীর যাতায়াত এই রাস্তা দিয়েই হয়। পরে লাভা, গরুবাথানের নতুন রাস্তাটি তৈরি হওয়ায়, সেনাবাহিনী সেটাও ব্যবহার করে। সাম্প্রতিক দুর্গোগের পর থেকে লাভার পথেই ভারী গাড়়ি, পণ্যবাহী গাড়ি, সেনার গাড়ি সিকিমে পৌঁছচ্ছে। এর বাইরে দার্জিলিং, সিংলা, জোরথাংয়ের রাস্তাও ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু দু’টি রাস্তাই অত্যন্ত ঘুরপথের হওয়ায় শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটক পৌঁছতে সাত থেকে ন’ঘণ্টা সময় লাগছে। তাতে বাড়ছে পরিবহণ খরচ।

এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে জাতীয় সড়ক মেরামতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের অধীন ‘ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার কর্পোরেশন লিমিটেড’কে। সংস্থার বিশেষজ্ঞেরা সে কাজ করছেন। গত কয়েক দিন ধরে পুরোদমে জাতীয় সড়ক মেরামতির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রয়োজনে, বিআরও-র সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে। তিস্তা বাজার, গেলখোলা, রম্ভিখোলা, লিকুভিরের মতো বহু এলাকায় জাতীয় সড়কটি কার্যত তিস্তার গর্ভে চলে গিয়েছে। মাটি, বালি, নুড়ি-পাথর ফেলে রাস্তা উপরে তুলে আনার চেষ্টা চলছে।

এই অবস্থায় ভারী গাড়ি চলাচলের আপাতত কোনও সম্ভাবনাই জাতীয় সড়কে নেই। মাসখানেক পরে, বৃষ্টি পুরোপুরি বন্ধ হলে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়েছিলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। তিনিও বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কে কাজ চলছে। কবে পুরোপুরি রাস্তা খুলবে, এখনও পরিষ্কার নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sikkim Flood sikkim
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE