Advertisement
০৭ অক্টোবর ২০২৪
C V Ananda Bose

রাজ্যপালের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিধানসভায় প্রস্তাব আনতে উদ্যোগী হচ্ছে সরকার পক্ষ

তৃণমূল সূত্রে খবর, রাজভবনে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালনের বিরোধিতা করে প্রস্তাবের খসড়া তৈরি হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তাতে সই করেছেন তৃণমূল বিধায়ক তথা বিধানসভায় দলের উপ-মুখ্য সচেতক তাপস রায়।

বাঁ দিকে, রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এবং ডান দিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাঁ দিকে, রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এবং ডান দিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

রবিশঙ্কর দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৫৮
Share: Save:

রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত চলছে লাগাতার। এ বার রাজ্যপালের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিধানসভায় প্রস্তাব আনতে উদ্যোগী হচ্ছে সরকার পক্ষ। কিছু দিন মুলতুবি থাকার পরে বিধানসভার বাদল অধিবেশন আবার শুরু হওয়ার কথা আগামী ২২ অগস্ট। তখনই প্রস্তাব এনে ওই আলোচনা চায় সরকার পক্ষ। মূলত সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও রাজভবনে পালিত ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ অনুষ্ঠানকে সামনে রেখেই এই অবস্থান নেওয়া হয়েছে।

তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, রাজভবনে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালনের বিরোধিতা করে প্রস্তাবের খসড়া তৈরি হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তাতে সই করেছেন তৃণমূল বিধায়ক তথা বিধানসভায় দলের উপ-মুখ্য সচেতক তাপস রায়। প্রস্তাবক হতে পারেন আরও দু’এক জন। তৃণমূলের পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধের গোড়াতেই এই প্রস্তাব আনা হতে পারে। এবং ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালনের বিষয়টিকে সামনে রেখে শাসক শিবির রাজভবনের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত আলোচনায় নিয়ে আসতে চাইছে। নিয়ম অনুসারে রাজ্যপালই রাজ্য সরকারের প্রধান। যে কারণে বাজেট বক্তৃতায় রাজ্যপাল ‘আমার সরকার’ সম্বোধন করে থাকেন। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের কাজকর্মের সমালোচনায় সরকার পক্ষের বিধানসভায় প্রস্তাব আনা তাই তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবিরের বড় অংশ।

অখণ্ড বাংলার প্রাদেশিক আইনসভায় ১৯৪৭ সালের ২০ জুন ভোটাভুটিতে দুই বাংলা ভাগের বিষয়টি নির্ধারিত হয়েছিল। ওই দিনটিকে দলগত ভাবে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে ইদানীং পালন করে বিজেপি। চলতি বছরে তাকে সরকারি ভাবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল বোস। তাঁর সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকাশ্যেই আপত্তি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপালকে লেখা চিঠিতে তিনি বলেছিলেন, ‘নিজেদের প্রতিহিংসার রাজনীতির জন্য কোনও দল এই রকম কর্মসূচি করতেই পারে কিন্তু তার সঙ্গে সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই।’ এই চিঠি লেখার আগে রাজ্যপালকে ফোনেও আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন তিনি। তবে রাজ্যপাল সেই আপত্তি পাশ কাটিয়েই রাজভবনে ওই দিনে বিশেষ অনুষ্ঠান করেছিলেন। রাজ্য সরকারের ‘অজ্ঞাতে এবং অসম্মতি’তে রাজ্যপালের ওই ভাবে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়ে পটনায় বিরোধী শিবিরের বৈঠকের পরেও সরব হয়েছিলেন মমতা। সেই সংঘাতের জের টেনে কিছুটা ব্যতিক্রমী ভাবেই রাজ্যপালের ওই অবস্থান নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলে এ বার বিধানসভায় প্রস্তাব আনার কথা ভেবেছেন তৃণমূলের পরিষদীয় নেতৃত্ব।

রাজনৈতিক শিবিরের ধারণা, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পরিচালনা ও সেখানে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের ভূমিকাও বিধানসভার আলোচনায় নিয়ে আসতে পারে সরকার পক্ষ। এই বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি সম্মুখ সমরে রয়েছে রাজভবন ও নবান্ন। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও এই প্রশ্নে রাজ্যপালের ভূমিকাকে ‘বিজেপির দালালের মতো আচরণ’ বলে মন্তব্য করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE