মূল্যায়ন নিয়েই কাঠগড়ায় ন্যাক

বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল’ (ন্যাক) মূল্যায়ন নিয়ে আগেও নানা অভিযোগ উঠেছিল। এ বার সেই অভিযোগ গিয়ে পৌঁছেছে খোদ সংসদীয় কমিটির কাছে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি শিক্ষা বিষয়ক সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং ন্যাক-এর চেয়ারম্যান অনিল দত্তাত্রেয় সহস্রবুদ্ধেকে সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া হয়েছে। একটি সূত্রের দাবি, সেই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও আছে। অভিযোগ, ন্যাক পরিদর্শনে তাঁদের যে মান নির্ধারণ করা হয়েছে তা যোগ্যতার থেকে ঢের বেশি। ‘নির্দিষ্ট’ কিছু কারণেই এই মানোন্নয়ন বলে মনে করেছেন সংসদীয় কমিটির সদস্যেরা। এ ব্যাপারে শিক্ষা সংক্রান্ত ব্যাপারে অভিজ্ঞ এক সাংসদ নির্দিষ্ট ভাবেই তথ্য দিয়ে অভিযোগ জানান বলে খবর।

সূত্রের দাবি, ন্যাক মূল্যায়নের গরমিলের বিষয়ে সব শুনেছেন চেয়ারম্যান এবং সব খতিয়ে দেখে যথোচিত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন। একটি সূত্রের দাবি, এ রাজ্যের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চ মান পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ন্যাক-এর এক আধিকারিকের ভূমিকা নিয়েও অভিযোগ জমা পড়েছে।

বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিদর্শন করে ন্যাক-এর দল এবং সেই পরিদর্শনে পাঠ্যক্রম, গবেষণা, শিক্ষকতা, পরিকাঠামো ইত্যাদি নানা বিষয় দেখে মূল্যায়ন করা হয়। পরিদর্শনের ভিত্তিতে ‘কিউমুলেটিভ গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ’-এর ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ‘এ++’ এবং সর্বনিম্ন ‘সি’ গ্রেড দেওয়া হয়। শিক্ষামহলের বক্তব্য, ‘এ’ গ্রেড থেকে উচ্চ মানের বা খুব ভাল প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু পরিদর্শনে দেখা গিয়েছে, বহু ভাল প্রতিষ্ঠান ‘বি++’ গ্রেড পেলেও অনেক প্রতিষ্ঠান শিক্ষা, গবেষণা, পরিকাঠামোয় উন্নতি না করেও ‘এ’ গ্রেড পেয়ে গিয়েছে। সূত্রের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বহু প্রতিষ্ঠানই এ ভাবে উচ্চ মানের বলে চিহ্নিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ তাদের যোগ্যতা, গুণমান নিয়েই প্রশ্ন আছে।

এ ক্ষেত্রেই প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি সরেজমিনে পরিদর্শনের ক্ষেত্রে ‘বিশেষ’ কিছু সুবিধার ফলে উচ্চ মান নির্ধারণ করা হয়েছে? নাকি পরিদর্শক দলের রিপোর্টকে এড়িয়ে অন্য ভাবে মান নির্ধারণ করা হয়েছে? অভিযোগ, নতুন পদ্ধতি চালু বহু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেই গবেষণা এবং শিক্ষকতা সংক্রান্ত মান বজায় রাখা হয় না। তা হলে কোন পদ্ধতিতে মান নির্ধারণ হয়? শিক্ষামহলের একাংশ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বহু ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা মহলের কয়েকজন ‘প্রভাবশালী’ থাকেন। তাঁদের ভূমিকা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠতে পারে। যদিও পাল্টা যুক্তিও শিক্ষা মহলে শোনা গিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি পরিকাঠামো, শিক্ষা সংক্রান্ত আলোচনাচক্র, কর্মসূচি, ইন্টার্নশিপ প্রকল্প চালায়। সেগুলিও পরিদর্শনে গুরুত্ব পেতে পারে।