Advertisement
E-Paper

চাকরি বাড়ির কাছে, শিল্প বঙ্গেই: মমতা

সোমবার কারিগরি শিক্ষায় কৃতী ছাত্রছাত্রীদের চাকরি প্রদান অনুষ্ঠানে ১০ হাজার পড়ুয়াকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। বিভিন্ন শিল্প সংস্থা তাঁদের নিয়োগ করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:২৯
কারিগরি শিক্ষায় কৃতীদের চাকরি প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে।

কারিগরি শিক্ষায় কৃতীদের চাকরি প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

শিল্প এবং কর্মসংস্থান নিয়ে বিরোধী শিবিরের নিরন্তর কটাক্ষ-অভিযোগের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার দাবি করলেন, পশ্চিমবঙ্গই শিল্পের গন্তব্য। শিল্প বাড়ুক এখানেই। দাবি করলেন, বঙ্গে চাকরি বাড়ির কাছেই। বাইরে যেতে হবে না।

সোমবার কারিগরি শিক্ষায় কৃতী ছাত্রছাত্রীদের চাকরি প্রদান অনুষ্ঠানে ১০ হাজার পড়ুয়াকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। বিভিন্ন শিল্প সংস্থা তাঁদের নিয়োগ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, আগামী দিনে আরও অন্তত ৩০ হাজার পড়ুয়া চাকরির নিয়োগপত্র পাবেন। তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের বাইরে যাওয়ার দরকার নেই। বাড়ির কাছেই চাকরি আপনাকে ডাকবে।’’

মমতার কথায়, বাংলা বরাবর শিল্পবান্ধব। কর্মসংস্থানই লক্ষ্য। তাঁর দাবি, দেশে ৪৫% কর্মসংস্থান কমলেও বাংলায় তা বেড়েছে ৪০%। মাঝারি-ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্পের ৯০ লক্ষ সংস্থায় কাজ করেন প্রায় ১.৩৬ কোটি মানুষ। চর্মশিল্পে কর্মসংস্থান প্রায় পাঁচ লক্ষ। লক্ষাধিক কর্মসংস্থান তথ্যপ্রযুক্তিতে। তৈরি হচ্ছে শিল্পতালুক। সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠী, তাঁত শিল্পের উন্নয়ন এবং কাজের সুযোগ বাড়ছে। রয়েছে ডেউচা পাঁচামির মতো বড় শিল্পের হাতছানিও। তাতে লক্ষাধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে বেশ কয়েকটি জেলা মিলিয়ে।

কারিগরি শিক্ষা নিয়ে ‘উৎকর্ষ বাংলা’ কর্মসূচি চালু করেছিল তৃণমূল সরকার। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১৫ সেপ্টেম্বর খড়্গপুরে থাকবেন তিনি। সেখান থেকেও নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। বিভিন্ন জেলা মিলিয়ে মোট নিয়োগপত্র দেওয়া হবে ৩০,৭৬২ পড়ুয়াকে। সরকারের বক্তব্য, ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প, বড় শিল্প, উৎপাদন, পরিষেবা ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কারিগরি পড়ুয়াদের কাজের সুযোগও।

এ দিনের অনুষ্ঠানে নিয়োগপত্র বিতরণের প্রক্রিয়া নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। যে-দশ হাজার পড়ুয়াকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে, তাঁদের উপস্থিতি চোখে না-পড়ায় কারণ জানতে চান মমতা। প্রশাসনিক কর্তারা জানান, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি অনেক প্রার্থীর কাছে আগেই নিয়োগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছে। তাঁরা কাজে যোগও দিয়েছেন। বাকিদের নিয়োগপত্র পাঠানো শুরু হয়েছে। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘‘ছ’টি জেলা থেকে চাকরির প্রস্তাব যাঁরা পেয়েছেন, তাঁরা যোগ দিয়েছেন।’’ ১১ হাজার নিয়োগপত্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেই সব ফাইল পরখ করে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ১১ হাজার নিয়োগপত্র এ দিনের মধ্যেই দিয়ে দিতে হবে পড়ুয়াদের। তাঁরা অনুষ্ঠানস্থল থেকে বাসে বাড়ি ফেরার পথে সরকারি নোডাল অফিসার এক-এক জনকে নিয়োগপত্র তুলে দেবেন। এই নিয়োগপত্র বিলি নিয়েও সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। সিপিএমের অভিযোগ, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সরকারি টাকা খরচ করে লোকজন ডেকে ডেলিভারি বয়-সহ নানা কাজের কাগজ তুলে দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের কোনও কৃতিত্ব নেই। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘চপশিল্প, তোলাবাজি শিল্প এবং শিল্পকলা— ওঁর বিবেচনায় শিল্প বলতে যা বোঝায়, সে-সবের উন্নয়ন মুখ্যমন্ত্রীই করেছেন।’’ সুজনের অভিযোগ, কাজের জন্য বাংলার মানুষকে এখন ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিতে হয়। শিল্পের নিরিখে গোটা দেশের কাছে রাজ্যের মাথা নিচু হয়ে গিয়েছে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রশ্ন, ‘‘এ বার কি দুয়ারে চাকরি প্রকল্প চালু হল? বেসরকারি চাকরি বিলি করছেন মুখ্যমন্ত্রী, এর চেয়ে দুরবস্থা আর কী হতে পারে!’’

Mamata Banerjee Job Fair
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy