Advertisement
E-Paper

মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিধানসভা ভবানীপুরে বিজেপির তিন মণ্ডলে নেই কোনও বাঙালি সভাপতি! ক্ষোভ পদ্মের অন্দরে

কলকাতা পুরসভার মোট আটটি ওয়ার্ড নিয়ে ভবানীপুর বিধানসভা, যা সাংগঠনিক ভাবে বিজেপির তিনটি মণ্ডলে বিভক্ত। ভবানীপুর-১ মণ্ডল তৈরি হয়েছে কলকাতা পুরসভার ৬৩, ৭০ এবং ৭২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে। মণ্ডল-২ তৈরি হয়েছে ৭১, ৭৩ এবং ৮২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে। মণ্ডল-৩ তৈরি হয়েছে ৭৪ এবং ৭৭ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৩০
(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারী। (ডান দিকে)

(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারী। (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।

সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরের অধীন তিন মণ্ডলে নতুন সভাপতিদের নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। তার পরেই জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে ভবানীপুর বিধানসভার বিজেপির কর্মীমহলে। কারণ, ওই তিনটি মণ্ডলের একটিতেও কোনও বাঙালি সভাপতি নেই! তার ফলে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছে ভবানীপুরে বিজেপির বাঙালি নেতা-কর্মীদের মধ্যে।

উল্লেখ্য, বুধবার তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী তৃণমূলের সর্ব স্তরের নেতা-কর্মীদের আগামী পয়লা বৈশাখ ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালনের নির্দেশ দিয়েছেন। লিখিত নির্দেশ জারি করে তিনি ‘বাংলা অস্মিতা (গরিমা)’ তুলে ধরতে দলের সর্ব স্তরের নেতাদের উদ্যোগী হতেও নির্দেশ দিয়েছেন, যা আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। সেই আবহে মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রের তিন মণ্ডল সভাপতি পদে ‘অবাঙালি’ মুখ এনে খানিকটা বিপাকেই পড়েছে বিজেপি। কর্মীমহলের ক্ষোভ প্রসঙ্গে বিজেপির কলকাতা জ়োনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘মণ্ডল সভাপতির মনোনয়ন হয়েছে একটি পদ্ধতি মেনে। যে পদ্ধতিতে মণ্ডল থেকে বুথ স্তর পর্যন্ত সকলের মতামত নেওয়া হয়েছে। সেই মতামতে যাঁদের নাম সবচেয়ে বেশি সমর্থন পেয়েছে, তাঁদেরই মণ্ডল সভাপতি পদ দেওয়া হয়েছে। তবে সভাপতিপদ নিয়ে কোনও কর্মী বা নেতার কিছু বলার থাকলে দলের মঞ্চ অবশ্যই তাঁদের জন্য উন্মুক্ত। সেখানে তাঁরা তাঁদের মতামত খোলাখুলি ভাবে জানাতে পারেন। বিজেপিতে সেই গণতন্ত্র রয়েছে।’’

কলকাতা পুরসভার মোট আটটি ওয়ার্ড নিয়ে তৈরি ভবানীপুর বিধানসভা। যা সাংগঠনিক ভাবে বিজেপির তিনটি মণ্ডল বিভক্ত। ভবানীপুর-১ মণ্ডল তৈরি হয়েছে কলকাতা পুরসভার ৬৩, ৭০ এবং ৭২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে। ভবানীপুর মণ্ডল-২ তৈরি হয়েছে ৭১, ৭৩ এবং ৮২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে। ভবানীপুর-৩ মণ্ডল তৈরি হয়েছে ৭৪ এবং ৭৭ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে।

ভবানীপুর মণ্ডল-১ সভাপতি পদে থেকে গিয়েছেন ‘অবাঙালি’ রবীন্দ্র চৌধুরি। এই নিয়ে তিনি দ্বিতীয় বার সভাপতি পদে এলেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরেই তিনি দায়িত্ব পেয়েছিলেন। গত বছর লোকসভা ভোটের কারণে তাঁর মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি করা হয়েছিল। এ বার তাঁকে বিজেপি নেতৃত্ব আবার ওই পদে রেখেছেন। ভবানীপুর মণ্ডল-২-এ টানা চার বারের সভাপতি ছিলেন সঞ্জিত কুমার শর্মা। এই ‘অবাঙালি’ সভাপতিকে সরিয়ে সভাপতি হয়েছেন একজন বিহার-তনয় শিবসাগর যাদব। ৩ নম্বর মণ্ডলের সভাপতিও করা হয়েছে ‘অবাঙালি’ রাহুল পাণ্ডেকে। এই তিন মণ্ডল সভাপতির মধ্যে একমাত্র বাঙালি সভাপতি ছিলেন ৩ নম্বর মণ্ডলেই। সেই সভাপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়কে সরিয়ে সভাপতি করা হয়েছে ‘অবাঙালি’ রাহুলকে। অশোক আবার অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানা থেকে ভবানীপুরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। নানা সময়ে দলের বিভিন্ন দায়িত্বেও থেকেছেন। কিন্তু এ বার তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তালিকা প্রকাশের পরে রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ভবানীপুর বিজেপির বাঙালি নেতা-কর্মীরা। তেমনই এক নেতার কথায়, ‘‘বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মতো এক দক্ষ বাঙালি নেতাকে ভবানীপুরের মতো কেন্দ্রে দায়িত্বে এনে যেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে চাইছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, সেখানে বাঙালিদের মণ্ডল সভাপতি পদ না দিয়ে সেই লড়াইকে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’ ওই নেতা আরও বলেন, ‘‘ভবানীপুর মণ্ডল-১ সভাপতি রবীন্দ্র চৌধুরিকে আবার দায়িত্বে রেখে দেওয়া হয়েছে। যিনি ভবানীপুর বিধানসভা এলাকার বাসিন্দাই নন! এখন তিনি থাকেন বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে। আমাদের মনে হচ্ছে, এই সব করা হয়েছে আসলে তৃণমূলকে সুবিধা করে দেওয়ার জন্য। শুভেন্দুদা যদি আমাদের মতো নিচুতলার কর্মীদের কখনও তাঁর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেন, তা হলে এই বিষয়টি আমরা তাঁর কাছে তুলে ধরব। আশা করি, তিনি ভবানীপুর এলাকায় বাঙালি বিজেপি কর্মী এবং বাঙালি ভোটারদের কথা বুঝবেন।’’

BJP Bhowanipore Suvendu Adhikari Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy