Advertisement
E-Paper

পঞ্চায়েতমুখী ডোল-বাজেট

গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতা মেনে ‘ডোল’ বণ্টন অব্যাহত থাকলেও শিল্প-বিনিয়োগে বাড়তি কোনও গুরুত্ব নেই বাজেটে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৮
ভাবনা: দলের কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার কলকাতায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

ভাবনা: দলের কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার কলকাতায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

মাস ছয়েকের মধ্যে পঞ্চায়েত ভোট। রাজ্য বাজেটও তাই পঞ্চায়েতমুখী। চাষবাস, গ্রামোন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের দিকে তাকিয়ে বাজেটে নানা সুবিধা বিলোনোর কথা ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।

গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতা মেনে ‘ডোল’ বণ্টন অব্যাহত থাকলেও শিল্প-বিনিয়োগে বাড়তি কোনও গুরুত্ব নেই বাজেটে। মুখ্যমন্ত্রীর অবশ্য ব্যাখ্যা, ‘‘এই তো শিল্প সম্মেলন করে লগ্নি টানার চেষ্টা হয়েছে। এই বাজেট মা-মাটি-মানুষের দিকে তাকিয়ে। সামাজিক উন্নয়নে জোর দিতেই এ বার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’

সেই পরিকল্পনায় রয়েছে চাষের জমি কৃষিকাজের জন্যই কেনা হলে মিউটেশনে ছাড়, ফসলের অভাবী বিক্রি ঠেকাতে ১০০ কোটির তহবিল গঠন, বার্ধক্যভাতা মাসিক ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করা, কন্যাশ্রীর বার্ষিক ভাতা ৭৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করা এবং অল্প আয়ের পরিবারে বিবাহযোগ্যা মেয়েদের জন্য এককালীন ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার ‘রূপশ্রী’ প্রকল্প।

শিশু জন্মালে দামি গাছ দেওয়া থেকে শুরু করে, সংখ্যালঘু, তফসিলি জাতি-উপজাতির স্কলারশিপ, দু’টাকা কেজি চাল, শ্মশান-কবরস্থান সংস্কার, মৃতদেহ সৎকারের জন্যও সরকার পর পর প্রকল্প ঘোষণা করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘সরকারের থেকে রাজ্যের ৯০% মানুষ কিছু-না-কিছু পান। এটাই সরকারের মানবিক মুখ।’’

অর্থমন্ত্রী অবশ্য শিল্প-বিনিয়োগ নিয়ে কিছু ইতিবাচক বার্তা দিতে চেষ্টা করেছেন। গৃহস্থদের ঘরবাড়ি, ফ্ল্যাট কেনার স্ট্যাম্প ডিউটি গ্রামে ৬% থেকে ৫% এবং শহরে ৭% থেকে ৬%-এ নামিয়ে এনেছেন তিনি। চা বাগানে কৃষি-আয়করে এবং তার উপর সেস-এও ছাড় ঘোষণা করেছেন। তবে শিল্প ক্ষেত্রে ইলেকট্রিসিটি ডিউটি ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু প্রশাসনিক সরলীকরণ ছাড়া আর কোনও সুখবর নেই। নির্দিষ্ট ভাবে বলা নেই কর্মসংস্থানের প্রসঙ্গও।

অর্থ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, জিএসটি চালুর পর রাজ্যের হাতে কর বসানো বা কমানোর অধিকার প্রায় আর কিছুই নেই। ফলে শিল্পক্ষেত্রে চালু উৎসাহভাতা প্রকল্পটিই যথেষ্ট। তবে ‘ডোল’-এর খরচ যে ভাবে বাড়ছে, তা সামাল দিতে আয়ের যথেষ্ট ব্যবস্থা থাকছে কি— উঠেছে এ প্রশ্নও।

গত বাজেটে রাজ্য নিজস্ব আয় ৫৫ হাজার ৭৮৬ কোটি হবে বলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু বছর শেষে তা কমে হতে পারে ৫০ হাজার ৭০ কোটি। কেন্দ্রের থেকে প্রাপ্য অনুদানও কম মিলেছে এ বার। কম আসতে পারে কেন্দ্রের থেকে প্রাপ্য করের ভাগের টাকাও। সব মিলিয়ে রাজস্ব ঘাটতি এবং আর্থিক ঘাটতি কোথায় পৌঁছবে তা ভেবে দিশাহারা অর্থ কর্তারা। অগত্যা এ বছর বাজার থেকে ৩৮ হাজার কোটি টাকা ধার নিতে হচ্ছে। আগামী বছরেও প্রায় ৪৪ হাজার কোটি টাকা ধারের পরিকল্পনা রয়েছে।

যা দেখে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের কটাক্ষ, ‘‘ছ’বছরে ৮১ লক্ষ মানুষ কাজ পেলে তো রাজ্যে বেকারই নেই।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘ডোলের বাজেটের ঢোল বাজিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। সেই ঢোল মানুষ ফাটিয়ে দেবে।’’

এক নজরে

কন্যাশ্রীর বার্ষিক ভাতা ৭৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০০

বার্ধক্য ভাতাও মাসে ৭৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০০

জমি-বাড়ি রেজিস্ট্রেশনের স্ট্যাম্প ডিউটি কমল ১%

কৃষিকাজের জন্য চাষের জমি কিনলে লাগবে না মিউটেশন ফি

ফসলের অভাবী বিক্রি ঠেকাতে ১০০ কোটির তহবিল

Mamata Banerjee State budget মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অমিত মিত্র Amit Mitra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy