Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

এখনও নিখোঁজ ২৫ মৎস্যজীবী

আকাশের অবস্থা দেখে বৃহস্পতিবারই তড়িঘড়ি বন্দরে ফিরে আসে বেশির ভাগ ট্রলার। প্রায় সাড়ে তিনশো ট্রলার নোঙর ফেলে বঙ্গোপসাগরের কেঁদোদ্বীপের কাছে।

কাকদ্বীপে প্রবল ঝড়ে ডুবছে ট্রলার। ছবি পুলিশ সূত্রে পাওয়া।

কাকদ্বীপে প্রবল ঝড়ে ডুবছে ট্রলার। ছবি পুলিশ সূত্রে পাওয়া।

দিলীপ নস্কর ও সুপ্রকাশ মণ্ডল
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯ ০১:১০
Share: Save:

কাকদ্বীপে ট্রলারডুবির ঘটনায় উদ্ধার করা হল ৬ জন মৎস্যজীবীকে। সোমবার রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি ডুবে যাওয়া চারটি ট্রলারের। এখনও নিখোঁজ ২৫ জন। খোঁজ চালাচ্ছে উপকূল রক্ষী বাহিনী। প্রশাসন সূত্রের খবর, যোগাযোগ করা হয়েছে বাংলাদেশের উপকূল রক্ষী বাহিনীর সঙ্গেও।

আকাশের অবস্থা দেখে বৃহস্পতিবারই তড়িঘড়ি বন্দরে ফিরে আসে বেশির ভাগ ট্রলার। প্রায় সাড়ে তিনশো ট্রলার নোঙর ফেলে বঙ্গোপসাগরের কেঁদোদ্বীপের কাছে। পর দিন আকাশ কিছুটা পরিষ্কার হওয়ায় সকলে ফের বেরিয়ে পড়েন। উদ্ধার হওয়া মৎস্যজীবীরা সোমবার জানান, শনিবার ভোর ৩টে নাগাদ ফের জোরে ঝড় ওঠে। সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি। ঢেউয়ের তোড়ে অনেক ট্রলার ভেসে যায় বাংলাদেশের দিকে।

গত বছর জুলাইয়েই কাকদ্বীপে ট্রলার ডুবে নিখোঁজ হন ৪২ জন। ২৮ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। বাকিদের খোঁজ মেলেনি। এফবি দুর্গা ট্রলারে ছিলেন প্রবীণ মাঝি রবি দাস। প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর ধরে সমুদ্রে যাচ্ছেন তিনি। বললেন, ‘‘তিন-চার তলা বড় বড় ঢেউ! ট্রলার নীচে নামছে আর উঠছে। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। বেঁচে ফিরব ভাবিনি। চোখের সামনেই দেখলাম, ডুবে গেল এফবি নয়ন ট্রলার। ওখানে জনা পনেরো ছিল। কেউ কাউকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যাবে, এমন পরিস্থিতি ছিল না।’’

অমল দাস, অরুণ দাস, প্রসেনজিৎ দাস-রা ছিলেন এফবি দশভুজা ট্রলারে। তাঁরা জলে পড়েন। তিন-চার ঘণ্টা ভেসে ছিলেন। শেষমেশ অন্য একটি ট্রলার উদ্ধার করে। অমলের কথায়, ‘‘প্রাণে বেঁচে ফিরতে পারব ভাবিনি। কিন্তু পরিস্থিতি যা-ই হোক, আমাদের মাছ ধরতে ফের সমুদ্রে যেতেই হবে।’’

কেন এমন ঘটল?

প্রশাসন জানিয়েছে, আবহাওয়া খারাপ হতে পারে জেনে ১ জুন থেকে বার বার মৎস্যজীবীদের সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়। মৎস্য দফতরের অতিরিক্ত অধিকর্তা (সামুদ্রিক) জয়ন্ত প্রধান জানান, ‘‘নিষেধ না মেনেই ওই মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে গিয়েছিলেন। সে কারণেই এমন বিপর্যয়। কেঁদোদ্বীপ থেকে ওঁরা যদি ফ্রেজারগঞ্জ বা নামখানায় ফিরে যেতেন, তা হলেও এমন ঘটত না।’’

আবহাওয়া দফতর এবং মৎস্য দফতরের পাঠানো সতর্কবার্তার কথা মেনে নিয়েছেন মৎস্যজীবীদের দুই সংগঠনের কর্তা সতীনাথ পাত্র এবং বিজন মাইতি। তাঁরা বলেন, ‘‘আমরাও সমুদ্রে না যাওয়ারই বার্তা দিয়েছিলাম। বেশির ভাগ ট্রলার ফেরত এলেও কিছু কেঁদোদ্বীপে থেকে গিয়েছিল। তারাই বিপদে পড়েছে।’’ মৎস্যজীবীদের একাংশ জানাচ্ছেন, রোজগারের তাগিদেই ঝুঁকি নিয়েই বিপদে পড়েন অনেকে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sea Fisherman Missing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE