Advertisement
E-Paper

তিন নির্দলকে দলে টেনে বাজিমাত তৃণমূলের

পনেরো দিনে তিন বার শিবির বদল করে শেষ পর্যন্ত শাসক দলের দিকেই ঝুঁকে পড়লেন রামজীবনপুর পুরসভায় নির্দল হিসেবে জয়ী তিন কাউন্সিলর। পশ্চিম মেদিনীপুরের ওই পুরসভায়, নির্দল হিসেবে জয়ী হওয়ার দিন কয়েকের মধ্যেই কলকাতায় এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের পাশে বসে ওই তিন কাউন্সিলরই জানিয়েছিলেন, ‘উন্নয়নের স্বার্থে’ বিজেপিকেই বেছে নিচ্ছেন তাঁরা। দশ দিনের মধ্যেই অবশ্য রং বদলে, বৃহস্পতিবার তাঁরা জানাচ্ছেন বিজেপি নয়, বোর্ড গড়তে তাঁরা সমর্থন করবেন তৃণমূলকেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৫ ০৩:১৬
তৃণমূলে যোগ দিলেন নির্দল কাউন্সিলর শিউলি সিংহ ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে দলীয় কার্যালয়ে। ছবি: সৌমেশ্বর ভট্টাচার্য।

তৃণমূলে যোগ দিলেন নির্দল কাউন্সিলর শিউলি সিংহ ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে দলীয় কার্যালয়ে। ছবি: সৌমেশ্বর ভট্টাচার্য।

পনেরো দিনে তিন বার শিবির বদল করে শেষ পর্যন্ত শাসক দলের দিকেই ঝুঁকে পড়লেন রামজীবনপুর পুরসভায় নির্দল হিসেবে জয়ী তিন কাউন্সিলর।

পশ্চিম মেদিনীপুরের ওই পুরসভায়, নির্দল হিসেবে জয়ী হওয়ার দিন কয়েকের মধ্যেই কলকাতায় এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের পাশে বসে ওই তিন কাউন্সিলরই জানিয়েছিলেন, ‘উন্নয়নের স্বার্থে’ বিজেপিকেই বেছে নিচ্ছেন তাঁরা।

দশ দিনের মধ্যেই অবশ্য রং বদলে, বৃহস্পতিবার তাঁরা জানাচ্ছেন বিজেপি নয়, বোর্ড গড়তে তাঁরা সমর্থন করবেন তৃণমূলকেই।

ওই তিন কাউন্সিলরের অন্যতম শিউলি সিংহ ভট্টাচার্য এক ধাপ এগিয়ে এ দিন মেদিনীপুরে এসে সরাসরি যোগ দিয়েছেন শাসক দলে। শিউলিদেবীর স্বামী, বিজেপির রামজীবনপুর শহর মণ্ডল সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত সিংহও এ দিন শাসক দলে যোগ দিয়েছেন।

অন্য দুই নির্দল কাউন্সিলর রিঙ্কু নিয়োগী এবং মানসী চৌধুরীও জানিয়েছেন ‘উন্নয়নের স্বার্থে’ তাঁরাও বেছে নিচ্ছেন তৃণমূলকেই।

রামজীবনপুরের মহাজোট ‘দুর্নীতি বিরোধী মঞ্চ’-এর প্রতীকে জয়ী চতুর্থ নির্দল কাউন্সিলর সিপিএম মনোনীত জয়দেব ধাড়ার সঙ্গে অবশ্য এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। তবে তিন নির্দলের সমর্থন নিয়ে রামজীবনপুরের পুরনো ‘ট্র্যাডিশন’ ভেঙে বোর্ড গড়তে তৃণমূলের কোনও বাধা রইল না।

১১ আসনের ওই পুরসভায় মহাজোটের ৪ প্রার্থী জয়ী হলেও দু’টি আসনে বিজেপির প্রতীকে জয়ী প্রার্থীরাও আগাম ঘোষণা করে ছিলেন, সমর্থন তাঁরা মহাজোটের প্রার্থীকেই করবেন।

এখন প্রশ্ন, তাড়াহুড়ো করে বোর্ড দখল করতে গিয়ে রামজীবনপুরের ট্রাডিশন ভাঙার পাশাপাশি বিজেপি কি নিজেরাও হাতছাড়া করল না ওই পুরসভা?

রাহুল সিংহ অবশ্য দাবি করছেন, ‘‘প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে তৃণমূল বোর্ড দখল করেছে। এই জয় চিরস্থায়ী হতে পারে না।’’ তবে দলের একাংশ যে এ জন্য তাঁর দিকেই আঙুল তুলছেন, দলের রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকারের কথাতেই তা স্পষ্ট। তিনি বলছেন, ‘‘রামজীবনপুরে আমাদের একটু মেপে পা ফেললেই বোধ হয় ভাল হত। তা হলে হয়তো বোর্ডটা এ ভাবে হাতছাড়া হত না।’’

কিন্তু ওই তিন কাউন্সিলরের ক্রমান্বয়ে এই দলবদল কেন?

শিউলিদেবী বলছেন, ‘‘রামজীবনপুরের বিজেপি নেতা গোবিন্দ মুখোপাধ্যায় নিজেই মামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ ভাবে কি মানুষের জন্য কাজ করা যায়!’’ যা শুনে গোবিন্দবাবুর পাল্টা তোপ, ‘‘মানুষই এই বিশ্বাসঘাতকতার জবাব দেবেন।’’

রামজীবনপুরে গত দুটি পুর নির্বাচনে (২০০৫ এবং ২০১০) ঘুঁটি উল্টে বামেদের পুরনো ঘাঁটি, ঘাটালের ওই পুরসভা দখল করেছিল মহাজোট। যার নেতৃত্বে ছিল তৃণমূল।

অস্ত্র একই রেখে এ বার তাতে শান দিয়েছিল বামেরা। রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে তাদের নেতৃত্বেই মহাজোটে সামিল হয়েছিল কংগ্রেস এমনকী বিজেপিও। বিজেপির দুই জয়ী প্রার্থীর সমর্থন নিয়ে ১১ আসনের ওই পুরসভায় প্রাথমিক ভাবে ৬টি আসন দখলও করেছিল মহাজোটে। কিন্তু এরপরেই আসরে নামে বিজেপি।

তবে তড়িঘড়ি করে নির্দল প্রার্থীদের দলে টানতে গিয়ে বিপত্তি ঘটায় তারা। এ ব্যাপারে দলের রাজ্য সভাপতিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে দলেরই একাংশ। স্থানীয় এক নেতার কথায়, ‘‘তাড়াহুড়ো করে বোর্ড দখল করতে গিয়ে আমাদের আমও গেল, ছালাও গেল!’’

ramjibanpur trinamool tmc mamata bandopadhyay chief minister midnapore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy