E-Paper

দরজা ভেঙে উদ্ধার মা, দুই সন্তানের দেহ

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, প্রচুর ধারদেনা হওয়ার কারণে তিন জনেই কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। পুলিশ দেহ তিনটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২৫ ০৯:২৪
অনুমান করা হচ্ছে, কীটনাশক খেয়েছিলেন তিন জন।

অনুমান করা হচ্ছে, কীটনাশক খেয়েছিলেন তিন জন। —প্রতীকী চিত্র।

একটি বাড়ির বন্ধ থাকা ঘর থেকে উদ্ধার হল প্রৌঢ়া মা ও তাঁর দুই ছেলেমেয়ের দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাত ৮টা নাগাদ, হাওড়ার বাঁকড়ার দক্ষিণপাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মায়ের নাম শেফালি ঘড়ুই (৬৫), মেয়ের নাম সঙ্গীতা ঘড়ুই (৪৫) ও ছেলের নাম শুভময় ঘড়ুই (৪০)। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, প্রচুর ধারদেনা হওয়ার কারণে তিন জনেই কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। পুলিশ দেহ তিনটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে।

জানা গিয়েছে, সঙ্গীতা ছিলেন বিশেষ ভাবে সক্ষম। শুভময় পূর্ত দফতরের অস্থায়ী কর্মী ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা ১২টার পর থেকে ওই পরিবারের কাউকে আর বাইরে বেরোতে দেখা যায়নি। ঘরের দরজাও ছিল ভিতর থেকে বন্ধ। সন্ধ্যা হওয়ার পরেও ওই পরিবারের কারও কোনও সাড়াশব্দ না পাওয়ায় প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। তাঁরাই গিয়ে দরজা ধাক্কাধাক্কি করেন। কিন্তু তবুও কেউ খুলছেন না দেখে রাতেই তাঁরা পুলিশে খবর দেন। এর পরে বাঁকড়া থানার পুলিশ যায়। তারাও অনেক ডাকাডাকি করে। সাড়া না মেলায় দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখা যায়, প্রৌঢ়া শেফালি, শুভময় ও সঙ্গীতা অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। পুলিশ তিন জনকে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভময় অকৃতদার। তিনি বয়স্ক মা ও বিশেষ ভাবে সক্ষম দিদিকে নিয়ে বাঁকড়ার দক্ষিণপাড়ার ওই বাড়িতে বসবাস করতেন। এলাকার
বাসিন্দারা জানান, সম্প্রতি এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের সূত্রে শুভময় প্রচুর টাকা দেনা করে ওই মহিলাকে দিয়েছিলেন। দেনার টাকা ফেরত চেয়ে পাওনাদারেরা প্রায়ই তাঁদের বাড়িতে এসে চড়াও হতেন। এ সব কারণেই পরিবারটি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই ঘটনায় দক্ষিণপাড়ায় শোকের ছায়া নেমে আসে। রাতেই বহু মানুষ ভিড় করেন ওই বাড়িটির সামনে। বাসিন্দা প্রশান্ত বণিক বলেন, ‘‘একটি মেয়ের সঙ্গে শুভময়ের সম্পর্ক ছিল। ওই মেয়েটির জন্য প্রচুর টাকা খরচ করতে গিয়ে দেনার দায়ে জড়িয়ে পড়েছিল শুভময়। নিত্যদিন বাড়িতে পাওনাদারদের আনাগোনা চলছিল। সম্ভবত সেই কারণেই আজ এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের উচিত ওই মহিলাকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা।’’

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘অনুমান করা হচ্ছে, কীটনাশক খেয়েছিলেন তিন জন। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ঠিক কী কারণে তাঁরা একসঙ্গে আত্মঘাতী হলেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে তদন্ত করা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Suicide Case Suicide

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy