Advertisement
E-Paper

ভোট হস্তান্তর হয় কি? বিতর্ক বিধানসভায়

বাম-কংগ্রেস বিধায়কেরা অবশ্য দিল্লির সদ্য অনুষ্ঠিত বিধানসভা ভোটের উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছেন, ভোট হস্তান্তর বলে কিছু হয় না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:০১
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্কের সূত্রে বুধবার বাম-কংগ্রেস জোটকে আক্রমণ করল শাসক তৃণমূল। একই সঙ্গে তাদের অভিযোগ, লোকসভা ভোটে বামেরা বিজেপিকে ভোট ‘হস্তান্তর’ করায় গেরুয়া শিবির ১৮টি আসন জিততে পেরেছে। বাম-কংগ্রেস বিধায়কেরা অবশ্য দিল্লির সদ্য অনুষ্ঠিত বিধানসভা ভোটের উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছেন, ভোট হস্তান্তর বলে কিছু হয় না। মানুষ বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ দলকে বেছে নেন।

রাজ্য সরকারের ইমাম এবং মোয়াজ্জেম ভাতার ঘোষণা নিয়ে এ দিন বিধানসভায় প্রশ্ন তোলেন সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন। বস্তুত, বাম ও কংগ্রেসের মতে, ওই ভাতার ঘোষণার কোনও প্রয়োজন ছিল না। এমন ঘোষণা করে রাজ্য সরকার বিজেপি-কে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের সুযোগ করে দিয়েছে। আগেও বিধানসভায় এই অভিযোগে সরব হয়েছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক আলি ইমরান রামজ্ (ভিক্টর)। আমজাদ এ দিন ওই প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘‘বামফ্রন্টের আমলেও রাজ্যে মসজিদ ছিল। তখন ওই ভাতা দেওয়া হত না বলে কোনও অসুবিধা হয়নি। আসলে বামফ্রন্ট সরকার ছিল ধর্মনিরপেক্ষ। আপনারা সেই ঐতিহ্য নষ্ট করেছেন।’’ এর জবাবে তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত এবং সোনালি গুহ বলেন, রাজ্য সরকার ইমাম এবং মোয়াজ্জেম ভাতা দেয় না। ওই ভাতার টাকা আসে ওয়াকফ বোর্ড থেকে।

সোনালি যখন ওই কথা বলছিলেন, তখন ভিক্টর বলেন, রাজ্য সরকারই ওই ভাতা দেবে বলে ঘোষণা করেছিল। হাইকোর্ট তার বিরুদ্ধে রায় দেওয়ার পরে তা ওয়াকফ বোর্ড থেকে দেওয়া হচ্ছে। তখন সোনালি ক্ষুব্ধ হয়ে ভিক্টরকে বলেন, ‘‘এখন চুপ করে বসো। তোমার মা কেন জেলে আছে, সেটা বলো!’’ পরে সিপিএম বিধায়ক জাহানারা খানকেও বাচ্চা মেরে ফেলার অভিযোগে নিশানা করেন সোনালি। ‘তুই’ সম্বোধনও করেন তাঁকে। সে সময় সভা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ডেপুটি স্পিকার সুকুমার হাঁসদা অবশ্য কোনও কিছুই কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেননি। কংগ্রেসের মইনুল হক পরে প্রতিবাদ করে বলেন, শাসক দলের বিধায়ক যে ভিক্টরকে ভাষায় আক্রমণ করেছেন, তা ঠিক নয়।

আরও পড়ুন: পুরসভায় ‘বৈষম্য’ বন্ধ হোক, মন্ত্রীকে চিঠি অশোকের

তৃণমূলের কাজের ফলেই যে রাজ্যে বিজেপির সুবিধা হচ্ছে, বারবারই সেই অভিযোগ তুলেছেন বাম ও কংগ্রেস বিধায়কেরা। তৃণমূল বিধায়কদের আবার পাল্টা অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনে বামেদের ভোট রামে যাওয়াতেই বিজেপির ভোট এবং আসন বেড়েছে। সোনালির কথায়, ‘‘আমরা গট আপ করি? বামফ্রন্টের ভোট কেন বিজেপিতে গেল? আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে গিয়ে দেখেছি, কী ভাবে সিপিএম বিজেপিকে ভোট হস্তান্তর করেছে।’’ সাঁইবাড়ি-সহ নানা ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা এক কালে বামেদের হাতে কত নৃশংস ভাবে আহত এবং নিহত হয়েছেন, সেই বিবরণ দিয়ে শীলভদ্র, সোনালিরা বলেন— ইতিহাস ভুলে গিয়ে কংগ্রেস যে এখন বামেদের সঙ্গে জোট করেছে, তা বিস্ময়কর।

সিপিএমের মানস মুখোপাধ্যায়, কংগ্রেসের মইনুল হক পাল্টা যুক্তি দেন, তৃণমূলের হাতে ‘গণতন্ত্র হত্যা’ হয়েছে বলেই বিজেপিকে মানুষ বাধ্য হয়ে ভোট দিয়েছেন। মইনুলের কথায়, ‘‘দিল্লির মানুষ বুঝেছে, বিজেপিকে হারাতে হলে আপকে ভোট দিলে সুবিধা। তাই তাদের ভোট দিয়েছে। ভোট কেউ হস্তান্তর করে নাকি?’’ তাঁর যুক্তি, পঞ্চায়েতে মানুষকে ভোট দিতে দিলে বিরোধীরা একটা-দু’টো জেলা পরিষদ, কয়েকটা পঞ্চায়েত সমিতি জিতত। বাকি তৃণমূলই পেত। তা না করে ভোটে দাঁড়াতে বাধা, ভোট লুঠ, এমনকি, গণনাকেন্দ্রেও কারচুপি হল। তারই ফল তৃণমূল পেয়েছে লোকসভা ভোটে। মইনুলের হুঁশিয়ারি, ‘‘পুরভোটে আর ও’রকম করতে যাবেন না। তা হলে কিন্তু বিধানসভা ভোটে সাফ হয়ে যাবেন!’’

Voter TMC Left Front Congres
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy