Advertisement
E-Paper

তোলা না পেয়ে মার মেদিনীপুরে

ফের তোলাবাজির অভিযোগ উঠল শাসক দলের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। এ বার শহর মেদিনীপুরে।শুধু তোলা চাওয়া নয়, তোলা না পেয়ে এক যুবককে মারধরেরও অভিযোগ উঠেছে মেদিনীপুর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অণিমা সাহা ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৭
জখম সুদীপ ঘোড়ই।

জখম সুদীপ ঘোড়ই।

ফের তোলাবাজির অভিযোগ উঠল শাসক দলের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। এ বার শহর মেদিনীপুরে।

শুধু তোলা চাওয়া নয়, তোলা না পেয়ে এক যুবককে মারধরেরও অভিযোগ উঠেছে মেদিনীপুর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অণিমা সাহা ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। মারধরে জখম বছর তিরিশের সুদীপ ঘোড়ই মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। তাঁর মাথায় চোট রয়েছে।

তাঁর দ্বিতীয় ইনিংসের গোড়া থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে চলেছেন, সিন্ডিকেট, তোলাবাজি-সহ কোনও রকম দুর্নীতি বরদাস্ত করবেন না। নানা ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপও হচ্ছে। বিধাননগরের তৃণমূল কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় তোলাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার পর্যন্ত হয়েছেন। শুক্রবারও
কালীঘাটে দলের নীতি নির্ধারণ কমিটির বৈঠকে মমতার স্পষ্ট বার্তা ছিল— ‘মানুষের সমস্যা মেটানোই জনপ্রতিনিধিদের কাজ, ঔদ্ধত্য দেখানো নয়!’’ ওই বৈঠক থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরেরই নয়াগ্রাম ও সাঁকরাইলের ব্লক সভাপতিকে সরিয়ে দেন মমতা।

কিন্তু খোদ নেত্রীর বারবার হুঁশিয়ারিতেও যে দলের একাংশ নেতা-নেত্রীর আচরণে রাশ টানা যাচ্ছে না, মেদিনীপুরের ঘটনায় ফের তারই প্রমাণ মিলল।

কাউন্সিলর অণিমা সাহা।- নিজস্ব চিত্র

ঘটনাটি ঠিক কী?

মেদিনীপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ডে হবিবপুরের বেনাপুকুর পশ্চিমপাড়ায় থাকেন সুদীপ ঘোড়ই। তাঁর দাদা সুপ্রীতি ঘোড়ই মেদিনীপুর কলেজের শিক্ষাকর্মী। সুদীপদের বাড়ির পাশে তাঁদেরই কিছুটা ফাঁকা জমি রয়েছে। এই জমিতে সীমানা পাঁচিল দেওয়া নিয়েই অশান্তির সূত্রপাত। সুদীপের বক্তব্য, দিন কয়েক আগে স্থানীয় কাউন্সিলর অণিমাদেবীর কাছে গিয়ে তাঁরা জমিতে পাঁচিল দেওয়ার কথা জানান। অভিযোগ, তখনই অণিমাদেবী বলেন, পাঁচিল তোলার ক্ষেত্রে তাঁর আপত্তির কোনও জায়গা নেই। তবে কাজ শুরুর আগে তিনি ৭০ হাজার টাকা চান বলে সুদীপের অভিযোগ। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় ওই কাউন্সিলর ‘কাজ করতে না দেওয়ার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ সুদীপের।

সে সব অগ্রাহ্য করেই রবিবার সকালে পাঁচিল তৈরির তোড়জোড় শুরু করেন সুদীপরা। তবে বাড়ির সামনে ইমারতি সরঞ্জাম রাখার কিছুক্ষণের মধ্যেই অণিমাদেবী দলবল নিয়ে হাজির হয়ে যান। মেদিনীপুর মেডিক্যালের শয্যায় শুয়ে সুদীপ বলছিলেন, ‘‘কাউন্সিলর এসেই জানিয়ে দেন, পাঁচিল তোলা যাবে না। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি চলাকালীন আচমকাই কাউন্সিলর ও তাঁর অনুগামীরা আমাকে মারতে শুরু করেন। হাতের কাছে থাকা কোদালের বাঁট দিয়ে একজন আমার মাথায় মারে।’’ সুদীপকে বাঁচাতে এলে তাঁর মা নির্মলা ঘোড়ই এবং অন্তঃসত্ত্বা বৌদি অঞ্জলি ঘোড়ইকেও তৃণমূলের লোকজন মারধর করে বলে অভিযোগ। তাঁর দাদা সুপ্রীতি বলেন, ‘‘আমি বাড়িতেই ছিলাম। কিন্তু মারধর ঠেকাতে পারিনি। একজন কাউন্সিলরের কাছে এমন আচরণ আশা করা যায় না।’’

অণিমাদেবী অবশ্য সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, সুদীপদের প্রতিবেশীরা ওই সীমানা পাঁচিল নিয়ে আপত্তি করেছিলেন। এ দিন সকালে কাজ শুরু আগে অশান্তি হয়। সেই খবর পেয়েই তিনি ওই এলাকায় গিয়েছিলেন। তৃণমূল কাউন্সিলরের বক্তব্য, ‘‘কেউ কাউকে মারধর করেনি। পড়ে গিয়ে একজন মাথায় চোট পেয়েছেন। তাছাড়া, ওঁরাই (সুদীপরা) প্রশ্ন তোলেন কেন আমি গিয়েছি। আমাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়।’’ টাকা চাওয়ার অভিযোগও মিথ্যে বলে দাবি ওই কাউন্সিলরের।

অণিমাদেবীর দাবি যাই হোক না কেন, গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল। দলের একাংশ নেতা মানছেন, এক শ্রেণির নেতা ও জনপ্রতিনিধির আচরণে আখেরে দলের ক্ষতি হচ্ছে। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “মেদিনীপুরের ঘটনাটি ঠিক কী খোঁজ নিচ্ছি। দলের ক্ষতি হয় এমন কিছু বরদাস্ত করা হবে না।”

TMC Councillor extorting money arrested
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy