Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Lok Sabha Election 2024

বাংলায় এক দফায় ভোট চাইছে তৃণমূল, নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের কাছে আর কার কী দাবি

তৃণমূলের অভিযোগ, ছয়-সাত দফায় নির্বাচন করানো হলে তা হবে কেবল মোদী, শাহের মতো বিজেপি নেতাদের প্রচারে সুবিধা করে দেওয়ার জন্যই। প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে সাত দফায় ভোট হয়েছিল রাজ্যে।

কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৪ ১৪:২৭
Share: Save:

রাজ্যে এক দফায় লোকসভা ভোট করানোর দাবি তুলল শাসক তৃণমূল। সোমবার তৃণমূলের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল কলকাতায় রাজ্য সফররত নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে দেখা করে। প্রতিনিধিদলে ছিলেন লোকসভার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। তৃণমূল-সহ রাজ্যের মোট আটটি রাজনৈতিক দলের বৈঠক করে তাদের বক্তব্য শোনে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। নির্ভয়ে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে, তা সুনিশ্চিত করার দাবি জানায় বিজেপি। কংগ্রেসের তরফে গত পঞ্চায়েত ভোটে ‘হিংসার’ প্রসঙ্গ উত্থাপন করে ভোটে যথোপযুক্ত নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়। সিপিএমের তরফে কমিশনকে আর্জি জানানো হয়, রাজ্যের অভিযুক্ত প্রশাসনিক এবং পুলিশ আধিকারিকদের যেন ভোটের কাজে নিযুক্ত না করা হয়।

কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বেরিয়ে আসার পর রাজ্যে কেন এক দফায় লোকসভা ভোট হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ। তাঁর কথায়, “আমরা বলেছি, কেন পশ্চিমবঙ্গে এক দিনে ভোট হবে না? যদি বিজেপিশাসিত রাজ্যে এক দিনে ভোট হয়, তবে এ রাজ্যে নয় কেন?” তৃণমূলের অভিযোগ, ছয়-সাত দফায় নির্বাচন করানো হবে, কেবল নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের মতো বিজেপি নেতাদের প্রচারে সুবিধা করে দেওয়ার জন্য। প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে সাত দফায় ভোট হয়েছিল। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন হয়েছিল নয় দফায়। রাজ্যেও অতগুলি দফাতেই ভোট হয়। এক দফায় ভোট করানোর দাবির পাশাপাশি রাজ্যে একাধিক ভোটার কার্ড ‘নিষ্ক্রিয়’ হওয়া নিয়েও কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার কথা জানিয়েছে তৃণমূল।

কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়েও নিজেদের ক্ষোভের কথা তুলে ধরেছে তৃণমূল। কল্যাণ বলেন, “সিআইএসএফকে মানুষ ভয় পাচ্ছে। কারণ বিজেপি নেতারা যা বলছেন, তাই করছে সিআইএসএফ।” বিজেপি যাতে সিআইএসএফকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, কমিশনকে তা দেখার অনুরোধ জানিয়েছে তৃণমূল।

রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর বাইরে বেরিয়ে বলেন, “মানুষের মন থেকে ভয় দূর করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।” ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’র এবং সন্দেশখালির ঘটনার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া পাহারায় ভোট করানোর দাবি জানায় বিজেপি। এর পাশাপাশি পর্যবেক্ষকদের তত্ত্বাবধানেও রাজ্যে ভোট করানোর দাবি তুলেছে পদ্মশিবির। বিজেপির বক্তব্য, শান্তিপূর্ণ ভোট করাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে কমিশন।

রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সিপিএমের তরফে শমীক লাহিড়ী বলেন, “অবাধ এবং স্বচ্ছ ভোট করাতে হলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে সমস্ত আধিকারিক ভোট লুটে অভিযুক্ত, তাঁদের দায়িত্ব রাখা যাবে না।” রাজ্যের বেশ কয়েক জন জেলাশাসকের নামেও নালিশ ঠুকে আসার কথা জানিয়েছে সিপিএম। কংগ্রেসের তরফে আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়ও জানান, দলের তরফে তাঁরা অভিযুক্ত প্রশাসনিক আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এর পাশাপাশি তারা, কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া পাহারায় ভোটের দাবি জানিয়েছেন। ফরওয়ার্ড ব্লকের তরফে জানানো হয়, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য তারা কমিশনের হাতে তুলে দিয়েছে।

কমিশন সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, ফুল বেঞ্চের নেতৃত্বে থাকবেন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। এ ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার অরুণ গয়াল-সহ আরও ১৪ জন আধিকারিক থাকবেন ওই দলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC election comission ECI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE