Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কেশপুরের ‘আঁধার’ ঘোচাতে ‘দিদিকে বলো’য় টর্চ বিলি

রাজনৈতিক হানাহানির সূত্রে কেশপুরে বরাবরই ‘আঁধার’। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ‘আঁধার’ উন্নয়নেও।

টর্চ বিলি করছেন তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি। —নিজস্ব চিত্র

টর্চ বিলি করছেন তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি। —নিজস্ব চিত্র

বরুণ দে
কেশপুর শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:২৭
Share: Save:

‘দিদিকে বলো’র জনসংযোগে উদয়পুরে হাজির তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পান। এক মহিলার কাছে জানতে চাইলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের থেকে কী কী উপকার পেয়েছেন?’’ মহিলার সাফ জবাব, ‘‘কিচ্ছু পাইনি।’’ তা শুনে কেশপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শুভ্রা দে সেনগুপ্ত, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি নারায়ণ মণ্ডলেরা মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন। সঞ্জয় পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘কিচ্ছু পাননি? দু’টাকা কিলো চাল পাননি? যদি না পান আমি কান ধরে ওঠবোস করব!’’ এ বার মহিলা বললেন, ‘‘চালটুকুই যা পাই। বাড়ি পাইনি। পাকা রাস্তা হয়নি। জলের ব্যবস্থাও হয়নি।’’ তা শুনে সঞ্জয় বলেন, ‘‘তা হলে বলুন আরও কিছু পেলে ভাল হত। সব কি একসঙ্গে হয়। যা পাননি, ধীরে ধীরে তা-ও পাবেন।’’

আশ্বাস দিয়েই মহিলার হাতে নীল-সাদা টর্চ ধরিয়ে দেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। টর্চের গায়ে ‘দিদিকে বলো’র ফোন নম্বরের স্টিকার। সঞ্জয়ের পরামর্শ, ‘‘সমস্যা থাকলে ফোন করবেন।’’

রাজনৈতিক হানাহানির সূত্রে কেশপুরে বরাবরই ‘আঁধার’। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ‘আঁধার’ উন্নয়নেও। তা ছাড়া বিজেপির বাড়বাড়ন্তে কেশপুর তৃণমূলেও এখন ‘আঁধার’ ঘনাচ্ছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি। এই পরিস্থিতিতে রবিবার রাতে ‘দিদিকে বলো’ জনসংযোগে বেরিয়ে তৃণমূল ব্লক সভাপতির টর্চ বিলির খবরে শোরগোল পড়ে। বিরোধীরাও বিঁধছে। বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্যের খোঁচা, ‘‘তৃণমূলের আমলে কেশপুরে যে আঁধার নেমেছে, টর্চের আলোয় তা ঘুচবে না।’’

আরও পড়ুন: নার্সিং হস্টেলে ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ, উদ্ধার সইবিহীন ‘সুইসাইড নোট’ও

‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে এলাকায় এসে এর আগে পঞ্চায়েতের দুর্নীতি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ শুনতে হয়েছিল কেশপুরের তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহাকে। কর্মসূচি পালনে রবিবার রাতে সোলিডিহা-শ্যামচাঁদপুর অঞ্চলের উদয়পুর, দরখোলা প্রভৃতি এলাকায় গিয়ে ব্লক সভাপতি সঞ্জয়কেও নানা সমস্যা শুনতে হয়েছে। এক মহিলার অভাব-অভিযোগ জেনে সঞ্জয় বোঝানোর চেষ্টা করেন, ‘‘কিছু পাইনি কেন বলছেন? আপনার ছেলে সাইকেল পেয়েছে।’’ মহিলা পাল্টা বলেন, ‘‘এত অভাবের মধ্যেও ছেলেটাকে স্কুলে পড়াচ্ছি। দিদি তো সে জন্যই সাইকেল দিয়েছে। ’’ অনুন্নয়নের অভিযোগ মানেননি তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। তাঁর যুক্তি, ‘‘দলের পাঠানো ভিজিটিং কার্ডটা হারিয়ে যেতে পারে। টর্চের গায়ে স্টিকারে ফোন নম্বর রয়েছে। টর্চ তো সহজে হারাবে না। ’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Keshpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE