—ফাইল চিত্র।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি হাতে ও তাঁকে ঘিরে বাঙালি আবেগকে হাতিয়ার করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দিন বোলপুরে দাঁড়িয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন, সে দিনেই বাংলার আর এক প্রখ্যাত সন্তান নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নামে কমিটিতে একসঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হলেন তৃণমূল, বাম ও কংগ্রেস নেতারা। বিজেপির বিরোধিতায় তাঁদেরও সুর এ ক্ষেত্রে এক। নেতাজির মতো ব্যক্তিত্বের স্মরণে ‘সাম্প্রদায়িক শক্তি’কে কোনও জমি ছাড়তে চান না বলে তাঁরা জানাচ্ছেন।
নেতাজি সুভাষের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের জন্য মঙ্গলবার গঠিত হল যে বিশেষ কমিটি, সেখানেই একযোগে ঠাঁই পেয়েছেন শাসক তৃণমূল ও বিরোধী বাম এবং কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। নেতাজির নামে একটি নির্দিষ্ট স্মরণ-উদযাপনের জন্য এই কমিটি হলেও রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে এমন উদ্যোগ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ। রাজ্যে মমতা জমানাতেই নেতাজি জয়ন্তী পালন ঘিরে শাসক তৃণমূলের সঙ্গে বিরোধী বামের সংঘাত হয়েছে অতীতে। তার পরেও বিজেপিকে দূরে রেখে সেই নেতাজির নামেই এক ছাতার তলায় আসা আরও অর্থবহ মনে হচ্ছে কারও কারও কাছে।
মহাবোধি সোসাইটি হলে এ দিন নেতাজির ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সভায় ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী এবং নেতাজির প্রতিষ্ঠিত দল ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতারা। কৃষি আইনের প্রতিবাদে ধর্না-অবস্থানে থাকায় বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু অবশ্য সভায় যাননি। সেখানে গঠিত কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীতে পার্থবাবুর সঙ্গেই রয়েছেন বিমানবাবু, প্রদীপ ভট্টাচার্যেরা। কমিটির চেয়ারম্যান প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায়, আহ্বায়ক করা হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তকে। সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন মান্নান, সুজনবাবুরা। আছেন তৃণমূলের নেতা নির্বেদ রায়ও। আর কমিটির সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়, কার্যকরী সভাপতি প্রাক্তন সাংসদ বরুণ মুখোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর সুরেই পার্থবাবু অভিযোগ করেছেন, বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য না জেনেই বিজেপি দখলদারির মনোভাব নিয়ে চলছে। আর নরেনবাবু ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির রেখে নেতাজি আজাদ হিন্দ ফৌজ গড়েছিলেন, দেশ গড়তে যোজনা কমিশনের পরিকল্পনা করেছিলেন। এই সব পরম্পরাই যে বিজেপি ধ্বংস করছে, তাদের বাদ রেখেই তাঁরা চলতে চান।
এ বার ২৩ জানুয়ারি নেতাজির নামে মিছিলে পার্থবাবু, বিমানবাবুরা একসঙ্গে হাঁটেন কি না, নজর থাকবে সে দিকেই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy