Advertisement
E-Paper

‘রচনা তো আমার বোনের মতো’! সাংসদ-বিধায়ক দ্বন্দ্বে ইতি টানলেন ‘অনুতপ্ত’ অসিত, দায়ী করলেন বিজেপি-সিপিএমকে

সাংসদের সঙ্গে ‘দ্বন্দ্বে’ ইতি টানার ঘোষণা করলেন বিধায়ক। রবিবার অসিত বলেন, “রচনা তো আমার বোনের মতো।” আগামী দিনে সাংসদ এবং তিনি একসঙ্গে কাজ করবেন বলেও ‘প্রতিশ্রুতি’ দিয়েছেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৫ ১২:৫৮
(বাঁ দিকে) রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অসিত মজুমদার (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অসিত মজুমদার (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের এবং হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে চাপানউতরের জেরে সরগরম হয়ে উঠেছিল জেলার রাজনীতি। অবশেষে সাংসদের সঙ্গে ‘দ্বন্দ্বে’ ইতি টানার ঘোষণা করলেন বিধায়ক। রবিবার অসিত বলেন, “রচনা তো আমার বোনের মতো।” আগামী দিনে সাংসদ এব‌ং তিনি একসঙ্গে কাজ করবেন বলেও ‘প্রতিশ্রুতি’ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁদের দু’জনের মধ্যে ‘ভুল বোঝাবুঝি’র জন্য দায়ী করেছেন বিজেপি-সিপিএমকে।

সাংসদ তহবিলের টাকায় চুঁচুড়ার বাণীমন্দির স্কুলে স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরির কাজ চলছে। অভিযোগ, তা নিয়েই স্কুলে গিয়ে ঝামেলা করেছেন বিধায়ক অসিত। এমনকি, স্কুলের শিক্ষিকাদের গালিগালাজ করার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ওই স্কুল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রচনা। তাঁর কাছে বিধায়কের আচরণ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন শিক্ষিকারা। তার পরেই রচনা প্রকাশ্যে মুখ খোলেন দলের বিধায়কের বিরুদ্ধে।

রচনা বলেন, ‘‘আমার কাছে এটা আশ্চর্যজনক একটা ঘটনা। আমি বাক্‌রুদ্ধ। কিছু বলার ভাষা পাচ্ছি না। আমি অবাক হয়ে গেলাম এটা শুনে যে, তৃণমূল বিধায়ক এখানে এসে শিক্ষিকাদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন! কেন সাংসদ তহবিলের টাকায় এই স্মার্ট ক্লাসরুম দেওয়া হল, তা নিয়ে উনি চিৎকার চেঁচামেচি করেছেন। কাগজ দেখাতে বলেছেন। কে অনুমতি দিয়েছে, জানতে চেয়েছেন।’’ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে রচনা এ-ও বলেন যে, ‘‘আগামী দিনেও আমি স্মার্ট ক্লাসরুম করব। স্কুলের পাশে থাকব। মানুষের পাশে থাকব। কথা দিলাম। কার কত দম আছে আমাকে আটকে দেখাক।’’

রচনা প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দেওয়ার পর অসিত বলেছিলেন, ‘‘আমি এ বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাই না। আমার বিরুদ্ধে কারও কোনও অভিযোগ থাকলে থানায় লিখিত আকারে তা জমা দিক। দলের সাংসদের কথার উপরে কোনও কথা আমি বলব না। যা বলার দলকে বলব। সাংসদ যা খুশি বলুন, উনি আমার দলের। সংবাদমাধ্যমে ওঁকে নিয়ে কিছু বলব না। উনি যেটা বলতে পারেন, আমি পারি না। তবে আমি ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য। অভিভাবকদের, ছাত্রদের দেখার দায়িত্ব আমার। যা বলার শিক্ষিকাকে বলব।’’ তার পরের দিন সুর আরও চড়িয়ে অসিত জানিয়েছিলেন, রচনার আচরণ নিয়ে তিনি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর কাছে নালিশ জানিয়েছেন। সে দিন অবশ্য অসিত রচনা তাঁর ‘মেয়ের মতো’ বলে জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, “উনি আমার মেয়ের মতো। উনি কী করলেন, কী বললেন, তাতে কিছু আমার যায়-আসে না। ঈশ্বরের কাছে কামনা করি, উনি ভাল কাজ করুন।’’

সাংসদ-বিধায়কের বাগ্‌যুদ্ধে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল রাজ্যের শাসকদলকে। তৃণমূল সূত্রে খবর, বিধায়ককে এই বিষয়ে নতুন করে আর কিছু না-বলার নির্দেশ দেওয়া হয়। রবিবার শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন অসিত। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, “রচনাকে মমতাদি পাঠিয়েছেন। আমরা একসঙ্গে নির্বাচন লড়েছি।” তার পরেই তাঁদের মধ্যে ‘ভুল বোঝাবুঝির’ জন্য বিরোধী বিজেপি-সিপিএমকে দায়ী করেন অসিত। বলেন, “রচনার সঙ্গে আমি আগামী দিনে একসঙ্গে কাজ করব, এই প্রতিশ্রুতি দিলাম। এই ভুল বোঝাবুঝির পিছনে সিপিএম-বিজেপি নিশ্চয়ই আছে। যারা আমাদের মধ্যে ঢুকে আছে। যারা চায় আমার সঙ্গে ওর সম্পর্ক খারাপ হোক।” তাঁর সঙ্গে রচনার সম্পর্কের অবনতি হয়নি বলেও জানিয়েছেন অসিত। তবে একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “রচনা যদি আমার কথায় দুঃখ পেয়ে থাকে, তবে আমি দুঃখিত, অনুতপ্ত।”

Rachna Banerjee Asit Mazumder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy