Advertisement
E-Paper

গাইঘাটার পর ছেড়ে দেবেন হাবড়াও? বিধানসভা ভোটে আসন বদলের জল্পনা উস্কে দিচ্ছেন বালুর অনুগামীরাই

২০১১ সালে আসন পুনর্বিন্যাসে গাইঘাটা বিধানসভা তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হলে নতুন বিধানসভা কেন্দ্রের সন্ধানে হাবড়া এসে পৌঁছোন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। — ফাইল চিত্র।

অমিত রায়

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৫২
Share
Save

টানা ১৪ মাসের বন্দিদশা কেটেছে জানুয়ারি মাসে। রবিবার ১৫ মাস পরে নিজের বিধানসভা কেন্দ্র হাবড়ায় পা রেখেছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু। মুক্তির প্রায় দিন ২৫ পর নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে গিয়ে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সংবর্ধনায় ভেসে গিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী। হাবড়া বিধানসভা থেকে তিন বার বিধায়ক হয়েছেন বালু। স্বভাবতই তাঁর রবিবেলার প্রত্যাবর্তনে হাবড়া তৃণমূলের কর্মীমহল ধরে নিয়েছে যে, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনে বালুই আবার তাঁদের প্রার্থী হবেন। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের অন্দরমহলে খোঁজ নিলে ভিন্ন কথা শোনা যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, বর্ধমানের মন্তেশ্বরের আদি বাসিন্দা হলেও জ্যোতিপ্রিয়ের ছাত্রজীবন ও যৌবন কেটেছে কলকাতার রাজনীতিতেই। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই হাল ধরেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার রাজনীতির। সেই সুবাদে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বালুর কাছে চেনা তাঁর হাতের তালুর মতো। ফলস্বরূপ ২০০১ সালে গাইঘাটা বিধানসভা থেকে তাঁকে প্রার্থী করেন মমতা। ২০০১ সালের পরে ২০০৬ সালেও গাইঘাটা থেকে দ্বিতীয় বার তৃণমূলের প্রতীকে বিধায়ক হন জ্যোতিপ্রিয়। কিন্তু আসন পুনর্বিন্যাসে গাইঘাটা তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় নতুন বিধানসভা কেন্দ্রের সন্ধানে হাবড়ায় পৌঁছেছিলেন বালু।

২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে পালাবদলের নির্বাচনে ওই জেলার হাবড়া থেকেই বিধায়ক হয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভায় খাদ্য দফতরের দায়িত্ব পান তিনি। ২০১৬ সালে দ্বিতীয় বারও হাবড়া থেকেই জিতেছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে হাবড়া বিধানসভার ‘অপ্রত্যাশিত’ ফলাফলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন বালু। সে বার বারাসত লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার জিতলেও বালুর হাবড়া থেকে ১৯ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। অভিমান করে বালু ঘনিষ্ঠদের কাছে জানিয়েছিলেন, তিনি আর হাবড়া থেকে দাঁড়াবেন না। কিন্তু দলীয় নির্দেশে ২০২১ সালে আবার হাবড়া থেকেই প্রার্থী হতে হয়েছিল বালুকে। বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিংহকে হারিয়ে জিতেওছিলেন তিনি।

তবে বালুর কারাবাসের সময়ে গত লোকসভা নির্বাচনে আবার বিজেপি হাবড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ১৯,৯৩৩ ভোটে এগিয়ে গিয়েছে। সেই রাজনৈতিক পরিস্থিতির নিরিখে বালুকে ২০২৬ সালের ভোটে আর হাবড়া থেকে প্রার্থী না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেই খবর। তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘২০১৯ সালেও হাবড়া থেকে বিজেপি এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তখন বালুকে জেলে যেতে হয়নি। এ বার লোকসভা ভোটের সময় বালু জেলে ছিল। তখন এক দিকে যেমন ওর বিধানসভা থেকে দল প্রচুর ভোটে পিছিয়ে গিয়েছে, তেমনই দুর্নীতির অভিযোগে ওকে ১৪ মাস জেলে কাটাতে হয়েছে। এর পরে বালুর আর হাবড়ার মানুষের কাছে ভোট চাইতে যাওয়ার নৈতিক অধিকার আছে কি না, তা নিয়ে ওরই ভাবনাচিন্তা করা উচিত।” তবে এরই পাশাপাশি অন্য নেতারা বলছেন, রবিবার হাবড়ায় গিয়ে দলীয় স্তরে যে ‘সাড়া’ পেয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী, তাতে এখনও শঙ্কা বা উদ্বেগের কারণ নেই।

জেল থেকে জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বর্ষীয়ান নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে জ্যোতিপ্রিয়ের। সেখানে হাবড়া নিয়েও আলোচনা করেছেন তিনি। তৃণমূল সূত্রের খবর, কেন তাঁর হাবড়ায় আর দাঁড়ানো উচিত হবে না, সে বিষয়টি জ্যোতিপ্রিয়ের কাছে ব্যাখ্যা করেছেন কয়েক জন নেতা। যদিও সব কিছু শুনে প্রাক্তন মন্ত্রী কোনও জবাব দেননি বা মন্তব্যও করেননি। তবে যে নেতারা তাঁকে হাবড়া থেকে ভোটে না দাঁড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন, তাঁদের অনেকে বালুকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অন্য আসন থেকে ভোটে লড়ার কথাও বলেছেন। জেলা স্তরের এক নেতার কথায়, ‘‘উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূলের গোটা সংগঠন বালুদার হাতেই তৈরি। তাই তাঁর জন্য নতুন আসন খুঁজে পেতে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে জেলায় অনেক আসনে প্রার্থী বদল করার কথা ভাবছেন দলনেত্রী। ফলে আসন বদলে প্রার্থী হতেই পারেন বালুদা।’’

TMC MLA Jyotipriya Mallik TMC Election Politics West Bengal

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}