Advertisement
E-Paper

Nirmal Maji: মেডিক্যাল কাউন্সিল ভোটের প্রার্থিতালিকা প্রকাশিত, নাম নেই নির্মলের, জোর জল্পনা

হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিল নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি। প্রার্থিতালিকায় নাম নেই প্রাক্তন সভাপতি নির্মল মাজির।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২২ ২০:১১
তৃণমূলের বিধায়ক নির্মল মাজি।

তৃণমূলের বিধায়ক নির্মল মাজি। —ফাইল ছবি।

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের পর পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিল নির্বাচনের প্রার্থিতালিকা ঘোষণা হল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেখানে প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূলের বিধায়ক এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী নির্মল মাজির নাম নেই। অর্থাৎ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদের পর পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি পদও হাতছাড়া হতে চলেছে নির্মলের। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা চিকিৎসক শান্তনু সেনের নামও নেই ওই তালিকায়। এই তালিকা প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় নির্মলের সঙ্গে। তবে তিনি ফোন ধরেননি। জবাব দেননি হোয়াটস্‌অ্যাপেরও।

ওই তালিকায় নাম নেই তৃণমূলের আরেক চিকিৎসক-নেতা শান্তনু সেনেরও। ঘটনাচক্রে, গত বার মেডিক্যাল কাউন্সিলের নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোটে জিতেছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু। কিন্তু তাঁর নামও এ বারের প্রার্থিতালিকায় নেই। তবে নাম রয়েছে তৃণমূলের অপর চিকিৎসক-বিধায়ক সুদীপ্ত রায়ের। সেই বিষয়ে প্রশ্ন করায় বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে শান্তনু বলেন, ‘‘সুদীপ্ত রায় আমাদের দলের বিধায়ক। তিনি বর্ষীয়ান মানুষ। আমি তাঁকে সম্মান করি। শেষ নির্বাচনে আমি সর্বোচ্চ ভোটে বিজয়ী হয়েছিলাম। আজ (বৃহস্পতিবার) যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, সে সম্পর্কে আমি অবগত নই। ওই তালিকায় আলোচিতও নই। সরকারি ভাবে আমি কিছু জানি না।’’

ভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতেই ‘দুর্নীতিমুক্ত এবং স্বচ্ছ’ নির্বাচনের দাবি তুলেছেন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম’-এর প্রতিষ্ঠাতা কৌশিক চাকী। ঘটনাচক্রে, ওই ফোরাম প্রতিষ্ঠান-বিরোধী। প্রার্থিতালিকা সম্পর্কে কৌশিক বলেছেন, ‘‘গত বারের নির্বাচনে দুর্নীতি হয়েছিল। বার বার অভিযোগ জানিয়েছি। এ বার আমাদের অভিযোগ মান্যতা পেয়েছে। আমরা চাই দুর্নীতিমুক্ত নির্বাচন হোক। যাদের চিকিৎসক পরিচয়ই বড়, তাঁরাই এই পদের দাবিদার হয়ে এগিয়ে আসুন।’’ যা থেকে বোঝা যাচ্ছে, কৌশিক বলতে চেয়েছেন, নির্মল বা শান্তনুর ‘চিকিৎসক’ পরিচয়টি বড় নয়। তার চেয়ে তাঁদের ‘রাজনীতিক’ পরিচয়টিই বৃহত্তর। বস্তুত, সম্প্রতি একটি কর্মসূচিতে তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মা সারদা হিসেবে ‘পুনর্জন্ম’ নিয়েছেন বলে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি করেছিলেন নির্মল। তাঁ সেই বক্তব্য খণ্ডন করেছিল রামকৃষ্ণ মিশন। শাসক তৃণমূলও যথেষ্ট বিড়ম্বনায় পড়েছিল। তাদেরও আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্মলের বক্তব্য খণ্ডন করতে হয়েছিল। তার আগেও চিকিৎসাক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিসরে নির্মলকে নিয়ে বহুবিধ বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সেই সূত্রেই জল্পনা শুরু হয়েছে যে, তা হলে কি সেই সমস্ত বিতর্কের কারণেই মেডিক্যাল কাউন্সিলের নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকেই নির্মলকে সরিয়ে দেওয়া হল?

তবে সাংসদ শান্তনুকে নিয়ে এই ধরনের কোনও বিতর্ক তৈরি হয়নি। যদিও রাজ্যসভা থেকে তিনি একাধিক বার শাস্তি পেয়েছেন ‘অসংদীয়’ আচরণের জন্য। কিন্তু পাশাপাশিই তাঁকে তৃণমূলের মুখপাত্র হিসেবেও বহাল রাখা হয়েছে। যার অর্থ, তিনি দলের রাজনৈতিক লাইন জানেন এবং মুখপাত্র হিসেবে দল তাঁর উপর আস্থা রাখে। তা সত্ত্বেও কেন তাঁকে নির্বাচনের প্রার্থিতালিকায় রাখা হল না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।

বৃহস্পতিবার মেডিক্যাল কাউন্সিলের নির্বাচনের যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, আগামী ২ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ভোটারদের ‘ভোটিং পেপার’ পাঠানো হবে। ১৮ অক্টোবরের মধ্যে সেই ‘ভোটিং পেপার’ কাউন্সিলের দফতরে ফেরত পাঠাতে হবে। ১৯ অক্টোবর হবে ভোটগণনা। বৃহস্পতিবার ১৪ জনের প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, বিবিধ বিতর্কের পর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ থেকে নির্মলকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর বদলে ওই পদে বসানো হয়েছিল তৃণমূলের বিধায়ক তথা চিকিৎসক সুদীপ্ত রায়কে। তাঁর নাম প্রার্থিতালিকায় রয়েছে। সুদীপ্ত শ্রীরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক। পাশাপাশিই, তিনি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান এবং হেল্থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যানও।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুন কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়েছিল, তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিল ‘অবৈধ’। ওই সংগঠনের কাজকর্ম ‘বেআইনি ভাবে’ চলছে। কাউন্সিলের শীর্ষে তখন ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী নির্মল। চলতি বছরের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সেই কাউন্সিল ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। সেই নির্বাচনের প্রার্থিতালিকাই প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবার। যেখানে নাম নেই নির্মল-শান্তনুর।

West Bengal West Bengal Medical Council Nirmal Maji
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy