জাতীয় মহিলা কমিশনের সংস্কারের দাবিতে কেন্দ্রীয় শিক্ষা, মহিলা এবং শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানকে চিঠি দিলেন তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব। তাঁর বক্তব্য, জাতীয় মহিলা কমিশনের ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ প্রশ্নের মুখে। অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে তারা অতিসক্রিয়। মহিলাদের স্বার্থেই কমিশনের সংস্কার প্রয়োজন বলে চিঠিতে লিখেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা, মহিলা ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান দিগ্বিজয় সিংহকে চিঠি লিখে সুস্মিতা জানিয়েছেন, ১৯৯০ সালের জাতীয় মহিলা কমিশন আইনে এই কমিশন তৈরি করা হয়েছিল। মহিলাদের অধিকার রক্ষার উদ্দেশ্যেই এই প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ক্রমে এর পরিকাঠামো, স্বশাসন প্রশ্নের মুখে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সুস্মিতা চিঠিতে অভিযোগ করেছেন যে, গত কয়েক বছর ধরে জাতীয় মহিলা কমিশন ক্রমেই ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ হারাচ্ছে।
আরও পড়ুন:
চিঠিতে তৃণমূল সাংসদ জাতীয় মহিলা কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্য, যেখানে অ-বিজেপি সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, সেখানে ধর্ষণ হলে কমিশন অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। অথচ, অসমে সাত বছরের শিশুকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও কমিশনের সদস্যেরা উপস্থিত হন না। সুস্মিতা জানান, একই ভাবে মণিপুরে ধর্ষণ, মহিলাকে নগ্ন করে হাঁটানোর ঘটনার চার মাস পরে সেখানে উপস্থিত হয় কমিশন। সুস্মিতার অভিযোগ, কমিশনের স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে পদক্ষেপ করার ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু সেই ক্ষমতা কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থে ব্যবহার করা হয়। কুস্তিগিরেরা যখন বিজেপির সাংসদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ দিল্লির পথে বসেছিলেন, তখন স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি জাতীয় মহিলা কমিশন।
এর পরে বিজেপি শাসিত রাজ্যে মহিলা নির্যাতনের কথা চিঠিতে তুলে ধরেছেন সুস্মিত। তিনি লিখেছেন, সম্প্রতি হরিদ্বারে ১৩ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। গত মাসে অসমের তিনসুকিয়ায় সাত বছরের কন্যাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। বিহারে গণধর্ষিতার মাকে চিকিৎসা করার জন্য এক চিকিৎসককে গাছে বেঁধে মারধর করা হয়েছে। সুস্মিতা জানিয়েছেন, এখন এই কমিশন কেন্দ্রীয় মহিলা এবং শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের অধীনে। আর্থিক ভাবে তাদের উপরই নির্ভরশীল। সুস্মিতার মতে, কমিশনকে আইনি শক্তি এবং প্রাতিষ্ঠানিক সম্মান দেওয়া হোক। জাতীয় মহিলা কমিশনের পুনর্গঠন করা হলে তবেই মহিলাদের স্বার্থরক্ষা হবে বলে জানিয়েছেন সুস্মিতা।