সংসদে না গেলেও সরস্বতী বন্দনার ফাঁকেই টিভিতে চোখ রেখে বাজেটটা দেখে নিলেন তৃণমূলের সাংসদেরা!
নোট বাতিল এবং রোজভ্যালি-কাণ্ডে দলের দুই সাংসদকে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে এ বার কেন্দ্রীয় বাজেট বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার উপরে সরস্বতী পুজোর দিন বাজেট কেন, এ প্রশ্ন তুলে সকলকেই দিনভর বাগ্দেবীর বন্দনায় লিপ্ত থাকতে বলেছিলেন মমতা। সাংসদদের বলে দিয়েছিলেন, বাজেট শেষ হওয়ার পরে বুধবার রাতে দিল্লি পৌঁছতে। অনেকে আবার আজ, বৃহস্পতিবার বিকালে বা রাতের বিমানে দিল্লি পৌঁছবেন।
সেই নির্দেশ মেনেই এ দিন বাড়িতে অঞ্জলি দিয়ে ফল-প্রসাদ খেতে খেতেই তৃণমূলের বেশির ভাগ সাংসদ বসে পড়েছিলেন টিভির সামনে। কেউ কেউ বাড়ির পুজো সেরেই এলাকায় এলাকায় স্কুল-কলেজের নিমন্ত্রণ রাখতে গাড়িতেই ইন্টারনেটে চোখ বুলিয়ে বাজেটটা বুঝে নিয়েছেন।
এমনিতেই ফি বছর বাড়ির সরস্বতী পুজোর জোগাড় থেকে শুরু করে খাওয়া-দাওয়া নিয়ে দিনভর ব্যস্ত থাকেন তৃণমূলের বেশির ভাগ নেতা-নেত্রী। প্রতি বারের মতো এ বারও সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ তপসিয়ার তৃণমূল ভবনে গিয়ে সরস্বতী পুজো করেছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এ বার সরস্বতী পুজোয় কেন্দ্রীয় বাজেট থাকায় সকালের বেশ কিছুটা সময় টিভির সামনে থেকে উঠতে পারেননি বেশির ভাগ সাংসদই। হরিশ মুখার্জি রোডের নতুন বাড়িতে এ বারই প্রথম বার সরস্বতী পুজো করলেন মমতার সাংসদ-ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। চোখের সমস্যা পুরোপুরি না কাটায় বাইরে বেরোতে না পারলেও পুজোর পরে বাড়িতেই টিভিতে বাজেট দেখেছেন অভিষেক। লোকসভায় দলের সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বাড়ির পুজোর পরে বাজেট দেখে খিচুড়ি, ভাজা, চাটনি খেয়ে দিবানিদ্রায় মজেছিলেন!
বাড়ি, পাড়ার পুজোর পরেও নিজের কেন্দ্রের এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় দিনভর ছুটে বেড়িয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি ও সাংসদ সুব্রত বক্সী। রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের বাড়ির কাছেই তাঁর দফতরে এ বার রজত জয়ন্তী পেরোলো বাগ্দেবীর আরাধনা। সেখানেই টিভিতে বাজেট দেখেছেন ডেরেক। বরাবরের মতোই এ বারও বাড়ির পুজো নিজে করে বাজেটে চোখ রেখেছিলেন রাজ্যসভার সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়। বিকালে বিমান ধরার ব্যস্ততায় অনেকগুলো সান্ধ্য নিমন্ত্রণেই এ বার আর যেতে পারেননি। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘সরস্বতী পুজোর পরের দিন বাড়িতে গোটা সিদ্ধ হয়। সেটা দিল্লিতে তো পাব না এ বার!’’ বিকালেই দিল্লির বিমান ধরেছেন জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা নস্করও। বলছিলেন, ‘‘ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে সকাল সকাল সেরেই বেরিয়ে পড়েছিলাম জয়নগর, ক্যানিংয়ের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পুজোয় যাব বলে। গাড়িতে ইন্টারনেটেই বাজেটের অংশগুলো জেনেছি।’’
বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় বা মেদিনীপুরের সাংসদ সন্ধ্যা রায় মঙ্গলবারই দিল্লি পৌঁছে যান। দিল্লির বাড়িতেই বাজেট দেখে আর এক বন্ধুর বাড়িতে দুপুরের ভোজ সেরে দিনটা কাটান সৌগতবাবু। কাঁথি, তমলুকের অধিকারী পিতা-পুত্র সাংসদ বাড়ির পুজোতেও ছিলেন একসঙ্গে। বাজেটও দেখেছেন একসঙ্গে। সকালে পুজোর পরে বাড়িতে আসা নিমন্ত্রিতদের সঙ্গে কথাবার্তার ফাঁকে তেমন আর সময় পাননি হুগলির সাংসদ রত্না দে নাগ। তাই সরাসরি সম্প্রচার দেখতে না পারলেও সন্ধ্যার পরে টিভি, ইন্টারনেটে দেখে নিয়েছেন বাজেট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy