Advertisement
E-Paper

বারোর ধাক্কায় কম্পিত তৃণমূল

এক যাত্রায় পৃথক ফল যে হবে না, সেই আশঙ্কা দলে ছিলই। নারদ মামলায় মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক মিলিয়ে দলের ১২ জনের বিরুদ্ধে সিবিআই এফআইআর দায়ের করায় সোমবার আন্দোলিত হয়ে গেল তৃণমূল!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:২০

এক যাত্রায় পৃথক ফল যে হবে না, সেই আশঙ্কা দলে ছিলই। নারদ মামলায় মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক মিলিয়ে দলের ১২ জনের বিরুদ্ধে সিবিআই এফআইআর দায়ের করায় সোমবার আন্দোলিত হয়ে গেল তৃণমূল!

মমতা অবশ্য এ দিনও সাহসী মুখ দেখানোর চেষ্টা করেছেন। সেই সঙ্গে অভিযুক্তদের মনোবল বাড়াতে বলেছেন, ‘‘এফআইআর হয়েছে তো কী হয়েছে? চিন্তার কোনও কারণ নেই। এফআইআর হলেই কি প্রমাণ হয়ে গেল?’’ তাঁর এও বক্তব্য, ‘‘এটা রাজনৈতিক খেলা। আমরা রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করব।’’

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রোজ ভ্যালি কাণ্ডে জেল হেফাজতে থাকা সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে আজ মঙ্গলবার ভুবনেশ্বর যাচ্ছেন মমতা। অনেকের মতে, মমতার সফরের সময়ও কম অর্থবহ নয়। সোম-মঙ্গলবারের মধ্যে নারদ কাণ্ডে সিবিআই যে এফআইআর দায়ের করতে পারে এমন খবর প্রশাসনের কাছে ছিল। হতে পারে দুর্দিনে সুদীপের পাশে থেকে নারদ অভিযুক্তদেরও আশ্বস্ত করতে চাইছেন মমতা। কেন না, দলে এই উৎকণ্ঠাও রয়েছে— অভিযুক্তরা নিজের নিজের পিঠ বাঁচাতে গিয়ে দলের স্বার্থ না ভুলে যান!

প্রশ্ন হল, নেত্রীর এই বার্তায় কি আশ্বস্ত থাকতে পারছেন অভিযুক্তরা?

সূত্রের খবর, এফআইআর হওয়ার খবর পেয়েই মুষড়ে পড়েন অভিযুক্ত এক মন্ত্রী। তিনি সটান তৃণমূল ভবনে গিয়ে দলের এক শীর্ষ নেতার শরণাপন্ন হন। ওই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধেও অবশ্য সিবিআই এ দিন মামলা করেছে। আবার শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে ফোনে পরামর্শ চাইতে গিয়ে অভিযুক্তদের কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন। পাশাপাশি ঘরোয়া আলোচনায় অভিযুক্ত এক সাংসদ বলেন, নেত্রী রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করার কথা বলছেন ঠিকই। কিন্তু দলের রাজনৈতিক লাইন নিয়েই তো বিভ্রান্তি রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘সিবিআই সুদীপকে গ্রেফতার করার পরই নেত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সামনে ধর্না দিতে। কিন্তু পরে বিরোধিতার সুর হঠাৎ নামিয়ে দেয় দল। উল্টে সংসদে সরকারের সঙ্গে কার্যত সহযোগিতাই করা হয়। এর পরেও এফআইআর হওয়ার অর্থ, বিরোধিতা বা সমঝোতা— কেন্দ্রের সঙ্গে কোনও কৌশলেই বরফ গলল না।’’ তা ছাড়া মমতার এ দিনের প্রতিক্রিয়া আগের তুলনায় মৃদু ছিল বলেই দলের অনেকে মনে করছেন।

আরও পড়ুন:নারদের এফআইআরে কাঠগড়ায় এক ডজন নেতা-মন্ত্রী

বস্তুত দুর্নীতি মামলায় এক ধাক্কায় কোনও দলের ১২ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হওয়ার ঘটনা ভারতের রাজনীতিতে প্রায় নজিরবিহীন। বিশেষ করে তৃণমূলের এমন ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে যাঁরা সরকার ও সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। যেমন শোভন চট্টোপাধ্যায় কলকাতার মেয়র শুধু নন, দমকল-পরিবেশ ও আবাসন দফতরের মন্ত্রী। ফিরহাদ হাকিম পুরমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্য সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। মুকুল রায় ও সুলতান আহমেদ দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি। শুভেন্দু অধিকারী পর্যটন মন্ত্রী এবং দলের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য। যা নিয়ে কটাক্ষ করে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেছেন, ‘‘আমরা তো আগেই বলেছি, সিবিআই ঠিক মতো তদন্ত করলে মমতা-মন্ত্রিসভার অর্ধেকই জেলে চলে যাবে।’’ কৌতূহলের বিষয় হল, এখন মুখ্যমন্ত্রী কী করবেন? দলের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, শুধু এফআইআর ভিত্তিতে কাউকে পদ থেকে সরানোর প্রশ্ন নেই। কিন্তু কোনও মন্ত্রী গ্রেফতার হলে, সংকট দেখা দেবে।

Narada TMC CBI FIR Mathew Samuel Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy