Advertisement
E-Paper

হুমায়ুন কবীরকে শোকজ় করল তৃণমূল, কড়া হাতে দলীয় শৃঙ্খলারক্ষার প্রথম নজির, কী জবাব দিলেন?

হুয়ামুন কবীরকে শোকজ় করল তৃণমূল। দলীয় সূত্রে খবর, তিন দিনের মধ্যে তাঁকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। হুমায়ুন জানিয়েছেন, বুধবার বিধানসভায় এসে শোকজ়ের কথা তিনি জানতে পেরেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৪
হুমায়ুন কবীর।

হুমায়ুন কবীর। —ফাইল চিত্র।

হুয়ামুন কবীরকে শোকজ় করল তৃণমূল। শাসকদল সূত্রে খবর, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অমান্য করে দল নিয়ে প্রকাশ্যে বিতর্কিত মন্তব্য করায় ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুনকে শোকজ় করা হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে তাঁকে।

বুধবার বিধানসভায় এসেছেন হুমায়ুন। বিধায়ক জানিয়েছেন, তিনি বিধানসভায় এসেই শোকজ়ের কথা জানতে পেরেছেন। হুমায়ুন বলেন, ‘‘শুনেছি আমাকে শোকজ় করা হয়েছে। আমি হাতে কোনও চিঠি পাইনি। তবে আমার কথায় যদি দলের অস্বস্তি হয়, আমি তার জবাব দেব।’’

সোমবার কালীঘাটে মমতার বাড়িতে তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক ছিল। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে মমতা স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন, দলের নেতারা চাইলে যেখানে খুশি যেতে পারবেন। কিন্তু দল নিয়ে যা খুশি তা-ই বলতে পারবেন না। এই দলীয় শৃঙ্খলা না মানলে তাঁকে প্রথমে শোকজ় করা হবে। সংশ্লিষ্ট নেতাকে জবাব দিতে হবে। দলনেত্রীর ওই কড়া নির্দেশের পর দলীয় শৃঙ্খলারক্ষার প্রথম নজির তৈরি হল তৃণমূলে। তৃণমূল সূত্রেই খবর, মমতার নির্দেশ, পর পর তিন বার কোনও নেতা যদি একই ঘটনা ঘটান, তা হলে ওই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

ঘটনাচক্রে, নেত্রীর নির্দেশের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই দল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন হুমায়ুন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে কয়েক জন ঘিরে রয়েছেন, যে ক’জন নিজেদের পরিকল্পনার মধ্যে রেখেছেন, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কতটা ভাল চান, পশ্চিমবঙ্গের শাসক হিসাবে তাঁকে দীর্ঘমেয়াদে দেখতে চান কি না, তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, যাঁরা দলটাকে গুলিয়ে দিতে চাইছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজের জায়গা ঠিক রাখতে চাইছেন, কানে মন্ত্রণা দিচ্ছেন, ২০২৬ সালে তাঁরা জবাব পাবেন। আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেতা মানি। তৃণমূল যদি আগামী দিনে আমাকে টিকিট না দেয়, বেঁচে থাকলে অপকর্মের জবাব দেব।’’ তৃণমূল সূত্রে খবর, বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে হুমায়ুনের ওই মন্তব্যে বেজায় অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে দলীয় নেতৃত্বকে।

একদা অধীরের ভাবশিষ্য হুমায়ুন আগে কংগ্রেসে ছিলেন। ২০১১ সালে বিধায়ক হয়েছিলেন রেজিনগর থেকে। এর পর ২০১৩ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে প্রতিমন্ত্রী করেন মমতা। উপনির্বাচনে হেরে গেলে মুর্শিদাবাদের রাজনীতিতে তাঁর প্রভাব কমে। পরে ২০১৫ সালের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে দল থেকে বহিষ্কৃতও হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে রেজিনগরে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করে তৃণমূল প্রার্থী সিদ্দিকা বেগমকে তৃতীয় স্থানে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন হুমায়ুন। যদিও নিজে জিততে পারেননি। বিজেপিতেও যোগ দিয়েছিলেন তার পর। ২০১৯ সালে বহরমপুরে তাঁকে প্রার্থীও করেছিল পদ্মশিবির। ভোটে হারার পর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হয় হুমায়ুনের। এ বার নিজের পুরনো কেন্দ্র থেকে সরিয়ে তৃণমূল তাঁকে প্রার্থী করেছিল ভরতপুরে। জিতেওছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে হুমায়ুনের বেশ কয়েকটি বিতর্কিত মন্তব্য দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। গত লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুরে দল ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করায় ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেছিলেন হুমায়ুন। বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়েই তাঁর ‘বহিরাগত প্রার্থী’ মন্তব্য নিয়ে দলে বিস্তর আলোচনা হয়েছিল। যদিও পরে বিষয়টি মিটমাট হয়। ইউসুফের হয়ে প্রচারও করেছিলেন। ইউসুফও জিতেছেন ভোটে। কিন্তু হুমায়ুন নিজের জায়গাতেই রয়েছেন! ফের বিতর্কিত মন্তব্য করে শীর্ষ নেতৃত্বের রোষে তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy