Advertisement
E-Paper

ছাত্রদশা পার, তবু তাঁদেরই হাতে সংগঠন

কলেজে ভর্তিতে আর্থিক ‘জুলুম’ নিয়ে সরগরম হয়েছে রাজ্য। ভর্তি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারও হয়েছেন কয়েকজন টিএমসিপি নেতা। যদিও তাঁদের ‘প্রাক্তন’ বলে দাবি করেছেন টিএমসিপি’র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত।

সুপ্রিয় তরফদার ও প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৮ ০৪:৪২
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

তাঁরা ছাত্র নন, প্রৌঢ়। অথচ তাঁরাই ছাত্রনেতা! তাঁদের পরিচালনাতেই চলছে জেলার ছাত্র সংগঠন। আর এই সব ‘বয়স্ক’ ছাত্রনেতার ‘মদতে’ অনিয়ম বাড়ছে বলে অভিযোগ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) একাংশের। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ‘বয়স্ক’ ছাত্রনেতারা।

কলেজে ভর্তিতে আর্থিক ‘জুলুম’ নিয়ে সরগরম হয়েছে রাজ্য। ভর্তি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারও হয়েছেন কয়েকজন টিএমসিপি নেতা। যদিও তাঁদের ‘প্রাক্তন’ বলে দাবি করেছেন টিএমসিপি’র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত। সংগঠনের একাংশের বক্তব্য, দক্ষিণ কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং-সহ কয়েকটি জেলায় সভাপতির পদে রয়েছেন ‘বয়স্ক’রা। ছাত্র সংগঠনে ছাত্রদের থাকা বাঞ্ছনীয়। ‘বয়স্ক’ ছাত্রনেতাদের দিকে আর্থিক জুলুমের চক্রের দায় ঠেলছেন টিএমসিপির ওই অংশ।

বয়সের প্রসঙ্গে ‘বয়স্ক’ ছাত্রনেতারা বলছেন, ‘‘এটা দলের বিষয়। দল যে ভাবে কাজ করতে বলবে, সে ভাবে কাজ করব।’’ আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ অবশ্য একেবারে উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা। ওই সব ছাত্র নেতাদের দাবি, ‘‘আমাদের এখানে এ সব কোনও অভিযোগ নেই।’’ উল্লেখ্য, ছাত্র রাজনীতি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক বার জানিয়েছেন, পড়ুয়ারাই ছাত্র রাজনীতি করবে। উল্লেখ্য, লিংডো কমিশন স্নাতকস্তরে বয়সের ঊর্দ্ধসীমা ২২ বছর বেঁধে দেওয়ার সুপারিশ করেছিল। এ ক্ষেত্রে কোর্সের মেয়াদসীমা যদি চার-পাঁচ বছর হয়, তবে তা কিছুটা শিথিল করা যেতে পারে বলে জানিয়েছিল কমিশন। স্নাতকোত্তর স্তরে বয়সের ঊর্দ্ধসীমা ২৪-২৫ বছর এবং রিসার্চ-স্কলারের ক্ষেত্রে তা ২৮ বছর করার কথা বলেছিল তারা।

কয়েকটি জেলা তো বটেই, খাস দক্ষিণ কলকাতাতেই টিএমসিপির জেলা সভাপতির পদে রয়েছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তি। টিএমসিপি’র এক নেতা বলেন, ‘‘কোথাও খুঁজলে এমনও পাওয়া যাবে, সন্তানরা স্নাতক পাশ করলেও তাঁদের বাবা ছাত্রনেতা হিসেবেই রয়েছেন।’’ টিএমসিপির আর এক নেতার কথায়, ‘‘ছাত্রদের স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেন না। অথচ জেলার সর্বোচ্চ পদে বসে থাকেন। শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢোকার উদ্দেশ্যই হল ক্ষমতায় থেকে শুধুমাত্র অর্থের ভাগ নেওয়া।’’ ‘বয়স্ক’ ছাত্রনেতারা রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রীদের ‘ঘনিষ্ঠ’। সে কারণেই তাঁদের সরানো যায় না। এমনকি, তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করা যায় না বলে আক্ষেপ টিএমসিপি’র একাংশের। তাতেই দুর্নীতি বাড়ছে বলে দাবি ওই অংশের।

‘বয়স্ক’ ছাত্রনেতার প্রসঙ্গে টিএমসিপি’র সভানেত্রী জয়া দত্তের বক্তব্য, ‘‘কে কোন পদে থাকবেন, তা দলীয় নেতৃত্ব ঠিক করেন। নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত মেনে আমরা চলি।’’ তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘নতুন মুখ আসুক, আমরা চাই। ছাত্র দশা পেরিয়ে গিয়েছে, এমন কাউকে ছাত্র সংগঠনে রাখা হবে না, সেই নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী নিজেই দিয়েছেন। বেশি বয়সি ছাত্রনেতাদের পরিছন্ন ভাবমূর্তি থাকলে অন্যত্র পুনর্বাসন দেওয়া হবে।’’

College Admission Bribe Extortion State Government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy