Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

দক্ষিণে কে দ্বিতীয়, নজর উপনির্বাচনে

পরীক্ষা আজ, রবিবারই। কোনও মহলেই ‘ফার্স্ট বয়’কে নিয়ে বিশেষ সংশয় নেই। দ্বিতীয় স্থানে শেষ পর্যন্ত কে থাকবে, দক্ষিণ কাঁথির বিধানসভা উপনির্বাচনে কৌতূহলী সব নজর এখন সে দিকেই!তথ্য বলছে, ২০১১-র বিধানসভা, ২০১৪-র লোকসভা এবং গত বছরের বিধানসভা ভোটে দক্ষিণ কাঁথিতে দ্বিতীয় স্থান ধরে রেখেছে বামেরাই।

দক্ষিণ কাঁথি কেন্দ্রে আজ উপনির্বাচন।

দক্ষিণ কাঁথি কেন্দ্রে আজ উপনির্বাচন।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৫
Share: Save:

পরীক্ষা আজ, রবিবারই। কোনও মহলেই ‘ফার্স্ট বয়’কে নিয়ে বিশেষ সংশয় নেই। দ্বিতীয় স্থানে শেষ পর্যন্ত কে থাকবে, দক্ষিণ কাঁথির বিধানসভা উপনির্বাচনে কৌতূহলী সব নজর এখন সে দিকেই!

তথ্য বলছে, ২০১১-র বিধানসভা, ২০১৪-র লোকসভা এবং গত বছরের বিধানসভা ভোটে দক্ষিণ কাঁথিতে দ্বিতীয় স্থান ধরে রেখেছে বামেরাই। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের সাফল্যের পরে বঙ্গভূমিতে বিশেষ নজর সঙ্ঘ তথা বিজেপির। হাতের কাছে তাদের জন্য গা গরম করা উদাহরণ নন্দীগ্রাম। তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারীর বিপুল জয়ের মধ্যেও নন্দীগ্রামে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে গেরুয়া শিবির। এ বার দক্ষিণ কাঁথিতেও তারা চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না। কোনও ভাবে তৃণমূলের পরের জায়গাটা দখল করতে পারলে দক্ষিণবঙ্গেও বিরোধী রাজনীতির পরিসরে বিজেপি জাঁকিয়ে বসতে পারবে।

পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে, ২০১১ সালে দক্ষিণ কাঁথিতে বিজেপি প্রার্থী যেখানে মাত্র ৫ হাজার ৪টি ভোট (৩.২৯%) পেয়েছিলেন, ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে সেটাই বেড়ে হয়েছিল ২২ হাজার ৬২। দু’বছর পরে ২০১৬-র বিধানসভায় অবশ্য সেই ভোট কমে দাঁড়িয়েছিল ১৫ হাজার ২২৩ (৮.৭৬%)। পুরনো প্রার্থী কমলেশ মিশ্রের বদলে সৌরীন্দ্রমোহন জানাকে এ বার প্রার্থী করেছে বিজেপি। তাদের হয়ে লোকলস্কর নিয়ে প্রচারে নেমেছেন এককালের দাপুটে সিপিএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠ। বামফ্রন্টের শরিক সিপিআই অবশ্য উত্তম প্রধানকেই প্রার্থী রেখে দিয়েছে। আর তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। যাঁকে এক লক্ষ ভোটে জেতানোর লক্ষ্য নিয়ে ঘাঁটি গেড়ে আছেন শুভেন্দু!

বাম শিবিরে আশঙ্কা, কেন্দ্রীয় শাসক দলের অর্থবল নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। সেই সঙ্গেই যোগ হয়েছে লক্ষ্মণের প্রতিপত্তি। রাজ্যে মেরুকরণের স্বার্থে তৃণমূলই পিছন থেকে লক্ষ্মণদের মদত দিয়ে বিজেপি-কে দ্বিতীয় স্থানে তুলে দিতে পারে। কোনও চালচুলো ছাড়াই বিজেপির নন্দীগ্রামে দ্বিতীয় হওয়ার নেপথ্যেও একই রহস্য ছিল বলে দাবি বাম নেতাদের। তাঁদের আশঙ্কা, দক্ষিণ কাঁথিতেও একই ঘটনা ঘটলে রাজ্য রাজনীতিতে জোড়া ফুল-পদ্মফুল মেরুকরণ আরও প্রকট হয়ে বিপদে পড়বে অন্যেরা।

পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেবের কথায়, ‘‘ভোট সুষ্ঠু ভাবে হতে দিলে এক রকম হবে। কিন্তু তমলুকের মতো প্রহসন করলে অন্য কথা! তৃণমূলের তো ফার্স্ট-সেকেন্ড, দু’টো পজিশনই চাই!’’ আবার দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহদের দাবি, ‘‘কারও দয়ায় নয়, স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতেই বিজেপির ভোট বাড়বে।’’

মন্ত্রী শুভেন্দু অবশ্য বলছেন, ‘‘দিব্যেন্দু (অধিকারী) তমলুকে পাঁচ লাখে জিতেছিল। এখানেই বা এক লাখ কেন হবে না? দ্বিতীয় কে হবে, সেটা সিপিএম-বিজেপি ঠিক করবে!’’ তবে তৃণমূলেরই একটি সূত্রের মতে, ভোট-প্রস্তুতিতে বিজেপি এগিয়ে গেলেও পরে বামেরা কিছুটা ‘মেক-আপ’ করেছে। এই অবস্থায় খাল কেটে কুমির ডাকার কী দরকার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Assembly by-election Contai south
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE