মদন মিত্রের সঙ্গে দেখা করার পর শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
শেষমেশ ভয়কে জয় করার মন্ত্রেই ভরসা। চাপা টেনশন আছে ঠিকই। কিন্তু মোটের ওপর মদন মিত্রের মেজাজ অনেকটাই ভাল। খাওয়াদাওয়ায় রুচি ফিরেছে। সারা দিনের নির্ঘণ্ট ও হাবেভাবে ছন্দে ফেরারই ইঙ্গিত। সব ঠিকঠাক থাকলে আজ, বুধবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হতে পারে বলে পরিবহণমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি।
মদনও তা-ই চান। এসএসকেএমের চিকিৎসকরাও চান মদনকে ছুটি দিতে। ঘনিষ্ঠ মহলে মন্ত্রী নাকি বলেছেন, আজ তিনিই মেডিক্যাল বোর্ডের কাছে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানাবেন। কিন্তু কোনও পক্ষই যে একশো শতাংশ প্রত্যয়ী হতে পারছেন না, তার কারণ এক জনই ‘ম্যাডাম’! মদন-প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শেষ অবস্থান বা সঙ্কেত কী হবে, তা-ই অনিশ্চিত। মঙ্গলবার রাজ্যের এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, “ম্যাডাম হঠাৎ কী বলেন, এটা মাথায় রেখে শেষ মুহূর্তে একটা পাল্টা রাস্তা খুলে রাখার আমরা পক্ষপাতী।”
মাথা খাটিয়ে সেই পাল্টা রাস্তার খোঁজও শুরু হয়ে গিয়েছে। এমন কোনও রাস্তা যাতে মদনকে দরকারে হাসপাতালে আটকে রাখতে সমস্যা না হয়। যেমন, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের এক চিকিৎসক এ দিনই মদনকে দেখেটেখে বলেছেন, মন্ত্রীর দু’সপ্তাহ ‘বেডসাইড ফিজিওথেরাপি’ দরকার। বিশেষজ্ঞদের পরিচর্যার পরেই তাঁকে সুস্থ বলা যাবে। এ ছাড়া মদনের ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ বা ঘুমের মধ্যে দম আটকে যাওয়া নিয়ে একটি রিপোর্টও পাওয়া বাকি। সামান্য শ্বাসকষ্টও রয়েছে তাঁর। বুধবার মনোবিদ প্রদীপ সাহার মদনকে দেখার কথা। বসবে মেডিক্যাল বোর্ডও। তার পরেই মন্ত্রীকে ছাড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।
মদন দিনভর খোশমেজাজেই ছিলেন। ক’দিনের অবসাদ অনেকটাই উধাও। তৃপ্তির সঙ্গেই ভাত খান তিনি। ফোন করে অনেকের সঙ্গে খোশগল্প করেছেন। দফতরের কাজ নিয়েও কিছু জরুরি আলোচনা সেরেছেন। মদনের সঙ্গে দেখা করতে এসএসকেএম গিয়েছিলেন বিধানসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। উডবার্নের ২১ নম্বর কেবিনে গিয়ে আধ ঘণ্টারও বেশি পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে গল্পগুজব করেন শোভনদেববাবু। বেরোনোর সময়ে তিনি বলেন, “মদন আমার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী। ওঁর শরীর ভাল নেই। তাই দেখতে এসেছিলাম।” তবে শোভনদেববাবু এ-ও জানান, ‘খুব দ্রুত’ মদনের উন্নতি হয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ডের এক সদস্যও বললেন, “মদনবাবুকে অনেকটাই স্বাভাবিক দেখিয়েছে।”
মোট কথা, হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে ‘ফিট সার্টিফিকেট’ হাতে নিয়ে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে তৈরি পরিবহণমন্ত্রী। বাকিটা ‘তাঁর’ ইচ্ছা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy