অসমের কোকরাঝাড়ে অবরোধের জেরে নিউ কোচবিহার স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছে ট্রেন।—নিজস্ব চিত্র
অসমের কোকরাঝাড়ে টানা পাঁচ ঘণ্টা অবরোধের জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল উত্তরবঙ্গের ট্রেন পরিষেবা। সোমবার ভোর ছ’টা থেকে অসমের প্রায় ১৩টি আদিবাসী সম্প্রদায়কে তফশিলি উপজাতিভুক্ত করার দাবিতে অবরোধ শুরু হয় কোকরাঝাড়ে। আদিবাসীদের যৌথ মঞ্চ ন্যাশনাল কনভেনশন কমিটির অবরোধে বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয় দূরপাল্লার ট্রেনগুলি। চূড়ান্ত নাকাল হন যাত্রীরা।
অসমগামী প্রতিটি ট্রেন প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা দেরিতে চলাচল করছে। তেমনিই, অসম থেকে আসা বিভিন্ন ট্রেনও দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা দেরিতে চলছে। এ দিন আপ দার্জিলিং মেল দু’ঘণ্টা, পদাতিক তিন ঘণ্টা এবং কামরূপ এক্সপ্রেস প্রায় তিন ঘণ্টা দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছায়। সকাল থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা এনজেপিতে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল, জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেসকে। অমৃতসর এক্সপ্রেসও দেড় ঘণ্টার বেশি এনজেপিতে দাঁড়িয়ে ছিল। সকাল ১১টা নাগাদ অবরোধ ওঠার পর বেলা ১২টার পর থেকে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় বলে জানিয়েছেন উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার (এনজেপি) পার্থসারথি শীল।
এ দিনের অবরোধের জেরে নিউ কোচবিহার স্টেশনে পাঁচ ঘণ্টার বেশি দাঁড়িয়ে ছিল উখা এক্সপ্রেস ও দাদর এক্সপ্রেস। দুর্ভোগের মুখোমুখি হয়ে যাত্রীদের অনেকেই অভিযোগ করেন, কুয়াশার জন্য ট্রেন এমনিতেই দেরিতে চলছিল। অবরোধের জেরে সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে। অজয় সিংহ নামে এক যাত্রী বলেন, “এ দিন সকালে ট্রেনটি গুয়াহাটি পৌঁছনোর কথা ছিল। সেখানে প্রায় দুপুর পর্যন্ত আটকে থাকতে হল।”
আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের বিভিন্ন ষ্টেশনেও দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয় পাঁচটি দূরপাল্লা ট্রেনকে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিআরএম সঞ্জীব কিশোর জানান, এ দিন ভোর প্রায় ছ’টা থেকে অসমের কোকরাঝাড় স্টেশনে রেল লাইনের উপর বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। পরে পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকেরা পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেন।
অবরোধ চলাকালীন ডাউন গুয়াহাটি-দিল্লী রাজধানী এক্সপ্রেস এবং ডাউন গুয়াহাটি-ব্যাঙ্গালোর এক্সপ্রেস সহ একাধিক দুরপাল্লার ট্রেন আটকে পরে অসমের বিভিন্ন ষ্টেশনে। এদের মধ্যে ডাউন গুয়াহাটি-দিল্লী রাজধানী এক্সপ্রেসকে নিউ বঙ্গাইগাঁও ষ্টেশনে এবং ডাউন গুয়াহাটি-ব্যাঙ্গালোর এক্সপ্রেসকে বঙ্গাইগাঁও স্টেশনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। ডাউন গুয়াহাটি-দিল্লী রাজধানী এক্সপ্রেস সহ মোট ৫টি দূরপাল্লার ট্রেন আটকে পরে বিভিন্ন রেল ষ্টেশনে। ডাউন গুয়াহাটি-দিল্লী রাজধানী এক্সপ্রেসকে বঙ্গাইগাঁও ষ্টেশনে, ডাউন-গুয়াহাটি-বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেসকে বঙ্গাইগাঁও ষ্টেশনে, ডাউন কামরূপ এক্সপ্রেসকে বরপেটা ষ্টেশনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এছাড়া নিউআলিপুর–লামডিং ইন্টারসিটি, ধুবুরি-কামাখ্যা ইন্টারসিটি,এবং নিউ আলিপুর-কামাখ্যা ইন্টারসিটিকে বাতিল করা হয়।
পাঁচ ঘণ্টা পরে অবরোধ উঠলেও দিনভরই নাকাল হতে হয় ট্রেনযাত্রীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy