ভিন্ রাজ্য থেকে ঘুরপথে বাণিজ্যিক গাড়ির শংসাপত্র আদায়ের ঘটনা নিয়ে অভিযোগ জানাতে কেন্দ্রের সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের দ্বারস্থ হল রাজ্য।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের একটি প্রতিনিধিদল দিল্লি গিয়ে সরাসরি এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকে অভিযোগ জানিয়েছে। তারা উপযুক্ত প্রমাণ-সহ বিষয়টি নজরে আনার পরে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকও নড়েচড়ে বসেছে বলে খবর। এই বিষয়ে যে সব রাজ্যের স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, সেই সব রাজ্যের সরকারকে সরাসরি চিঠি পাঠিয়ে ওই সব সংস্থার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতেও নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রক। বিহার, রাজস্থান, গুজরাত-সহ একাধিক রাজ্যের বিভিন্ন সংস্থা ওই তালিকায় রয়েছে। মন্ত্রকের পক্ষ থেকে অভিযোগ খতিয়ে দেখে গাড়ির শংসাপত্র দেওয়ার পদ্ধতিতে গরমিল থাকার কথাও মেনে নেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য, বারাসত আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের অধিকর্তা বিপ্লব প্রধান বলেন, ‘‘সমস্যার গভীরতা কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের নজরে আনা হয়েছে। গরমিলের জায়গাটা তাঁদের কাছেও ধরা পড়েছে। আশা করছি, মন্ত্রক উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।’’
রাজ্যের বাইরে যাওয়ার অনুমতি (পারমিট) না থাকা সত্ত্বেও বাণিজ্যিক পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত অসংখ্য গাড়ি ভিন্ রাজ্য থেকে গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে আনছে বলে আগেই অভিযোগ পেয়েছিলেন পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। এ নিয়ে খোঁজখবর করতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, বহু ক্ষেত্রেই গাড়ির উপযুক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই তাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। শুধু ছবি পাঠিয়েও বহু ক্ষেত্রে ভিন্ রাজ্য থেকে স্বাস্থ্য শংসাপত্র মিলেছে। এ নিয়ে সম্প্রতি রাজ্য পরিবহণ দফতর কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা জানায়। বিভিন্ন আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের ওই সব গাড়ির তালিকা তৈরি করে, গাড়িমালিকদের নোটিস পাঠিয়ে ডেকে পাঠানোর কথাও জানানো হয়। প্রয়োজনে গাড়ির স্বাস্থ্য শংসাপত্র বাতিলের কথাও বলা হয়। ওই নির্দেশের পরে এখনও পর্যন্ত প্রায় ছ’হাজার গাড়ির হদিস মিলেছে। সংখ্যাটা বেড়ে ১৫ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিহার, রাজস্থান-সহ বিভিন্ন রাজ্যের স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে নেওয়া গাড়ির স্বাস্থ্য শংসাপত্রে কারচুপির ঘটনা এর পরেই কেন্দ্রের নজরে আনতে তৎপর হয় রাজ্য।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জরিমানা ও কর ফাঁকি দেওয়া ছাড়াও বহু ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি ওই ব্যবস্থার ফাঁক গলে শংসাপত্র পেয়েছে বলে অভিযোগ। ফলে রাজ্যের আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে। ওই সব গাড়ি ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রাংশ নিয়েই বিভিন্ন পরিষেবায় যথেচ্ছ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তবে রাজ্য পরিবহণ দফতরের এই তৎপরতায় ওই সব গাড়ি ফের পরীক্ষার আওতায় আসবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)