সাংবাদিক বৈঠকে পার্থ
অতিমারির কারণে বিগত দু’বছর একুশে জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশ ভার্চুয়াল মাধ্যমে হয়েছিল। এই বছর প্রথা মেনে ওই সমাবেশ হবে ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনেই। শুক্রবার প্রস্তুতি বৈঠকের পর এমনটাই জানালেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, সারা দেশ এখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে তাকিয়ে। তা নজরে রেখে এ বারের সমাবেশ আরও বড় করে আয়োজন করার কথা ভাবা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে তৃণমূলের নয়া ভবনে প্রস্তুতি বৈঠকে বসেছিলেন অভিষেক, পার্থ, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী-সহ শীর্ষ নেতারা। দলের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা, জেলা তৃণমূলের সভাপতি, সাংসদ, বাছাই করা বিধায়কদের ডাকা হয়েছিল ওই বৈঠকে। বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলন করে পার্থ বলেন, ‘‘কোভিডের কারণে গত দু’বছর ধরে জনসভা করতে যায়নি। কিন্তু এই বছর আবার আগের মতো শহীদ তর্পণ ও জনসভা করা হবে। এ বারের সভায় অন্যান্য রাজ্য থেকেও তৃণমূল প্রতিনিধিরা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত থাকবেন। ঐতিহাসিক জনসমাগম এবারের ২১ জুলাইয়ে।’’ পার্থ আরও বলেন, ‘‘সারা দেশ তাকিয়ে আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। আজকের (শুক্রবার) পর থেকে বুথ স্তরে ‘ধর্মতলা চলো’ প্রচার চলবে।’’
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই নিয়ে দু’দিন আগেই দিল্লির কনস্টিটিউশন ভবনে বৈঠকে বসেছিলেন ১৭টি বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা। ওই বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন স্বয়ং মমতা। রাজনীতির কারবারিদের একাংশের বক্তব্য, বিরোধীরা রাষ্ট্রপতি পদের জন্য এক জন প্রার্থী বাছলেও তাঁর হার নিশ্চিত। তা জেনেও মমতার ডাকে সাড়া দিয়ে সিপিএম, কংগ্রেস-সহ বাকি বিরোধী দলের ওই বৈঠকে হাজির হওয়া যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ।
আগের দু’বছর, অর্থাৎ ২০২০ ও ২০২১ সালে কালীঘাটের বাসভবন থেকে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বক্তৃতা করেছিলেন মমতা। যা সম্প্রচার করা হয়েছিল দলের নেটমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলিতে। প্রতিটি ব্লকে নেতাদের মমতার বক্তৃতা শোনানোর আয়োজন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া দিল্লি, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলিতেও নেতাদের পাঠিয়ে সমাবেশের সম্প্রচারের ব্যবস্থা করেছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তৃণমূল সূত্রের দাবি, গত বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে সাম্প্রতিক সময় ঘটে যাওয়া নানা ঘটনায় দলের কর্মীদের মনোবলে চি়ড় ধরেছে। তাঁদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতেই একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ আবার ধর্মতলায় করার কথা ভাবা হয়েছে।
শাসকদলের অন্য একটি অংশের আবার দাবি, ২০২৪ সালেই দেশে লোকসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে ত্রিপুরা-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনও রয়েছে। একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ রাজপথে ফিরিয়ে আনার বড় কারণ জাতীয় স্তরে তৃণমূলের শক্তি তুলে ধরা। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের মন্তব্যেও তার ইঙ্গিত মিলেছে। কুণাল বলেছেন, ‘‘একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ তৃণমূল কর্মীদের কাছে আবেগ। ওই মঞ্চ থেকেই ২৪-এর লড়াইয়ের ডাক দেওয়া হবে।’’ এখন দেখার, ওই মঞ্চ থেকে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে কী বার্তা দেন দলনেত্রী মমতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy