Advertisement
E-Paper

‘আক্রান্ত’ ল্যাব, বিপাকে মানুষই

ডেঙ্গির ‘পজিটিভ’ রিপোর্ট দেওয়ার আগে ল্যাবকর্তারা যেন ভাল ভাবে ‘চিন্তাভাবনা’ করেন, সেই হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।

সোমা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৪৮

মধ্য কলকাতার এক ল্যাবরেটরি থেকে পর পর ডেঙ্গির পজিটিভ রিপোর্ট আসছিল। অভিযোগ, পুরসভার দল গিয়ে সংরক্ষিত ‘পজিটিভ’ নমুনাগুলি তুলে আনে। পুরসভার ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার পরে জানানো হয়, বেশ কিছু রিপোর্টই ‘নেগেটিভ’ এসেছে। ডেঙ্গির ‘পজিটিভ’ রিপোর্ট দেওয়ার আগে ল্যাবকর্তারা যেন ভাল ভাবে ‘চিন্তাভাবনা’ করেন, সেই হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। বউবাজারের ওই ল্যাবের কর্ণধারের কথায়, ‘‘পুরসভা চায় না, ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ুক। কিন্তু এ ভাবে রিপোর্ট গোপন করে তো সেটা করা সম্ভব নয়।’’

ডেঙ্গির ‘ভুল’ রিপোর্ট নিয়ে বৃহস্পতিবারই বেসরকারি ল্যাবগুলির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানিয়েছেন, এই ধরনের ল্যাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। শুক্রবার ন্যাশনাল অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড ফর টেস্টিং অ্যান্ড ক্যালিব্রেশন ল্যাবরেটরিজ (এনএবিএল)-এর স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ল্যাবগুলির কর্তাদের পাল্টা প্রশ্ন, কী ভাবে স্থির হল যে পুরসভার রিপোর্টই শেষ কথা বলবে? পুরসভার ল্যাবের পরিকাঠামো নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। শহরের একাধিক নামী ল্যাবরেটরির কর্তার বক্তব্য, অলিগলিতে গজিয়ে ওঠা ল্যাবরেটরির রিপোর্টে হয়তো কিছু সমস্যা থাকতে পারে, কিন্তু এ ভাবে মুড়ি-মিছরির এক দর করে দেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত? তাঁদের বক্তব্য, ডেঙ্গির র‌্যাপিড টেস্ট নিয়ে সরকারের আপত্তি রয়েছে। এনএবিএল-স্বীকৃত প্রায় কোনও ল্যাবই র‌্যাপিড টেস্ট করে না। এলাইজা পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়। তা হলে পরীক্ষার যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মানুষকে কেন বিভ্রান্ত করা হচ্ছে? ক্যালকাটা অ্যাসোসিয়েশন অব প্র্যাকটিসিং প্যাথোলজিস্টস-এর সভাপতি তপন কুমার ঘোষ বলেন, ‘‘ফের এমন অভিযোগ উঠলে সরকারকে চিঠি দেওয়া হবে।’’

এক শীর্ষ স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে সব জ্বরের রোগীর রক্ত পরীক্ষা হচ্ছে না। ল্যাবগুলির উপর চাপ দিয়ে সাধারণ মানুষকেই বিপদে ফেলা হচ্ছে।’’ পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মনিরুল ইসলাম মোল্লার সঙ্গে বহু চেষ্টা সত্ত্বেও যোগাযোগ করা যায়নি।

প্রবীণ প্যাথোলজিস্ট সুবীর দত্ত বলেন, ‘‘ব্যাঙের ছাতার মতো ল্যাবরেটরি গজিয়ে উঠছে। তা হলে সেগুলিকে কী ভাবে লাইসেন্স দেওয়া হয়? কী ভাবেই বা সেখানে নজরদারি হয়?’’ দক্ষিণ কলকাতার এক ল্যাবের কর্তা পিনাকপাণি ভট্টচার্যের কথায়, ‘‘রিপোর্টের মান নিয়ে যাতে কোনও প্রশ্ন না ওঠে, সেটা নিশ্চিত করা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার নেই।’’

বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘‘ল্যাবগুলিকে ধমকানো হচ্ছে, তারা যাতে ডেঙ্গির রিপোর্ট না করে। এটা কোন ধরনের রোগ মোকাবিলা!’’

Dengue Blood Test Laboratory Positive Report ডেঙ্গি Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy