পরীক্ষার্থীদের চাপে এ ভাবেই উপচে পড়ে ভিড়। রবিবার, বেলঘরিয়া স্টেশনে। —নিজস্ব চিত্র।
এমনিতেই রবিবার বলে ট্রেন কম। তার উপরে যদি হাজার হাজার চাকরির পরীক্ষার্থীর ভিড় হয়, তবে কী অবস্থা হবে ট্রেনের সাধারণ যাত্রীদের?
শিয়ালদহ মেন লাইন-সহ অন্যান্য শাখায় এমন ঘটনাই ঘটেছে এ দিন। এমনিতেই রবিবার ছুটির দিন বলে প্রায় চল্লিশ শতাংশ ট্রেন বাতিল করে রাখেন শিয়ালদহ রেল কর্তৃপক্ষ। তার উপরে সকাল থেকে ক্রমেই ট্রেনের লেট বাড়তে থাকে। তার উপরে এই দিন ফুড কর্পোরেশনের চাকরির পরীক্ষা থাকায় হাজার হাজার পরীক্ষার্থীর ভিড় হয়েছিল স্টেশনগুলিতে। আর এতেই চুড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
দুপুরের দিকে রোজকার মতোই মেন লাইনের ট্রেনগুলি দেরিতে চলায় প্রচণ্ড ভিড় ছিল এ দিন। দুপুর একটা নাগাদ নৈহাটি লোকাল ব্যারাকপুরে ঢোকা মাত্রই তাতে পরীক্ষার্থীদের ভিড় আছড়ে পড়ে। যদিও পিঠে বড় বড় ব্যাগ নিয়ে ওই পরীক্ষার্থীদের বেশির ভাগই ট্রেনে উঠতেই পারেননি। শুধু ব্যারাকপুর নয়, খড়দহ, সোদপুর, আগরপাড়া, বেলঘরিয়া— প্রতিটি স্টেশনেই ছিল থিকেথিকে ভিড়। ট্রেন ধরতে প্ল্যাটর্ফমে তো বটেই, লাইনের দু’পাশেও নেমে দাঁড়িয়ে ছিলেন পরীক্ষার্থীরা।
পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের জন্য নজরদারের (ওয়াচম্যান) পদে নিয়োগের জন্য এই দিন ফুড কর্পোরেশন দফতর পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিল। ৮৪টি খালি পদের পরীক্ষায় ৭ লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থী ছিলেন। তার মধ্যে একটি বিরাট অংশের আসন পড়েছিল উত্তর ২৪ পরগনা, নদীয়া ও হুগলির স্কুল কলেজগুলিতে। ফলে সকালে যাওয়া এবং দুপুরে ফেরার সময় ওই ভিড়ই এ দিন প্রায় জন-সুনামি তৈরি করে ট্রেনগুলিতে।
যাত্রীরা বলছেন, ট্রেন বাতিল না থাকলে এবং ঠিক সময়ে ট্রেন চললে, এই ভিড়েও তেমন দুর্ভোগে পড়তে হত না। যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা শুনে রেল কতৃর্পক্ষ অবশ্য ফুড কর্পোরেশনের উপরেই দায় চাপিয়ে দিয়েছেন। পূর্ব রেলের মু্খ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্যের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় রেলই ট্রেনের ব্যবস্থা করেই থাকে। কিন্তু ফুড কর্পোরেশন রেলকে পরীক্ষার কথা জানায়নি। ওই খবর জানা থাকলে একটা ব্যবস্থা নেওয়া হত।’’ ফুড কর্পোরেশনের পক্ষে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রেলকে পরীক্ষার বিষয়ে জানানোর কথা। কিন্তু কেন তা হয়নি, খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
যাত্রীরা অবশ্য বলছেন, শিয়ালদহ ডিভিশনে যে হারে যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে তাতে রবিবারেও সব ট্রেন চালালে ভাল হয়। তার মধ্যে এত বেশি ট্রেন বাতিল করা হচ্ছে যে প্রতি রবিবারেই চুড়ান্ত দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। এক ক্ষুব্ধ যাত্রীর কথায়, ‘‘ডিভিশনের কর্তারা এক রবিবার লোকাল ট্রেনে চড়ুন। তখনই বুঝতে পারবেন যাত্রীদের অসুবিধা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy