কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সক্রিয়তা বাড়ানোর আর্জি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দরবারে গিয়ে সংগঠন পোক্ত করার নির্দেশ শুনে ফিরতে হল বাংলার বিজেপি সাংসদদের।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ জানাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাক্ষাতের সময় চেয়েছিলেন বাংলার বিজেপি সাংসদরা। ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় সেই সময় নির্দিষ্ট হয়। কিন্তু ওই দিন বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নয়া ভবনের উদ্বোধন থাকায় প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন সাংসদরা।
সূত্রের খবর, বৈঠকে মূলত দু’টি বিষয় নিয়ে সরব হন বাংলার সাংসদেরা। প্রথমত, তাঁরা জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন সম্ভব নয়। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেই যে ফলাফল তাঁদের পক্ষে যাবে এমন নিশ্চয়তা তাঁরা শাহকে দিতে পারেননি। বরং তাঁদের যুক্তি, অন্তত নির্বাচনের আগে কর্মীদের মনোবল তৈরি করা যাবে। এর সঙ্গেই তাঁরা বাংলায় দুর্নীতিতে বড় মাথাদের গ্রেফতারে ইডি-সিবিআই যাতে আরও সক্রিয় হয়, সেই বিষয়টি শাহের কানে তোলেন। জবাবে শাহ জানান, কেউ বসে নেই। সবটা পদ্ধতি মেনেই হচ্ছে। যা হবে দেখতেই পাবেন। কিন্তু আপনাদের সংগঠনের কী অবস্থা? বুথের অবস্থা কী? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে সংগঠনকে পোক্ত করতে হবে। না-হলে তৃণমূল দুর্নীতির দায় অভিযুক্ত হলেও আপনারা ফায়দা তুলতে পারবেন না। অন্যেরা সুবিধা পাবে।
সূত্রের খবর, বাংলার সাংসদরা শাহকে জানান, প্রশাসনিক অসহোযগিতার কারণে তাঁরা নিজের এলাকায় উন্নয়নের কাজ করতে পারছেন না। তাঁদের বক্তব্য, চা বাগান এবং জঙ্গলমহলের অবস্থা খারাপ। রাজ্য সরকার কিছুই করেনি। তাই জনজাতি-উপজাতিদের মধ্যে ক্ষোভ আছে। কেন্দ্রীয় সরকার যদি বাড়তি উদ্যোগী হয়, তাহলে আমরা সেই সুবিধা পাব। এ ছাড়া উন্নয়নের কাজে রাজ্য সরকার সাহায্য করছে না। সাংসদ তহবিলের টাকা খরচ করতে হলে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। শাহ বিষয়টি নির্দিষ্ট জায়গায় জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
এ ছাড়া আলোচনায় সিএএ প্রসঙ্গ এসেছে বলেও সূত্রের দাবি। মতুয়া অধ্যুষিত দুই লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদরা জানান, সিএএ নিয়ে বাংলার মানুষের মধ্যে আবেগ আছে। সেই আবেগ নির্বাচনে বিজেপির পক্ষে থেকেছে। এখন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিএএ চালু করা প্রয়োজন। না-হলে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই আবেগ ধরে রাখা কঠিন হবে। শাহ জানান, কথাটা তাঁদের মাথায় আছে। পদ্ধতি চলছে। আশা করা যায় দ্রুত কোনও একটা সমাধানের রাস্তা বেরোবে।
বৈঠক প্রসঙ্গে রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী বলেন, “বৈঠকে আমাদের নেতা আমাদের কিছু বার্তা দিয়েছেন। আমি সেই নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কিছু বলব না।” যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে আমাদের যা আলোচনা হয়েছে, সব বাইরে বলতে পারব না। তবে উনি কথা দিয়েছেন, সবাই ভেতরে যাবেন। কেউ বাইরে থাকবেন না।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)