নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
পি এম কিসান বনাম কৃষকবন্ধু—ধারে ভারে কে বেশি, দড়ি টানাটানি চলছে গত লোকসভা ভোটের আগে থেকেই। কেন্দ্রের দাবি, তাদের প্রকল্পই সেরা, অন্য দিকে রাজ্য নিজেদের প্রকল্পকেই এগিয়ে রেখেছে।
বস্তুত, কয়েক মাস আগে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাস্তবায়নের অধিকার রাজ্যের হাতেই রয়েছে। তারা তা করতেও চায়। ফলে প্রকল্প বাবদ বরাদ্দ অর্থ রাজ্যের ট্রেজ়ারিতে কেন্দ্র পাঠালে রাজ্যই তা উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেবে। যদিও তার উত্তর পায়নি রাজ্য। আবার কয়েক দিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্য সফরে এসে ফের এই দ্বন্দ্ব উস্কে দিয়েছিলেন। তার পরেই প্রকল্প বাস্তবায়নে একই শর্ত দিয়ে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীকে দ্বিতীয় বারের জন্য চিঠি পাঠিয়েছিল রাজ্য।
রাজ্যে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের ঘোষণা হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর। রামপুরহাটের সরকারি পরিষেবাপ্রদান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্পের আওতায় থাকা উপভোক্তাদের চেক বিলি শুরু করেন ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। কেন্দ্রের পি এম কিসানের ঘোষণা হয় ওই বছরের বাজেটে, ফেব্রুয়ারি-মার্চ নাগাদ। সেই সূত্রে সাফল্যের দৌড়ে কেন্দ্রের থেকে নিজেদের এগিয়ে রাখছে রাজ্য।
কৃষি-কর্তাদের বক্তব্য, ২ হেক্টর জমিপিছু বছরে ছ’হাজার টাকা করে সুবিধা পাওয়া যায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পে। ফলে পি এম কিসানে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সে জায়গায় রাজ্যের প্রকল্পে কৃষকরা একরপিছু বছরে পাঁচ হাজার টাকা পাচ্ছেন। এমনকি, জমির পরিমাণ কম থাকলেও সুবিধা পাওয়া যায়। প্রতি কাঠা জমিপিছু বছরে ন্যূনতম দু’হাজার টাকা পাওয়ার সুবিধা রয়েছে রাজ্যের প্রকল্পে। উপরন্তু, কৃষকের অকালমৃত্যুতে পরিবার ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়ে থাকেন এই প্রকল্পে। এই মুহূর্তে ৫২ লক্ষ কৃষক কৃষকবন্ধুর সুবিধা পাচ্ছেন। আগামী দিনে ৭৩ লক্ষ কৃষকই এই সুবিধা পেতে পারবেন।
রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারের দাবি, “নথিবদ্ধ ভাগচাষিদেরও এই সুবিধা দেওয়া হয়। নিখরচায় জমির কাগজের হস্তান্তরের ব্যবস্থা হয়েছে। মিউটেশন পদ্ধতির সরলীকরণ এবং সেলফ ডিক্লারেশনের সুবিধা কার্যকর হলে পরিধি আরও বাড়বে। আমাদের রাজ্যে ছোট এবং ভাগচাষিদের সংখ্যা অনেক বেশি। যাঁদের জমির পরিমাণ নেহাতই অল্প। ফলে রাজ্যের প্রকল্পেই বিপুল সংখ্যক মানুষের সুবিধা হবে। এই সুবিধা কেন্দ্রের প্রকল্পে কোথায়?”
রাজ্যের দাবি, চলতি দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে চলা শিবিরগুলিতে কৃষকবন্ধু প্রকল্প চেয়ে ১ লক্ষ ৯০ হাজার আবেদন পেয়েছে রাজ্য। তার মধ্যে ১ লক্ষ ৫৩ হাজার আবেদন মঞ্জুর করেছে সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy