আক্রান্ত: প্রহৃত দুই জুনিয়র ডাক্তার। —নিজস্ব চিত্র
কীটনাশক পান করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তরুণী। পরিবারের দাবি ছিল, তাঁকে আইসিইউয়ে (ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট) ভর্তি করাতে হবে। ডাক্তারেরা প্রয়োজন নেই জানাতেই শুরু কথা কাটাকাটি। দুই জুনিয়র ডাক্তারকে মারধরের অভিযোগ ওঠে ওই রোগীর পরিজনেদের বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রাধারানি ওয়ার্ডের ঘটনা। ঘটনার পরেই প্রহৃত চিকিৎসক মিঠুন সরকার ও ভিভো মণীশ বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ মেমারির করন্দা গ্রামের গোপাল গোস্বামী এবং অমিত চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে।
হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা বলেন, ‘‘ধৈর্যচ্যুতি ঘটালে চিকিৎসা-পরিষেবা দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে।’’ রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘নিরাপত্তার ব্যাপারে পুলিশ, প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।’’
ধৃত গোপাল গোস্বামীর অভিযোগ, “ভর্তির পর থেকে মেয়েটাকে ফেলে রেখে দিয়েছিল। স্যালাইন পাল্টে দেয়নি। বলতে গেলে ডাক্তারদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। নিরাপত্তারক্ষীরা আমাদেরই মারে।’’ এর পরেই ‘রিস্ক বন্ড’ দিয়ে মেয়েটিকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান পরিজনেরা।
ওই ওয়ার্ডের অন্য রোগীদের একটা বড় অংশের দাবি, ‘‘ওই তরুণীর আত্মীয়েরা প্রথম থেকেই আইসিইউয়ে ভর্তির জন্য চিৎকার করছিলেন। ডাক্তারেরা ‘এখানেই চিকিৎসা হবে’ বলায় বচসা হয়। তার পরেই দু’জন ডাক্তারদের উপরে চড়াও হয়।’’ একই দাবি প্রহৃত ডাক্তারদেরও।
৬ জুন রাধারানি ওয়ার্ডেই কীটনাশক খেয়ে ভর্তি হওয়া বাবুরবাগের দম্পতির চিকিৎসায় গাফিলতির নালিশে জুনিয়র ডাক্তারদের মারধর করা হয়। রুখতে গিয়ে মার খান নিরাপত্তারক্ষীরা, পুলিশ। ১১ জুন অস্থি ওয়ার্ডের এক রোগীর পরিজনদের সরতে বলায় এক প্রবীণ চিকিৎসককে মারধর করা হয়। তাঁকে বাঁচাতে প্রহৃত হন চার চিকিৎসক। ডেপুটি সুপারের দাবি, ‘‘হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যা নেই, কিন্তু চিকিৎসার ব্যাপারে রোগীদের পরিজনের সহযোগিতা চাই।’’ বারবার এমন ঘটনায় যদি ডাক্তারদের একাংশ নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন? সরাসরি জবাব না দিয়ে স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার মন্তব্য, ‘‘সমাজ বদলাতে সমাজের লোকজনকেই এগিয়ে আসতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy