Advertisement
E-Paper

দুই কিডনি-গ্রহীতার মৃত্যু, প্রশ্নে পরিকাঠামো

কিডনি-গ্রহীতার মৃত্যু হয়েছে দিন তিনেক আগেই। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পরে গ্রহীতাদের মৃত্যু প্রশ্ন তুলছে, প্রতিস্থাপন-পরবর্তী পরিকাঠামোর উন্নতি নিয়ে কবে সক্রিয় হবে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রশাসন?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৮
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ‘ব্রেন ডেথ’-এর পরে বছর তেরোর কিশোরীর কিডনি ‘গ্রিন করিডর’ করে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল কলকাতায়। এসএসকেএম হাসপাতালে তার দু’টি কিডনিই প্রতিস্থাপন হয়েছিল দু’জনের দেহে। কিন্তু প্রতিস্থাপনের ১০ দিনের মধ্যে মারা গেলেন এক কিডনি-গ্রহীতা। অন্য কিডনি-গ্রহীতার মৃত্যু হয়েছে দিন তিনেক আগেই। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পরে গ্রহীতাদের মৃত্যু প্রশ্ন তুলছে, প্রতিস্থাপন-পরবর্তী পরিকাঠামোর উন্নতি নিয়ে কবে সক্রিয় হবে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রশাসন?

সোমবার সকালে এসএসকেএমে মারা যান মিঠুন দালাল (২৩)। ১৭ নভেম্বর দুর্গাপুর কিশোরী মধুস্মিতা বায়েনের একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয় রানাঘাটের এই যুবকের দেহে। ২৩ নভেম্বর, মৃত্যু হয় মধুস্মিতার অন্য কিডনি-গ্রহীতা অভিষেক মিশ্রের। বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, অস্ত্রোপচার-পরবর্তী পরিকাঠামো উন্নত না-করলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না।

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, এ বছর বেশ কয়েক বার অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক সেই সাফল্য মুখ থুবড়ে পড়েছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই। অস্ত্রোপচারের পরে জটিলতা বেড়েছে। গ্রহীতার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে রোগী মারা গিয়েছেন। তাতেই প্রতিস্থাপন-পরবর্তী চিকিৎসা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

এসএসকেএম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিস্থাপনের পরে মিঠুনের শারীরিক জটিলতা বেড়ে গিয়েছিল। মূত্রত্যাগের পরিমাণ নিয়েও চিন্তিত ছিলেন চিকিৎসকেরা। কারণ, যে-পরিমাণ মূত্র ত্যাগ করা প্রয়োজন ছিল, তার থেকে মিঠুনের পরিমাণ অনেকটাই কম ছিল। তাই ডায়লিসিসও চালানো হচ্ছিল। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয়নি। এ দিন সকালে হৃদ্‌যন্ত্র বিকল হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। মিঠুনের আত্মীয় সুজিত চন্দ বলেন, ‘‘অস্ত্রোপচারের পরেও কিছু সমস্যার কথা জানান চিকিৎসকেরা। রবিবার রাতেও ডায়লিসিস হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।’’ মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিঠুনের কিডনির সমস্যার কথা জানা যায়। তার পরেই প্রতিস্থাপনের জন্য পরিবারের তরফে আবেদন করা হয়। কিডনি পাওয়ার পরেও ছেলেকে যে বাঁচানো গেল না, তার জন্য আক্ষেপ রয়েছে মিঠুনের বাবা সুখেন্দু দালালের। তবে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, প্রতিস্থাপনের পরে অঙ্গ কাজ না-করার ঝুঁকি থাকে সব সময়েই। ওই পরিবার সেটা জানত।

মধুস্মিতা চিকিৎসায় সাড়া না-দেওয়ায় পরিবারের সম্মতি নিয়ে তার ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করে স্বাস্থ্য ভবন। তার পরেই তার কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, রাজ্যে অঙ্গদানে সচেতনতা বাড়ছে। এ নিয়ে সরকারি তৎপরতাও আছে। কিন্তু প্রতিস্থাপন-পরবর্তী চিকিৎসায় সাফল্য পাওয়া জরুরি। গ্রহীতা স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেই সচেতনতা এবং আগ্রহ আরও বাড়বে। পরপর গ্রহীতার মৃত্যুর ঘটনা অঙ্গদান নিয়ে সচেতনতা এবং প্রবণতার বাধা হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।

Kidney SSKM Death এসএসকেএম কিডনি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy