এক মাস পেরিয়ে গিয়েছিল ২৫০ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখতেই। শেষ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের লাতুর থেকে কেপমারির একটি বড় চক্রের দুই চাঁইকে ধরে আনল বাগুইআটি থানার পুলিশ। বিধাননগর কমিশনারেট জানিয়েছে, কর্নাটকের বিদরে ওই চক্রের এতটাই দাপট যে, পুলিশ সেখানে কাউকে ধরতে গেলে অন্তত ২০০ জনের বাহিনী নিয়ে যায়। না হলে ধৃতকে ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া হবে। লাতুর থেকে যে দু’জনকে পুলিশ ধরেছে, তাদের নাম তাকি ইউসুফ আলি এবং হাসনি নাসের হোসেন। তারা আদতে ইরানের বাসিন্দা। তবে চক্রটি ‘বিদর গ্যাং’ বলে পরিচিত।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা পুলিশের আধিকারিক সেজে রাস্তায় বাইক নিয়ে দু’জন দাঁড়িয়ে থাকত। তারা মূলত নিশানা করত একটু বেশি বয়সি, গয়না পরে থাকা লোকজনকে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘অভিযুক্তেরা নিজেদের পুলিশ দাবি করে লোকজনকে বলত, সামনে ডাকাতি হয়েছে। গয়না খুলে রাখতে বলে একটি প্যাকেট দিত। ভয় পেয়ে অনেকেই তাতে গয়না খুলে রাখতেন। হাতের কারসাজিতে বদলে দেওয়া হত প্যাকেট। কেউ বুঝে ওঠার আগেই উধাও হয়ে যেত অভিযুক্তেরা।’’
কমিশনারেট জানাচ্ছে, সাঙ্গোপাঙ্গেরা কিছু দূরে গাড়িতে অপেক্ষা করত। অভিযুক্তেরা জামা পাল্টে গাড়িতে চেপে বসত। অন্য দিকে, গাড়ি থেকে নেমে এক জন বাইকটি নিয়ে চলে যেত। জামা বদলের কারণেই অভিযুক্তদের নাগাল পেতে সময় লেগেছে পুলিশের। তদন্তকারীদের দাবি, কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গত এক বছরে চক্রটি ৩০ থেকে ৪০টি এই ধরনের কেপমারি করেছে।
জেরায় পুলিশ জেনেছে, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক-সহ একাধিক জায়গায় তারা অপরাধ করেছে। বিমানে চেপে যাতায়াত করত, বিলাসবহুল হোটেলে থাকত। গত মার্চে বাগুইআটি থানার অধীন শূরের মাঠ এলাকার এক বাসিন্দা কেপমারির শিকার হন। তিনি অভিযোগ দায়ের করলে তদন্ত শুরু করে বাগুইআটি থানা।
পুলিশ সূত্রের খবর, বিদরে অভিযুক্তদের ধরা যে শক্ত, তা জেনেই পুলিশ অপেক্ষা করে। সূত্রের মাধ্যমে খবর আসে, কেপমারির জন্য অভিযুক্তেরা লাতুরে গিয়েছে। তার পরেই সেখানে হানা দেয় পুলিশ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)