বিপর্যয়: ভেঙে পড়েছে নির্মীয়মাণ সেতু। শনিবার ভোরে শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়ায়। ছবি: স্বরূপ সরকার
বছর দুয়েক আগে কলকাতার পোস্তার সেই ভয়াবহ স্মৃতি যেন ফিরে এল শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়ায়! শনিবার ভোর ৪টে নাগাদ ফাঁসিদেওয়ার কান্তিভিটায় ভেঙে পড়ল নির্মীয়মাণ একটি উড়ালপুলের একাংশ। পোস্তায় সে-দিন প্রাণ গিয়েছিল ২৬ জনের। কান্তিভিটায় কাকভোরের দুর্ঘটনায় কোনও প্রাণহানি হয়নি।
তবে প্রশ্ন উঠেছে ওই সেতুর নির্মাণ সংক্রান্ত মান নিয়ে। এ দিন দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পর নির্মাণ সংস্থার বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন দার্জিলিঙের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত। কী ভাবে উড়ালপুলটি ভেঙে পড়ল তা খতিয়ে দেখছেন নির্মাণ সংস্থার ইঞ্জিনিয়াররাও। ৩১ডি জাতীয় সড়কের উপর ওই নির্মীয়মাণ উড়ালপুলের চারটে অংশ ভেঙে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রশাসনের বক্তব্য, দিনের যে কোনও সময় এই দুর্ঘটনা ঘটলে বড় সংখ্যায় প্রাণহানি হতে পারত। জেলাশাসকও বলেন, ‘‘ভাগ্যক্রমে কেউ আহত হননি। আমরা ইতিমধ্যেই নির্মাণ সংস্থাকে রিপোর্ট দিতে বলেছি। সেটা না আসা পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি।’’ পরে অকুস্থলে যান শিলিগুড়ির এসডিও সিরাজ দানেশ্বর।
ঘোষপুকুর মোড় থেকে প্রায় ছ’কিলোমিটার দূরে ৮০০ মিটার লম্বা এই উড়ালপুলের দু’টি স্তম্ভের মাঝে ওই চারটি অংশ বসানো হয়েছিল ৩ থেকে ৬ অগস্টের মধ্যে। নির্মাণকারীর সংস্থার দাবি, বাইরে থেকে স্তম্ভে জোর ধাক্কায় এমন ঘটে থাকতে পারে। তবে পুরো বিষয়টি তদন্তের পরেই পরিষ্কার হবে। গাড়ির ধাক্কায় সবক’টি বোল্ট উপড়ে ফেলা সম্ভব কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে গত কয়েক মাস থেকে খুব দ্রুততার সঙ্গে কাজ শুরু হয়েছিল প্রকল্পে। উদ্বোধনের তাড়াহুড়োয় কোনও গাফিলতি হয়েছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখার কথা তদন্তে।
এ দিন ভোরে দোকান খোলার জন্য উঠেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা যমুনা সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, ভোরে বুঝি ভুমিকম্প হচ্ছে। তাড়াতাড়ি বাইরে এসে দেখি, ব্রিজ ভেঙে পড়েছে। ওটার তলা দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করি। তাই আতঙ্কে হচ্ছে।’’ খারাপ গুণমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার অভিযোগ তুলে এ দিন দুর্ঘটনার পর পথ অবরোধ করেন কান্তিভিটার বাসিন্দারা। এর জেরে ঘোষপুকুর-সলসলাবাড়ি রোডে দিনভর যানজট হয়। ফাঁসিদেওয়া ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি আইনূল হকের অভিযোগ, ‘‘কয়েক মাস থেকে তাড়াহুড়ো করে কাজ হচ্ছে দেখছি। শুনেছি, ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এটা উদ্বোধন করার কথা। তাই হয়তো কোনও মতে কাজ হচ্ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy