E-Paper

রাজ্যে কি ‘দুয়ারে জঙ্গি’, তীব্র শাসক-বিরোধী তর্ক

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সোমবার তমলুকে রাজ্য প্রশাসন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জঙ্গি-যোগের অভিযোগে ফের সরব হয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, “শুনেছিলাম ‘দুয়ারে সরকার’। এখন দেখলাম, দুয়ারে জঙ্গি!”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:০৮
শুভেন্দু অধিকারী।

শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যে পরপর সন্দেহভাজন ধরা পড়ার ঘটনাকে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গ জঙ্গিদের ‘নিরাপদ আশ্রয়ে’ পরিণত হয়ে উঠছে কি না, সেই প্রশ্নে রাজ্যের শাসক-বিরোধীর বিতর্ক আরও তীব্র হল।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সোমবার তমলুকে রাজ্য প্রশাসন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জঙ্গি-যোগের অভিযোগে ফের সরব হয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, “শুনেছিলাম ‘দুয়ারে সরকার’। এখন দেখলাম, দুয়ারে জঙ্গি! বাংলাদেশের জঙ্গির ভোটার তালিকায় নাম উঠছে!” সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং (নাম না করে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরা বিদেশ-যাত্রা করলে দুবাইয়ে কেন থাকেন বা দুবাই হয়ে কেন যাওয়া-আসা করেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন শুভেন্দু। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও বাগডোগরায় অভিযোগ করেছেন, “আমরা (রাজ্য) এখন জঙ্গি রফতানি করছি। সীমান্তবর্তী এলাকায় জঙ্গিদের সুবিধাজনক পরিবেশ তৈরি করতে তৃণমূল ও মুখ্যমন্ত্রী অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন!” তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার অবশ্য পাল্টা বলেছেন, “বিজেপি দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেই কাঠগড়ায় তুলছে। সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গি ঢুকলে তার দায়িত্ব কেন্দ্রের। কেউ ভুয়ো ভোটার কার্ড পেলে তার দায়িত্বও কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন কমিশনের!”

বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত-এলাকায় বেড়া দেওয়ার জমি দিতে রাজ্যের অসহযোগিতার পুরনো অভিযোগেও শাণ দিয়েছেন শুভেন্দু, সুকান্তেরা। বাংলার দীর্ঘ এলাকায় ‘শত ছিদ্র সীমান্ত’ বলে অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু। সুকান্তেরও দাবি, খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দু’বছর আগে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএসএফের ৭২টি ‘বর্ডার পোস্টে’র জন্য জমি চাইলেও তা দেয়নি রাজ্য। যদিও জমি প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহের বক্তব্য, “কাঁটাতারহীন বেশির ভাগ জায়গায় নদীর দ্বারা সীমানা ভাগ হয়ে রয়েছে। যে সব জায়গায় কাঁটাতার আছে, সেখানে কেন অনুপ্রবেশ, পাচার হচ্ছে?” এই সূত্রেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফের সরব হয়েছে তৃণমূল।

জঙ্গি-যোগ নিয়ে সরব সিপিএম, কংগ্রেসও। রাজ্যসভায় এক নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকে পাঠিয়েছিল তৃণমূল, এমন অভিযোগ তুলে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, “জঙ্গিদের দেশ-জাত-ধর্ম হয় না। কিন্তু জঙ্গিদের নিরাপদ স্বর্গ হয়ে উঠছে বাংলা! শাসক দলের এত প্রশ্রয় কেন? এর আগে খাগড়াগড়ে একই বাড়িতে জঙ্গি ডেরা এবং তৃণমূলের কার্যালয় দেখা গিয়েছিল।’’ রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, “শুধু বাংলা নয়, কেরল, অসম-সহ নানা জায়গাতেই জঙ্গি ধরা পড়ছে। কিন্তু এখানে জাল নথি, ভোটার তালিকায় নাম কী ভাবে হয়ে যাচ্ছে, আমরা সত্যিই জানি না! পুলিশ-প্রশাসন কী করছে?” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের মতে, ‘‘টাকার বিনিময়ে এখানে সব খেলা হয়ে যাচ্ছে! কেউ কিছু খতিয়ে দেখছে না।’’

বিরোধীদের এক হাত নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ আবার পাল্টা বলেছেন, “সিপিএম জমানায় জঙ্গি ধরা পড়া, আমেরিকার দূতাবাসের সামনে হামলা, বৌবাজারে বিস্ফোরণের সময়ে এঁরা কোথায় ছিলেন? বাংলাদেশ থেকে লোক ঢুকে থাকলে, সেটা বিএসএফ, শাহের ব্যর্থতা। সুকান্তবাবুরা শাহকে গিয়ে বলুন, তিনি সীমান্ত পাহারা দিতে ব্যর্থ!”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Suvendu Adhikari TMC BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy