Advertisement
E-Paper

৭ লক্ষের টার্মিনালে ২২ লক্ষ, নাজেহাল যাত্রীরা

জমির একটি অংশের জট কাটলেও চা বাগান নিয়ে কী হবে তা এখনও আলোচনাধীন বলে জেলা প্রশাসনের এক অফিসার জানানিয়েছেন। তিনি জানান, গত ডিসেম্বরে শেষবার এএআই-র সঙ্গে রাজ্য সরকারের কলকাতায় বৈঠক হয়েছে।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১৮

দশ দিন আগের ঘটনা। বিমানবন্দরে ডিউটিতে গিয়ে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন বাগডোগরা এয়ারপোর্ট ফাঁড়ির এক সাব ইন্সপেক্টর। যে দিকেই তাকিয়েছেন শুধু কালো মাথা এবং গাড়ি। পার্কিং লটে যানজট। চেক-ইন কাউন্টারের সামনে মহিলা পুরুষেরা কাঁধে পিঠে ব্যাগ নিয়ে ধাক্কাধাক্কি করেছেন। খানিক ক্ষণের জন্য কার্যত হতবাক হয়ে যান। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও বিমানবন্দরে ছিলাম না লোকাল ট্রেন ধরতে স্টেশন লাইন দিয়েছিলাম বুঝতে পারি না। সারা দিন ওই দশা ছিল বিমানবন্দরের। সন্ধ্যা অবধি নজরদারি করতে করতে ঘাম ছুটে গিয়েছিল।’’

ওই দিন ১৮ এপ্রিল, বুধবার সন্ধ্যায় এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া-র (এএআই) তরফে ঘোষণা করা হয়, কয়েক দশকের রেকর্ড ভেঙে বিমানবন্দরে যাত্রী সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়েছে। ২৫ জোড়া বিমান মিলিয়ে সে দিন যাত্রী সংখ্যা ছিল ৪০১১ জন। বিমানবন্দরের অফিসারেরা জানান, দুপুরের দিকে মাঝে মধ্যেই এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। যাত্রীদের ভিড়, আওয়াজে গোটা টার্মিনাল ভবন গমগম করছে। এমন পরিস্থিতি হলেই শৌচালয়ের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, ট্রলি, লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে নানা অভিযোগও উঠছে। দ্রুত নতুন টার্মিনাল ভবনের ব্যবস্থা না হলে ধাক্কাধাক্কিতে যে কোনওদিন দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। এ বছর যাত্রী সংখ্যা ২২ লক্ষ ছাড়িয়েছে। অথচ বর্তমান টার্মিনালটি ৭ লক্ষ যাত্রীর কথা মাথায় রেখে করা হয়।

যাত্রীদের অনেকেও বলেন, ‘‘কোনও কোনওদিন বসার জায়গা তো দূরের কথা, ঠিক মতো দাঁড়িয়ে থাকা যায় না। শৌচালয়, রেস্তরাঁয় লাইন চলে। সিকিউরিটি চেকের সময় তো ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়।’’

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বছর খানেক আগেই পরিস্থিতি কথা আঁচ করে নতুন টার্মিনাল, আন্তর্জাতিক টার্মিনাল, পার্কিং-সহ আধুনিক বাগডোগরা বিমানবন্দরের মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করেছিল এএআই। রাজ্য সরকারের কাছে নতুন পরিকল্পনায় ১০০ একর জমি চায় এএআই। সমীক্ষাও শুরু হয়। প্রয়োজনীয় জমির মধ্যে সামান্য ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ছাড়া বাকিটা দুটি চা বাগান এবং বায়ুসেনার জমি। প্রাথমিকভাবে বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, জমি দিতে সমস্যা নেই। শুধুমাত্র স্থায়ী ভবন, দফতরগুলিকে অন্য বায়ুসেনার জমিতেই এএআইকেই তৈরি করতে দিতে হবে।

জমির একটি অংশের জট কাটলেও চা বাগান নিয়ে কী হবে তা এখনও আলোচনাধীন বলে জেলা প্রশাসনের এক অফিসার জানানিয়েছেন। তিনি জানান, গত ডিসেম্বরে শেষবার এএআই-র সঙ্গে রাজ্য সরকারের কলকাতায় বৈঠক হয়েছে। তাতে জমি কমিয়ে ৪৫ একর বলে ঠিক হয়েছে। কিন্তু জমিগুলি কিভাবে নেওয়া হবে তা ঠিক হয়নি। বিমানবন্দর অধিকর্তা রাকেশ সহায় বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। আমাদের এখনও কিছু জানান হয়নি।’’

এএআই সূত্রের খবর, চা বাগানের জমি লিজ দেওয়া হলেও ফেরত নিতে ক্ষতিপূরণ বা দামের কিছু জটিলতা রয়েছে। মালিকপক্ষ ২০১৩ সালের কেন্দ্রীয় জমি নীতি এবং বাজার দরের পক্ষপাতী। বাগডোগরা চা বাগানের মালিক অজিত অগ্রবাল বলেন, ‘‘বিমানবন্দর বড় না করলে অবস্থা পাল্টাবে না ঠিকই। তবে জমি নিয়ে সরকার এখনও কিছু জানায়নি।’’

Bagdogra Flight
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy